ঢাকা: চলন্ত বাসে ডেন্টাল কলেজ ছাত্রী গণধর্ষিত হওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ বিক্ষোভে রাজধানী নয়াদিল্লিসহ সারা ভারত এখন উত্তাল। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনোমতেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না ধর্ষকদের চরম শাস্তির দাবিতে ফুঁসে ওঠা আপামর জনতাকে।
ওই ভাষণে তিনি বলেন, আমি নিজে ৩ কন্যার পিতা। তাই এ ঘটনার মর্ম অনুধাবন করতে পারি। তাই জনগণ যে ক্রোধ প্রদর্শন করছে, আমি মনে করি তা জায়েজ (বৈধ)। কিন্তু এর প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সহিংসতা না করার অনুরোধ করছি।
ভাষণে জনগণকে আশ্বস্ত করে তিনি আরো জানান, নারীদের সুরক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ ছাড়াও গত ১৬ ডিসেম্বরের ওই ঘটনায় জড়ির অপরাধীদের শাস্তি সুনিশ্চিত করা হবে।
কিন্তু দায়িত্বপূর্ণ আর সমযোপযোগী এই ভাষণ শেষে মনমোহনের মুখ নিঃসৃত দু’টি শব্দকে কেন্দ্র করে সরগরম হযে উঠেছে ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, উল্লেখিত ভাষণ শেষে পাশে দাঁড়ানো টিভি ক্রুদের মনমোহন প্রশ্ন করেন, “ঠিক হ্যায়?” অর্থাৎ তিনি জানতে চান, তার দেওয়া ভাষণ ঠিকমত প্রচার হয়েছে তো? কিন্তু তার “ঠিক হ্যায়” কথাটি টিভি ক্রুরা ছাড়াও সেখানে উপস্থিত অনেকেরই কানে যায়। ব্যস, এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই মন্তব্যকে নিয়ে দেশ-বিদেশে থাকা ভারতীয়দের সমালোচনামুখর, বুদ্ধিদীপ্ত আর ব্যাঙ্গাত্নক মন্তব্যে সয়লাব হয়ে যেতে থাকে টুইটারসহ সামাজিক ওয়েবসাইটগুলো।
টাইম্স অব ইন্ডিয়া ওই মন্তব্যগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে।
এর মধ্যে একজনের মন্তব্য হচ্ছে এরকম: আমাদের প্রধানমন্ত্রী নয়া আমির খান হয়েছেন আর বলছেন, অল ইজ ওয়েল (থ্রি ইডিয়ট্স চলচ্চিত্রের বিখ্যাত ডায়লগ) অর্থাৎ সব ঠিক আছে!
আরেকজন আরো তীক্ষ্ণ খোঁচা দিয়ে বলেন, ভাগবত গীতায় আছে— “যা ঘটে গেছে তা ঠিক আছে, যা হচ্ছে তাও ঠিক আছে আর ভবিষ্যতে যা হবে তাও ঠিকই হবে” জনাব। ঠিক আছে, রাম নাম জপুন তাহলে!

একজন মন্ত্রব্য করেছেন, ঠিক হ্যায়, কিন্তু সমগ্র দেশকে ধর্ষণ করাটা ঠিক হচ্ছে না।
“আপনি যখন প্রধানমন্ত্রীর কন্যা, তখন আপনি নিরাপদ এবং সব ঠিক আছে... অন্যথায় আপনার কোনো দামই নেই এবং সবকিছু মেনে নিতে হবে!! শুধু এটাই— ঠিক না...!
প্রসঙ্গত, গণধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বিক্ষোভ দমনে পুলিশের আক্রমণাত্মক ভূমিকা বিশেষ করে নারীদের ওপর লাঠিচার্জ-মারপিটের ঘটনা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শীর্ষ ব্যক্তিরা দিল্লি পুলিশের স্বৈরতান্ত্রিক ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছেন। সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, বিক্ষোভ দমনে ব্যর্থ হওয়ায় দিল্লি পুলিশ কমিশনার নীরাজ কুমারকে অপসারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন পূর্ব দিল্লি থেকে নির্বাচিত এমপি সন্দ্বীপ দীক্ষিত। সোমবার একটি ইংরেজি নিউজ চ্যানেল ওই কংগ্রেস দলীয় এমপির বক্তব্য প্রচার করে। এর আগে খোদ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শেইলা দীক্ষিতও জনগণের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনে ব্যর্থতার জন্য দিল্লি পুলিশকে তিরস্কার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১২
একে