ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

হবু রাজার আইন!

মিনিস্কার্ট পরা যাবে না, তবে...

সত্যি বিচিত্র ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:০৭, ডিসেম্বর ২৭, ২০১২
মিনিস্কার্ট পরা যাবে না, তবে...

সময়টা এখন নারী জাগরণের। বিশ্বের উন্নত-অনুন্নত প্রায় সব দেশেই নারীরা দিন দিন অধিকার সচেতন হয়ে উঠছেন— খুব দ্রুত না হলেও অধিকার প্রসঙ্গে পুরুষদের সঙ্গে তাদের ফারাকটা দ্রুত কমে আসছে।

তবে আফ্রিকার রাজতান্ত্রিক দেশ সোয়াজিল্যান্ডে যে নয়া আইনটির প্রয়োগ চলছে তা মানবাধিকারকর্মীদের দৃষ্টিতে নারীদের জন্য অবমাননাকর।
 
ঔপনিবেশিক ওই আইনে সোয়াজিল্যান্ডের নারীরা মিনিস্কার্ট এবং যৌন আবেদন সৃষ্টিকারী (সেক্স্যুয়াল ক্লোদিং) পোশাক পরতে পারবে না। আইনটি সম্পর্কে দেশটির পুলিশ কর্মকর্তাদের মন্তব্য হচ্ছে, এ ধরনের পোশাক পুরুষদেরকে ধর্ষণে উৎসাহিত করে। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, আফ্রিকার ক্ষুদ্র ওই রাষ্ট্রটির নারী টিনএজারদের দুই তৃতীয়াংশই ধর্ষণসহ নানা ধরনের যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে।

আফ্রিকার সর্বশেষ পূর্ণ রাজতন্ত্রের এই দেশটিতে এখন ১৮৮৯ সালের ‌ঔপনিবেশিক যুগের বাতিল হয়ে যাওয়া আইনের আদলে জারি করা মিনিস্কার্ট বিরোধী ওই আইনের মূল তত্ত্বটি হচ্ছে— নারীরা শরীর প্রদর্শিত হয় এমন পোশাক পরতে পারবে না। ওই আইন মোতাবেক নারীদেরকে মাটিতে কোনো কিছু পড়ে গেলে তা ঝুঁকে তোলার ক্ষেত্রেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

রাজার চালু করা ওই আইনের সমর্থনে বলতে গিয়ে সোয়াজিল্যান্ড পুলিশের নারী মুখপাত্র ওয়েন্ডি হলেটা জানান, নারীদের জন্য এটা খুব সুশীল একটি আচরণ হয় যদি তারা পড়ে যাওয়া জিনিস তুলতে গিয়ে মাথা না ঝুঁকিয়ে পিঠ সোজা রেখে বসে তারপর তা তোলেন।

তিনি আরও বলেন, নারীদের ক্ষুদ্র পোশাক ধর্ষকদের কাজকে সহজ করে দেয়। মেয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমরা এ ধরনের কাজকে উৎসাহিত করি না। কিন্তু একইভাবে লোকজনকেও সভ্যভব্য আচরণের বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে।

‘উত্তেজক’ পেশাক সংক্রান্ত এ আইন ভঙ্গকারীদের ৬ মাসের জেলদণ্ড দেওয়া হবে।     

প্রসঙ্গত, গত মাসে দেশটির দ্বিতীয় প্রধান শহর মানজিনিতে নারী অধিকারের দাবিতে আয়োজিত তরুণীদের এক সমাবেশে পুলিশ বাধা দেয়। কারণ, বিক্ষোভকারীদের অনেকেই মিনিস্কার্ট পরে ছিলেন।

তবে অতি রক্ষণশীল সোয়াজিল্যান্ডের এই কঠিন আইন একটি ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। আর তা হচ্ছে দেশটির রাজা এমসোয়াতি-৩ বা অভিজাতদের সামনে বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষ্যে ‘ইন্ডমালু’ পোশাক পরা টপলেস উর্বশী তরুণীদের সমবেত নৃত্য এ আইনের আওতামুক্ত থাকবে। ইন্ডমালু পোশাক বলতে বোঝায় কোমড়ের সামনের দিকে জড়ানো পুঁতির নকশা করা ক্ষুদ্র একটি বেল্ট। এই পোশাক (!) পড়া নারীদের গায়ে এই বেল্টের বাইরে বড়জোর দু’একটি রুমাল সদৃশ রঙ-বেরঙ কাপড়ের টুকরো হাতে, গলায় বা কোমড়ের একপাশে ঝোলানো থাকে। শরীরের ওপরের অংশ এবং পশ্চাদ্দেশ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত রাখা ইন্ডমালু পোশাকের নাচ বেশ উপভোগ করে থাকেন চরম দারিদ্রপীড়িত দেশটির বিলাসবহুল জীবনযাপনকারী রাজা, ১৩ জন স্ত্রীর স্বামী এমসোয়াতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১২
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।