তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বে ব্লগ মানুষের মনের কথা বলার প্রধান জায়গা হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ওপেন মিডিয়া হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের কমিউনিটি ব্লগ।
গল্পটা ২০০২ সালের। ছবিভিত্তিক একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন ম্যাট। এ জন্য একটি ব্লগসাইট তৈরি করা প্রয়োজন। এটি করতে তিনি ব্যবহার করে বি-টু ক্যাফেলগ ব্লগিং সফটওয়্যার। সমস্যা হলো সফটওয়্যারটিতে প্রয়োজনীয় সব ফিচার খুঁজে পেলেন না। তখন ভাবলেন এটি নিয়ে কাজ করা জরুরী। সেজন্য কয়েক মাস এ সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করতে থাকলেন। তখনই নিজস্ব কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরির কথা তার মাথায় আসে। বি-টু কোড থেকেই তিনি তৈরি করলেন নতুন ব্লগিং সিএমএস ‘ওয়ার্ডপ্রেস’। কাজ করার সময় তিনি সঙ্গে পেলেন বি-টু এর মূল ডেভেলপার মাইকেল ভাদরিঘিকে।
নিজস্ব হোস্টিংয়ে ব্লগ তৈরির জন্য সিএমএস ডাউনলোড করার সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিনা মূল্যে যাতে সবাই ব্লগসাইট তৈরির সুযোগ পায়, এজন্য তৈরি করলেন ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম সাইটটি। প্রথম দিকে কেবল ইনভাইটেশনের মাধ্যমে ব্লগ তৈরি করা গেলেও ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম সাইটে ব্লগ তৈরি ২০০৫ সালের নভেম্বরে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এ প্লাটফর্ম।
ব্যবসায় সাফল্য পেতে হলে কি প্রয়োজন? এমন প্রশ্নের উত্তরে একবার ম্যাট বলেছিলেন, মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা। নিজের পণ্যটা কেমন সেটা নিজের বিবেচনায় না এসে যারা এটি ব্যবহার করবে তাদের বিবেচনাটা মাথায় নেওয়া।
ওয়ার্ডপ্রেসের পাশাপাশি অটোমেটিক, বাড্ডিপ্রেস, বিবিপ্রেস এবং অ্যাকিসমাতসহ বেশ কিছু সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোক্তাও ম্যাট। ফটোগ্রাফিতেও ম্যাট মুলানভেগের বেশ আগ্রহ। নিজস্ব ব্লগসাইট http://ma.tt-এ নিয়মিত তিনি ওয়ার্ডপ্রেস, ওয়েব, জাজ, ফটোগ্রাফি এবং তার জীবনযাপনের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে ব্লগিং করেন। ম্যাট স্নাতক সম্পন্ন করেছেন ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টন থেকে। তিনি হাই স্কুল ফর দ্য পারফর্মিং অ্যান্ড ভিজুয়াল আর্টস থেকে শিখেছেন জাজ বাজানো।
ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে যে ওয়ার্ডপ্রেসের যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেটি এখন আর ব্যক্তিগত নেই। এখন এটি কোটি ডেভেলপারের ‘ওয়ার্ডপ্রেস’। ইন্টারনেটের সর্বমোট ওয়েবসাইটের ১২ শতাংশই এখন ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএসে তৈরি করা। এটিই হচ্ছে আমার কাজের বড় সফলতা।
তরুণদের নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন ম্যাট। তিনি তরুণদের সম্পর্কে বলেন, তোমাদের যা করতে ইচ্ছে হয় করে ফেল। কারণ পৃথিবীতে মানুষ খুব অল্প দিনই বেঁচে থাকে। সময় নেই। যা করার এই অল্প সময়ের মধ্যেই করতে হবে। কিন্তু একটি ভালো কাজ তোমাকে শত বছর বাঁচিয়ে রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, ২৫ আগস্ট, ২০১২
সম্পাদনা: শেরিফ সায়ার, বিভাগীয় সম্পাদক