ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

পথশিশুদের স্বপ্নের স্কুল

শেরিফ সায়ার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৩৪, জানুয়ারি ২৮, ২০১৩
পথশিশুদের স্বপ্নের স্কুল

স্বপ্ন ছাড়া বাঁচে কয়জন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে স্বপ্নকে পুঁজি করেই মানুষ বেঁচে থাকে।

অথচ আমাদের পাশেই হয়ত কোনো এক শিশু রাস্তায় অসহায়ের মতো পড়ে আছে। মনে হয়, স্বপ্ন দেখার অধিকার যেন তাদের নেই।

শিশুদের বেঁচে থাকার কিংবা স্বপ্ন দেখার অধিকার সবচেয়ে বেশি। আপন তুলিতে নিজের জগৎটাকে রঙিয়ে দেওয়ার অধিকার সব শিশুরই আছে। কিন্তু দারিদ্র্যতার আঘাতে তাদের মনের রঙগুলো যেন ফিকে হয়ে পড়ছে। হয়ত সে শিশুটি স্বপ্ন কি তাই জানে না।

এমনই সব শিশুদের স্বপ্ন দেখাতে কাজ করছে হিউম্যান সেফটি ফাউন্ডেশন। শিশুদের নিয়ে কিছু একটা করতে হবে। এমন ইচ্ছা থেকেই জন্ম হয় এ সংগঠনটির।

হিউম্যান সেফটি ফাউন্ডেশনের সভাপতি এম এ মুকিত বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আড্ডা দিতে গিয়ে দেখতাম অনেক শিশুরা ফুল বিক্রি করছে, পানি বিক্রি করছে। এগুলো দেখে ভাবতাম, আমরা তো অনেক সুখেই আছি। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে পড়াশোনা করেছি। অথচ আমাদের আশেপাশেই রয়েছে অসংখ্য সুবিধাবঞ্চিত শিশু। এসব শিশুদের জন্য কিছু করতে হবে। এমন ভাবনা থেকেই আমাদের সংগঠনটির জন্ম।

২০১০ সালের জানুয়ারিতে যাত্রা শুরু হয়। ছিন্নমূল ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য এ সংগঠনটি গড়ে তুলেছে ‘বৃক্ষমায়া শিশু বিকাশকেন্দ্র’। শুরুতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ২০ জন। তখন স্কুল বসত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। আস্তে আস্তে বেড়েছে ছাত্রছাত্রী, বেড়েছে স্কুলের কার্যক্রম।

এখন স্কুলের পরিসর বেড়েছে। এজন্য আরও তিনটি স্থানে চলছে স্কুলের কার্যক্রম। হাইকোর্ট মোড়, ওসমানী উদ্যান এবং পলাশী মোড়েও চলছে পথশিশুদের স্কুল। চার কেন্দ্রে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এখন ১৫০ জন। এসব শিক্ষার্থীদের একবেলা খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়। শুধু তাই নয়, পড়াশোনার জন্য বই-খাতারও ব্যবস্থা করে দেয় এ সংগঠনটি।

মুকিত বাংলানিউজকে আরও জানান, আটজন মিলে শুরু করা এ সংগঠনটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা এখনও চলছে। শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সেবারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত ঈদে প্রত্যেক শিশুকে নতুন জামা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও এ বছর শীতের কাপড়ও দেওয়া হয়েছে বলে মুকিত জানান। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মুকিত বলেন, আমরা প্রতিটি শিশুর জন্য সবুজ একটি দেশ রেখে যেতে চাই। এ লক্ষ্যেই আগামী পাঁচ বছরে ১ কোটি গাছ লাগানোর একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

চারটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন আটজন। তারা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। স্কুলে পড়ানো হয় বাংলা, ইংরেজি ও গণিত। সুবিধাবঞ্চিত অসংখ্য শিশুদের স্বপ্ন দেখাতে চায় এ সংগঠনের প্রতিটি সদস্য। শিক্ষা ছাড়া দেশকে বদলে দেওয়া অসম্ভব। এজন্য শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। একটি শিশুও যেন শিক্ষা অভাবে না ভোগে। এমনই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে হিউম্যান সেফটি ফাউন্ডেশন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।