ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

শ্রীপুরের বিস্ময় শিশু রিপন!

রূপক আইচ, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:১৫, অক্টোবর ১, ২০১২
শ্রীপুরের বিস্ময় শিশু রিপন!

মাগুরা: সুপারি, মেহগনি, আমগাছ অথবা অন্য যেকোনো গাছই হোক নিমিষেই তা বেয়ে ওপরে উঠে যেতে পারে শিশুটি। আবার নেমেও আসে একইভাবে।

গাছ বেয়ে ওঠা-নামার এ দৃশ্য দেখে অবাক হতে হয় সবাইকে।

একই বয়সী অন্য শিশুদের সঙ্গে দৌঁড় দিলে সবার আগে থাকে সে।

শিশু রিপন। বয়স মাত্র দুই বছর। এত ছোট বয়সেই তাক লাগানো এসব বিস্ময়কর কাজ করে দেখায় সে। মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার মদনপুর গ্রামের গরিব কৃষক এনামুল খান ও মিতা বেগমের ৩ ছেলের মধ্যে রিপন সবার ছোট।

যেকোনো গাছ মোটামুটি দুই হাতে আঁকড়ে ধরতে পারলেই তা বেয়ে উঠে যেতে সময় লাগে না রিপনের। ব্যতিক্রমী এ গুণের কারণে রিপন এখন এ এলাকার রীতিমতো তারকা বনে গেছে।

রিপনের মা মিতা খাতুন বাংলানিউজকে জানান, মাত্র ১ বছর বয়সে রিপন নিজে নিজেই গাছে চড়া শিখে গেছে। যখনই সুযোগ পায় বাড়ির পাশের যে কোনো গাছে চড়ে বসে থাকে । আগস্টে ২ বছর পূর্ণ হয়েছে তার। এখনও ঠিকমতো কথা বলতে পারে না।

কেবলমাত্র বুকের দুধের পাশাপাশি শক্ত খাবার শুরু হয়েছে। দৌঁড়ঝাঁপ আর খেলাধুলা করেই সময় কাটে রিপনের। ওর সঙ্গে দৌঁড়ে এলাকার অন্য কোনো ছেলে বা মেয়ে পারে না।

রিপনের দাদী বাংলানিউজকে জানান, রিপনের বাবা গরিব, তাই তেমন ভালো খাওয়া দাওয়া পায় না সে। তার ভেতরে এমন কিছু ক্ষমতা আছে যা অন্য আর ১০টি শিশুর নেই। তাই তাকে যদি সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা দেওয়া হয়। তাহলে হয়তো সে একদিন বড় কিছু হতে পারবে।

এলাকার বৃদ্ধ রমজান খান বাংলানিউজকে বলেন, “এত ছোট বাচ্চার গাছে উঠতে পারা বা এত দ্রুত দৌঁড়াতে আমি আগে কখনও দেখিনি। এ ব্যতিক্রমী গুণের কারণে বিভিন্ন জায়গা থেকে তাকে দেখতে অনেকেই আসেন। “

এলাকার যুবক জুয়েল রানা বাংলানিউজকে জানান, রিপনের এই ক্ষমতাকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহজেই ক্রীড়া নৈপূণ্যে পরিণত করা সম্ভব। যদি তা করা যায় তবে, সে হয়তো খুব ভালো একজন খেলোয়াড় হতে পারবে। “  

শিক্ষক শামিমুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, রিপনের মধ্যে যে ব্যতিক্রমী গুণ আছে তাকে যদি সঠিক পথে পরিচালিত করা যায়, তাহলে সে হয়তো ভবিষ্যতে অনেক বড় অ্যাথলেট বা এক্রোবেটর হতে  পারবে। কিন্তু গরির এ পরিবার এ গুণকে পরিচর্যা করতে পারবে না। তাই সরকার বা কোনো সংগঠন যদি তার দায়িত্ব নিয়ে তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করে। তবে, সে হয়তো একদিন দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারবে।

এ প্রসঙ্গে মাগুরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হাজী মকবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, “এ শিশুটি সম্পর্কে আমরা এখনও তেমন কিছুই জানি না। তবে তার মধ্যে যে ব্যতিক্রমী গুণের কথা শুনলাম তাতে মনে হচ্ছে আর একটু বয়স হলে তাকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বা বিকেএসপির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিতে পারলে তার প্রতিভার বিকাশ করা সম্ভব। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে এ ধরনের শিশুরা জেলার ও দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারবে। ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে এ ধরনের শিশুদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হয়। “

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১২
সম্পাদনা: প্রভাষ চৌধুরী, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।