সিলেট: স্কুল জুড়ে শোকের স্তব্ধতা। সামনেই কালো কাপড় টানিয়ে শোকের বার্তা জানানো হচ্ছে নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও এ স্কুলের প্রাক্তণ ছাত্র হুমায়ূন আহমেদের প্রতি।
এই সেই কিশোরী মোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে শৈশবের পাঠ চুকিয়ে গড়ে উঠেছেন আজকের হুমায়ূন। এখনও সেখানে পড়ছে শত শত শিক্ষার্থী।
সোমবারও প্রতিদিনের মতো তারা এসেছে এই বিদ্যাপীঠে। তবে অন্য দিনের মতো নয়। শোক চাদরের নিচ দিয়ে তারা একে একে আসন নিয়েছে নিজ নিজ ক্লাসরুমে। তাদের অনেকেই হুমায়ূনকে সরাসরি দেখেনি। তবে হুমায়ূনের লেখা পড়েনি বা তার নাটক-ছবি দেখেনি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুরূহ হবে।
“হুমায়ূন আহমেদকে চেনো?” এমন প্রশ্নে উত্তরও যেন দিতে পারছিলো না স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহিম। হুমায়ূনের মৃত্যৃর দিন থেকে শোকে ছেয়ে গেছে এ বিদ্যালয়ে। সামনের সড়ক জুড়ে যানবাহনের ব্যস্ততায় ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছে শিক্ষার্থীরা।
তাদের বিদ্যালয়ের এই কৃতি ছাত্রকে আর দেখা যাবে? তিনি শুধু থেকে রইলেন তার উপন্যাস গল্পে নানা রঙে নানা ঢঙে।
বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী হাসান আরেফিন জাকি জানায়, তাদের বাসার সবাই টেলিভিশনে হুমাযূনের মৃত্যু দেখে কেঁদেছেন।
১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। ছোটবেলায় দল বেঁধে এ বিদ্যালয়ে দুরন্তপনায় মাতিয়ে রাখা হুমায়ূন পরে পরিণত হয়েছিলেন দেশের জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে।
সিলেটে যতো বারই এসেছেন একবার হলেও ঘুরে দেখে গেছেন তার শৈশবের স্মৃতিধন্য এই বিদ্যাপীঠ। তার ছোটভাই ড. জাফর ইকবালও এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র। প্রতিষ্ঠানটির পাশেই মিরাবাজারে তাদের শৈশবের সেই বাড়িটি এখনও অবিকল আছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ম্যানহাটন বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন হুমায়ূন আহমেদ। এ সময় তার পাশে ছিলেন স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, ছোট ভাই মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এবং বন্ধু মাজহারুল ইসলামসহ আরও স্বজন। মৃত্যুকালে এ নাট্যনির্মাতার বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১২
সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর