ঢাকা: পহেলা ফাল্গুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
স্থির চিত্র ধরে রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে নানা ধরনের ক্যামেরা। প্রযুক্তির কল্যানে অনেকে আবার হাতের মোবাইলে তুলে নিচ্ছে ইচ্ছে মতো ছবি।

ছবি তোলা থেকে বাদ যাচ্ছেন না কোনো শ্রেণির মানুষই। নতুন ক্যামরায় মনের মতো ছবি তুলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী আদনান রহমান। তিন বছরের ভাতিজিকে নিয়ে এসেছেন বসন্তবরণ অনুষ্ঠানে। বলেন, এটা মাহির বসন্তবরন। কী দুষ্টু হয়েছে দেখেন, এদিক সেদিক কেবল ছুটাছুটি করছে। এখনকার ছবিগুলো ও যখন বড় হবে তখন দেখাবো। বেশ খেপিয়ে তোলা যাবে- বলেই হেসে ওঠেন আদনান রহমান।

এদিকে বর্তমানের ফেসবুক কালচারের কারণে ব্যবহারকারীরা যেন অনেকটাই ছবিনির্ভর হয়ে গেছে। আজকে কে কেমন ছবি দেবে, কার ছবিতো কতোটা লাইক পড়বে অথবা কমেন্টের সিরিয়াল কেমন হবে তাই নিয়ে হাসিমুখর আড্ডায় মেতে উঠেছেন তরুণীরা।

ইউল্যাব এর মিডিয়া অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের চার বান্ধবী এসেছেন চারুকলায়। ছবি তোলায় নিজেকে দক্ষ ভাবেন শিখা। অন্য বান্ধবীদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, আরে আমি ছবি তুলে দিচ্ছি। ফেসবুকে দিবি। দেখবি লাইকের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।

শিখাকে টিপ্পনী কেটে নাইমা বলেন, হ্যাঁ তোর ক্যামেরায়তো সব ঝাপসা আসে। মানুষ দেখবে কী করে। আর কমেন্টতো দূরের কথা লাইক দেবে কী করে।
এভাবেই তারুণ্য যেন মুখর, বর্ণিল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। বাদ যাচ্ছেন না প্রবীণ-প্রবীণারাও। পুরান ঢাকায় নিজের জাঁকালো ব্যবসা আমজাদ হোসেনের। এখন বয়স প্রায় ৬০। তাই একমাত্র ছেলের হাতে ব্যবসার ভার তুলে দিয়ে তরুণ বয়সের ফটোগ্রাফার হওয়ার সখ পূরণ করছেন।

ডিএসএলআর ক্যামেরা হাতে একের পর এক ছবি তুলে যাচ্ছেন এই প্রবীণ। পুরো পেশাদার ফটোগ্রাফারের মতো কোনো মুহূর্তই যেন ছাড় দিতে চান না তিনি। বলেন, কলেজজীবনে
ফটোগ্রাফার হওয়ার সখ ছিলো। কিন্তু অল্প বয়সে বাবা মারা যান। তারপর ভাইবোনদের দায়িত্ব নেয়া। নিজের সখটা ভ’লেই গিয়েছিলাম। তাই জীবনের দায়িত্বগুলো থেকে যখন অবসর কিছুটা মিললই সখটা পূরন করতে দোষ কোথায়।
এভাবেই বৃহস্পতিবার সবাই যেন ফটোগ্রাফার হয়ে উঠেছিলেন ঢাকা বিশ্বদ্যালয়ের চারুকলা ও এর আশেপাশের এলাকায় জড়ো হওয়া বসন্তবরণকারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৩