নীলফামারী: কয়েকদিন আগেও সবাই নুসরাত জাহান লাবনীকে (১৪) মেয়ে হিসেবেই জানতো। কিন্তু প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালে এখন তাকে চিনতে হচ্ছে ছেলে হিসেবে।
আকস্মিক শারীরিক পরিবর্তনে রোববার সে মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছে বলে তার পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন।
এজন্য এরই মধ্যে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আলোকদ্দীপাড়ার লাবনীর বাবা স্কুল শিক্ষক আব্দুল হালিম তার নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ।
এদিকে, এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় পুরো জেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। লাবনী তথা নাসিরকে দেখতে তাদের বাড়িতে ভিড় করছেন শত শত উৎসুক জনতা।
ছয় বোন এক ভাইয়ের সংসারে লাবনী সবার ছোট। সে স্থানীয় ফাজিলপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা দিয়েছে।
জানা গেছে, রোববার আকস্মিক শারীরিক পরিবর্তন ঘটলে লাবনী বিষয়টি তার দাদিকে জানায়। পরে এক কান দুই কান করে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে তাকে দেখতে বাড়িতে জনতার ভিড় শুরু হয়।
লাবনীর মা রওশন আরা বেগম জানান, ছোট বেলা থেকেই লাবনীর চলাফেরা ছিল ছেলেদের মতো। পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় তার আচার-আচরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। সেসময় থেকে লাবনী মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের সঙ্গেই বেশি মেলামেশা করতো। বিষয়টি লক্ষ করে একপর্যায়ে চিকিৎসকের কাছে যান তারা।
চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার শরীরে পুরুষ হরমোনের পরিমাণ বেশি বলে জানিয়েছিলেন। এরপর তারা আর কোনো পদক্ষেপ নেননি।
শেষ পর্যন্ত রোববার সে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুরের চিকিৎসক শেখ নজরুল ইসলাম জানান, মানুষের শরীরে হরমোন জনিত পরিবর্তনের কারণে এমনটি হতে পারে। মূলত মেয়েটির জন্মের পর থেকে বয়ঃসন্ধিক্ষণ পর্যন্ত শরীরে নারী হরমোন বেশি ছিল। কিন্তু বয়সন্ধীকালে শরীরে পুরুষ হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তার শারীরিক পরিবর্তন ঘটেছে।
যোগাযোগ করা হলে নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. শওকত আলী বলেন, ‘এ রকম খবর শুনেছি। তবে সত্যিই সে মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছে কিনা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, জেলায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখানে করানো সম্ভব নয়। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাইনি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ থাকায় সেখানে পরীক্ষা করা যেতে পারে। তবে সাধারণত হরমোনের কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১২
সম্পাদনা: শিমুল সুলতানা, নিউজরুম এডিটর eic@banglanews24.com