ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২০ মে ২০২৫, ২২ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

বিয়ে দিলেই আত্মহত্যা করবে শিশু রেহেনা!

সাইফুল ইসলাম, রূপগঞ্জ প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:২২, ডিসেম্বর ১০, ২০১২
বিয়ে দিলেই আত্মহত্যা করবে শিশু রেহেনা!

রূপগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ): ১৪ ডিসেম্বর, শুক্রবার। বাল্যবিয়ের বলি হতে যাচ্ছে রেহেনা।

ইতোমধ্যে বিয়ের সব আয়োজন শেষ করেছে বর ও কনে পক্ষ।

এদিকে, বাল্যবিয়ের ফাঁদে পা দেবে না— বাবাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে রেহেনা। এরপরও যদি তাকে বিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সে আত্মহত্যা করবে বলেও জানিয়েছে। এ তথ্য বাংলানিউজকে জানিয়েছে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে রেহেনার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার বাবা এ প্রতিবেদককে অনুমতি দেয়নি।
 
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের রঘুরামপুর ফুলবাড়িয়া এলাকার টুকু মুন্সির মেয়ে রেহেনা আক্তার স্থানীয় জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।

এলাকাবাসী বাংলানিউজকে জানায়, রেহেনার বাবা টুকু মুন্সি বরপক্ষের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা পেয়ে মেয়ে রেহেনা আক্তারের বিয়ে ঠিক করেছেন। বর পার্শ্ববর্তী ব্রাক্ষ্মণখালী (বাগবাড়ী) এলাকার হিরণ মিয়ার ছেলে এক সন্তানের জনক সুমন মিয়া (৩৬)।

বাবা টুকু মুন্সি রগচটা-বেপরোয়া প্রকৃতির হওয়ায় তার ভয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও পাচ্ছেন না। তারপরও এলাকাবাসী রেহেনা আক্তারকে বিয়ে না দিতে অনুরোধ করেছেন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, টুকু মুন্সি রেহেনা আক্তারকে ঘরে বন্দি করে রেখেছেন।  

রেহেনা আক্তারের বান্ধবী আছমা আক্তার বাংলানিউজকে বলে, “আমরা একসঙ্গে স্কুলে যেতাম। রেহেনা আক্তার ভালো ছাত্রী। শুনেছি তাকে নাকি তার বাবা বিয়ে দিচ্ছে। আপনারা বিয়েটি বন্ধ করেন। ”

টুকু মুন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে রেগে যান। তিনি  বলেন, “আমরা মেয়েকে বিয়ে দেবো, কার কী!”

এ বিষয়ে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন যেহেতু জেনেছি, বাল্যবিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা নিচ্ছি। ”

এ ব্যাপারে জানতে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফ আহমেদ টুটুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “এ ধরনের ঘটনা জানা নেই। এছাড়া ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়–য়া স্কুল শিক্ষার্থীকে বিয়ে দেওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ”

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বাংলানিউজকে বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা নিতে। ”       

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১২
সম্পাদনা: প্রভাষ চৌধুরী, নিউজরুম এডিটর/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।