বাংলাদেশে পরিবেশ বিষয়ক কর্মশালায় আসবো এটা ভেবেই আনন্দে ভেসে যাচ্ছিলাম। এখানে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের তরুণরা আসবে।
জলবায়ু বিষয়ক কর্মশালার শেষদিনে পাকিস্তান থেকে আসা তরুণ অংশগ্রহণকারী সাবিনা এভাবেই তার মনের কথা বলছিলেন।
জলবায়ু পরিবর্তনে সচেতনতা সৃষ্টিতে বিশ্বব্যাপি সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে ব্রিটিশ কাউন্সিলে শুরু হওয়া কর্মশালার শুক্রবার ছিল শেষ দিন। প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ৭টি দেশের ২৫ তরুণকে নিয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করেছে জলবায়ু আন্দোলনের ওয়েবভিত্তিক সংগঠন 350.org এবং বাংলাদেশ ইয়ুথ মুভমেন্ট ফর ক্লাইমেট (বিওয়াইএমসি)।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া ভারতীয় তরুণ কুমার মনীষ বাংলানিউজকে জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য আমাদেরই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি এ ধরনের কর্মশালা আরও বেশি বেশি হোক সে বিষয়ে জনমত গড়ে তুলতে চাই। এবারই প্রথম আমি বাংলাদেশে এসেছি। বাংলাদেশের মানুষের আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
চার দিনব্যাপি চলতে থাকা এ কর্মশালার মেনটর হিসেবে কাজ করেছেন চৈতন্য। তিনি বলেন, “চারদিনের এ কর্মশালার মাধ্যমে সবকিছু থমকে যাবে না। এরা সবাই ব্লগিং করেন। ফেসবুক, টুইটার ব্যবহার করেন। সোশ্যাল কমিউনিকেশনের মাধ্যমে সবার মধ্যে নেটওয়ার্ক তৈরি হবে। এভাবেই দক্ষিণ এশিয়ার তরুণদের মধ্যে শক্ত নেটওয়ার্ক তৈরি হয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে তারা ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী। ”
সমাপনী দিনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাকশান এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, অক্সফামের অ্যাক্টিং কান্ট্রি ডিরেক্টর মনিসা বিশ্বাস, ব্রিটিশ কাউন্সিলের পার্টনারশিপ ও প্রোগ্রামের পরিচালক রবিন ডেভিস এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েস্টার্ন এশিয়ার ডিরেক্টর জেনারেল নজরুল ইসলাম।
দক্ষিণ এশিয়ার ২৫ তরুণের উদ্দেশ্যে সমাপনী বক্তা অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, “তোমরা দেশে ফিরে গিয়ে নিজেদের নেটওয়ার্ক তৈরি করবে। তোমরা সবাইকে বলবে, আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নই, আমরা বর্তমান প্রজন্ম। এই সময় আমাদের। আমাদের হাল ধরার সময় এটাই। ”
অন্যদিকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েস্ট অ্যান্ড সেন্ট্রাশ এশিয়ার ডিরেক্টর জেনারেল নজরুল ইসলাম বলেন, “প্রযুক্তিগতভাবে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে আমাদের কাজ শুরু হয়েছে। এটিকে আরও বেগবান করতে হবে। এজন্য 350.org এবং বাংলাদেশ ইয়ুথ মুভমেন্ট ফর ক্লাইমেটের এই উদ্যোগ আমাদের সহায়তা করবে। ”
এ কর্মশালার অন্যতম উদ্যোক্তা রেজওয়ান নবীন বাংলানিউজকে বলেন, “আগামী বছর এ ধরনের আয়োজন দেশব্যাপি করার ইচ্ছে আছে। এজন্য সবার সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। আমরা মানুষকে বোঝাতে চাই, জলবায়ু পরিবর্তনে সোচ্চার না হলে নিজেদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। সে জন্য আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে। আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ”
উল্লেখ্য, ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলনায়তনে চার দিনব্যাপি এ কর্মশালার শুরু হয়েছিল ২৫ সেপ্টেম্বর। কর্মশালায় সহযোগী অ্যাকশন এইড, অক্সফাম এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১২
সম্পাদনা: আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর