নেত্রকোনা: নেত্রকোনা সদর উপজেলার লক্ষীগঞ্জ ইউনয়নের গদাইকান্দি গ্রামের বেকার যুবক সাইফুল (৩০)। শসা চাষের তেমন কোনো অভিজ্ঞতাই নেই তার।
শুধু ইচ্ছা শক্তির জোরে তিনি একদিন শসা চাষ শুরু করেন।
জ্যৈষ্ঠের শেষে তিনি তার ৩৫ শতাংশ জমিতে শসার বীজ বপন করেন। এর ৩/৪ দিন পরই গজিয়ে উঠে সবুজ সতেজ চারা। এর কদিন পরই সবুজে সবুজে ছেয়ে যায় ক্ষেত। বাড়ন্ত চারার বৃদ্ধিতে তিনি তৈরি করে দিলেন মাচা।
মাচা পেয়ে আষাঢ়ের শেষেই শসা গাছ ভরে গেল ফুলে ফুলে। ফুলে ফল আসতেই আগ্রহ বেড়ে যায় প্রতিবেশীদের। শ্রাবণের শুরুতেই শশা বিক্রি শুরু হয়।
শসা চাষী সাইফুল বাংলানিউজকে জানান, বাড়ির পাশ ঘেঁষেই চলে গেছে মদন-নেত্রকোনা সড়কের পাকা রাস্তা। এ পাকা সড়কের পাশেই তার শসা ক্ষেত। সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় সবার দৃষ্টি পড়ে শসা ক্ষেতে।
তিনি বলেন, বীজ, সার, কীটনাশক আর পরিচর্যার মজুরি মিলিয়ে খরচ পড়েছে ১০ হাজার টাকা। বীজ লাগানোর দেড় মাসের মধ্যেই আলাভী জাতের শসা গাছে ফলন ধরে।
আষাঢ়ের শুরু থেকে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত শসা বিক্রি করে প্রায় লাখ টাকা আয় হয় সাইফুলের। ভাদ্র মাসেও আরও কিছু শসা বিক্রি হবে বলে জানান তিনি।
সাইফুলের বাবা তোফাজ্জল হোসেন বাংলানিউজের কাছে অভিযোগ করে বলেন, প্রথমবারের অভিজ্ঞতায় যে ফলন হয়েছে তা বাম্পার ফলনের কাছাকাছি। ছেলের অভিজ্ঞতার সঙ্গে যদি দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার অভিজ্ঞতা যোগ হতো ফলন আরও বেশি হতে পারতো। বীজ লাগানো থেকে বিক্রি পর্যন্ত কোনো কৃষি কর্মকর্তা শসা ক্ষেত পরিদর্শনে আসেননি।
ফলে বালাই দমনে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে তাদের। তবে রমজানকে ঘিরে দাম ভালো পাওয়ায় তাদের সব কষ্ট সার্থক হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে, লক্ষীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল কাদের সুজা বাংলানিউজকে বলেন, শসা চাষে সাইফুলের অর্থনৈতিক অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। একই সঙ্গে তার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান অন্যান্য শশ্য ফলনেও কাজে লাগবে।
তিনি আরও বলেন, তার এ সফলতায় এলাকার অনেক চাষি শসা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১২
সম্পাদনা: রাফিয়া আরজু শিউলী ও শিমুল সুলতানা, নিউজরুম এডিটর