সিলেট: বাংলাদেশের প্রথম নারী প্যারাট্রুপারের খ্যাতি অর্জন করলেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জান্নাতুল ফেরদৌস। এক হাজার ফুট উঁচু থেকে মাটিতে অবতরণের মধ্য দিয়ে এক প্রশিক্ষণ শেষে তিনি এ সম্মান অর্জন করলেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে তিনি সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসের পানিছড়া এলাকায় বিমানবাহিনীর এক বিমান থেকে প্যারাসুটের মাধ্যমে সফলভাবে অবতরণ করেন। এর মাধ্যমে তার প্রশিক্ষণ কোর্স শেষ হয়।
এদিন দুপুরে এক অনুষ্ঠানে তাকে বেইজ পরিয়ে দেওয়া হয়।
জান্নাতুল গত ১৩ জানুয়ারি সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসের স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিক্স’র (এসআইএনট্রি) বিশেষ যুদ্ধ শাখার অধীনে পরিচালিত ব্যাসিক প্যারা কোর্সে অংশ নেন।
কোর্সটি ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আবহাওয়ার কারণে ১২ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে।
জান্নাতুল ফেরদৌসের এ সাফল্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারাট্রুপিং দলে একজন নারী সদস্য যোগ হলেন।
সেনাবাহিনীর বিশেষ যুদ্ধ শাখার প্রধান প্রশিক্ষক লে. কর্নেল একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, “সেনাবাহিনীর কোনো নারী কর্মকর্তা এ প্রথম প্যারাসুট থেকে জাম্প দিলেন। ”
তিনি বলেন, “১৯৯০ সাল থেকে সেনাবাহিনীতে এ কোর্স চালু হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার সেনা সদস্য এ কোর্স সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে ৫ শ’ সেনা কর্মকর্তাও রয়েছেন। তবে, নারী কর্মকর্তা হিসেবে প্রথম অংশ নিলেন জান্নাতুল। এর মাধ্যমে অন্য নারী কর্মকর্তারা এ প্রশিক্ষণে অনুপ্রাণিত হবেন। ”
জান্নাতুল ফেরদৌস এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এ কোর্সকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। এর মাধ্যমে অন্য মেয়েরা এ কোর্সের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবেন। ”
তিনি বলেন, “খুব ভালো লাগছে। আমি রোমাঞ্চিত। মনে হচ্ছে আরেকবার জাম্প দিই। এটা সাহসিকতাপূর্ণ কাজ। প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম তবে, প্রশিক্ষণ শেষে সবকিছু স্বাভাবিক মনে হয়েছে। ”
জানা গেছে, সাহসী এ সেনা কর্মকর্তা ২০০৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ৫৯তম বিএমএ লং কোর্সের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি সেনাবাহিনীতে মিলিটারি একাডেমির কম্পিউটার প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়ীয়া বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে। বাবা ব্যবসায়ী, মা গৃহিণী। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৩
এসএ/ সম্পাদনা: জয়নাল আবেদীন, নিউজরুম এডিটর