মিরপুর থেকে: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের ডাকা ৩৬ ঘণ্টার হরতাল চলাকালে মিরপুরে কথা হয় রুটি বিক্রেতা রাণীর সঙ্গে।
রাণী বেগম প্রতিদিন মিরপুর-২ নম্বরে বাংলাদেশ ইন্সটিউট অফ ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের সামনে রুটি, ডিম ও ভাজি বিক্রি করেন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “হরতালি আয় রোজগার কম। তাই কোনোমতে ডাল-ভাত খায়ে থাকা লাগবি। ”
রাণীর আয়ের উপরই নির্ভর করে পঙ্গু স্বামী কাঞ্চন, বৃদ্ধা মা আমেনা, দুই ছেলে সোহেল, সাজু ও মেয়ে সাথী। এদের সঙ্গে নিয়ে মিরপুর জনতা হাউজিং বস্তিতে থাকেন তিনি।
অন্যান্য দিন যেখানে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকার বেচাকেনা করে দৈনিক ৩০০ টাকা লাভ করেন, সেখানে হরতালের কারণে লাভের অংকটা নেমে পড়েছে অর্ধেকে। এতে সংসার চালানোটা যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তার পরেও চড়া দামে ১০ টাকা কেজি খড়ি (জ্বালানি), ৩৫ টাকা কেজি আটা ও ৪০ টাকা হালি ডিম কিনে লাভ করাটা একেবারে কঠিন হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান রাণী। তার প্রধান খদ্দের রিকশা চালকরা। হরতালে রিকশা চালক কম থাকায় বেচাকেনা একেবারে কম থাকে।
হরতালে লাভের চাকা থেমে থাকলেও থেমে থাকে না সংসারের খরচের চাকা। ৬ সদস্যের সংসারে দৈনিক তিন কেজি চাল ও তরিতরকারি দিয়ে খরচ লাগে ২৫০ টাকা। হরতালে এই টাকার যোগান দিতে হিমশিম খেতে হয় রাণীকে।
তাই বাধ্য হয়ে বাজার তালিকাও পরিবর্তন করতে হয় হরতালকে কেন্দ্র করে। ২০ বছর আগে যশোরের মনিহারপাড়া থেকে ভাগ্য বদলাতে ঢাকায় এসেও দুর্ভোগ ভাগ্য যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে রাণী বেগমের।
কান্না জড়িত কণ্ঠে বাংলানিউজকে বলেন, “হরতালে বেচাকেনা কম, তাই ডাল-ভাত খেয়ে কোনোমতে থাকা লাগবি। ”
তিনি আরও বলেন, “হরতালে বেবসা (ব্যবসা) করতি ডর করে, যে কোনো সময় তেড়ে আসে । দ্যাশে (দেশে) হরতাল যাতে না থাকে, সব কিছ সুস্থ, শান্তিতে থাকে এইটাই আমি চাই। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৩
এমআইএস/ সম্পাদনা: মামুনুর রশিদ, নিউজরুম এডিটর, সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর