ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

প্রিন্স-প্রিন্সেসের বিচ্ছেদ উদ্বেগ আদালতের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:০০, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৩
প্রিন্স-প্রিন্সেসের বিচ্ছেদ উদ্বেগ আদালতের

ঢাকা: ব্লু-গোল্ড ম্যাকাও পাখি প্রিন্স ও প্রিন্সেসের বিচ্ছেদে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক জহুরুল হক।

পাখি দুটির বিষয়ে দায়ের করা একটি রিভিশন মোকদ্দমার শুনানিতে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।



তাদের একত্রে রাখতে কোন উপায় বের করা যায় কিনা তা খুঁজে দেখতে তিনি মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবুকে অনুরোধ করেন।

উভয়পক্ষকে নিয়ে আদালতের বাইরে আপোষ মীমাংসার কী অগ্রগতি হলো তা আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেন তিনি।

তিনি বলেন, স্বীকৃতভাবেই প্রিন্স ও প্রিন্সেসের মালিক দুইজন। তাই আপোষ মীমাংসার মাধ্যমেই তাদের একত্রে রাখা সম্ভব। পাখি দুটির মালিকানা দ্বন্দ্ব যেন তাদের মৃত্যুর কারণ না হয়। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে বাচ্চা ভাগাভাগি করে নেওয়া যেতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

মঙ্গলবার আদালতে প্রিন্সেসের পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান ও বরুন কুমার বিশ্বাস এবং প্রিন্সের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন কাজল ও আব্দুল্লাহ মনসুর রিপন মামলার শুনানি করেন।
      
উল্লেখ্য, প্রিন্সের মালিকানা দাবি করে গত ১ জানুয়ারি ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন ঢাকার বসুন্ধরার আবাসিক এলাকার ব্লক-জি’এর এক বাসিন্দা পাখিপ্রেমী একরাম সেলিম। মালিকানার সমর্থনে তিনি সিঙ্গাপুর থেকে পাখিটি ক্রয়ের সমর্থনে কাগজপত্র আদালতে দাখিল করেন।

মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৯৭ সালের ২৫ মার্চ মাত্র তিন মাস বয়সে তিনি প্রিন্সকে খরিদ করেন। সকল আর্ন্তজাতিক ও দেশীয় আইনকানুন মেনে তিনি প্রায় ১২ বছর প্রিন্সকে লালন পালন করেন।

রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের প্রায় এক বিঘা জমির ওপর তার বাড়িতে পাখিটি বিচরণ করত। এক পর্যায়ে ইস্কাটনের বাড়ি বিক্রি করে বারিধারায় চলে যায় সেলিমের পরিবার। বিদেশে চাকরি, বাড়ি বিক্রি এবং নতুন বাড়ি তৈরীর ঝামেলার মধ্যে পাখিটির যতœ নেওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে তার পরিচিত হাতিরপুলে আরেক পাখিপ্রেমী ড. আবদুল ওয়াদুদের কাছে ২০১০ সালে পাখিটি লালন-পালনের অনুরোধ জানালে তিনি দায়িত্ব নেন। বর্তমানে ইকরাম সেলিম তার নিজের বাড়ির কাজ শেষ হওয়ায় প্রিন্সের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করেন। তিনি ফেরত চান তার প্রিন্সকে। কিন্তু ওয়াদুদ প্রিন্সকে ফেরত না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকলে তিনি এ মামলা করেন।

এদিকে আব্দুল ওয়াদুদ একাকী প্রিন্সের জন্য দুইবার দুটি ম্যাকাও পাখি কিনে আনেন। তারা পুরুষ হওয়ায় সারাক্ষণ মারামারি করে নতুন কেনা দুটি ম্যাকাও মারা যায়। অবশেষে তৃতীয়বারে একটি স্ত্রী ম্যাকাও পাখি কিনতে সক্ষম হন। এরই নাম প্রিন্সেস। বর্তমানে প্রিন্স ও প্রিন্সেসের ছয়টি বাচ্চা।

মামলা আদালত পর্যন্ত গড়াই। ১ জানুয়ারি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কলাবাগান থানার ওসিকে নির্দেশ দেন প্রিন্সকে উদ্ধার করে তার প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে। আদালতের নির্দেশে কলাবাগান থানা পুলিশ গত ৩ জানুয়ারী প্রিন্সকে তার মালিক ইকরাম সেলিমের কাছে ফিরিয়ে দেন।

ড. ওয়াদুদের আইনজীবী বরুন বিশ্বাস জানান, আমরা চাই মালিকানা দ্বন্দ্বে যেন ওদের সংসার ভেঙ্গে না যায়। প্রিন্সের (পুরুষ পাখি) জন্য খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়ে ভেঙ্গে পড়েছে প্রিন্সেস। তাকে বাচাতে আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৩
এমআই/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।