ঢাকা: ষাটোর্ধ্ব দিনমজুর অলি মিয়া। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলবে।
ছয় সন্তানের জনক অলি মিয়ার ছেলেরা বৃদ্ধ মাতা-পিতার খোঁজখবর রাখেন সামান্যই। শেষ বয়সে জীবন বাঁচানোর তাগিদে তাই রোজ কোদাল-খুন্তি নিয়ে শ্রম বিক্রির হাটে ছুটেন সামান্য রোজগারের আশায়।
বৃহস্পতিবার আঠার দলের দেশব্যাপী হরতালের দিনেও প্রতিদিনকার মতোই শীতের সকালে এসেছিলেন আজিমপুর মোড়ের ‘কামলার হাটে’। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হরতাল সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়ে আজিমপুর মোড়ে আসে। এসময় পুলিশের সঙ্গে পিকেটারদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পিকেটাররা এসময় তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
পিকেটারদের ছোঁড়া একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয় হতভাগ্য দিনমজুর অলির পায়ে। তার দুটি পা জখম হয়।
এসময় অলি মিয়ার সঙ্গে কাজ করা শ্রমিকরা পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে হাসপাতালে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়। তারা অলি মিয়াকে বলে, হাসপাতালে গেলে তোমাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যেতে পারে। এই ভয়ে অলি মিয়া বহুকষ্টে দুই পথচারীর সহযোগিতায় রক্তাক্ত শরীর নিয়েই বাড়িতে পৌঁছায়।
পরে অলি মিয়ার ছোট ছেলে জোর করে সকাল ১০টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অলি মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘গতকাইল (বুধবার) ঠিক মতো কাম করতারি নাই। আইজ ঘরে কোনো খাওন নাই। পেটে তো আর হরতাল মানে না, তাই আইছিলাম খাওনের যোগাড় করবার লাইগ্যা। ’’
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১২
এআই/আরআর