ঢাকা, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৬ মে ২০২৫, ১৮ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ইউসুফ কনফেকশনারির প্লেইন কেক

নাজিমউদ্দিন খান লিয়ন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৩৯, আগস্ট ২৬, ২০১৪
ইউসুফ কনফেকশনারির প্লেইন কেক ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: প্রায় ৪০বছর ধরে  প্লেইন কেক কিনতে আসি। শুধু আমিই না;আমার বাবাও এখানকার কেক কিনতেন।

এখানকার খাবারের মানটা ভালো তাই বহু বছর ধরে এখানকার কেক কিনি। এভাবেই প্লেইন কেকের প্রশংসা করছিলেন ইউসুফ কনফেকশনারির প্লেইন কেক ক্রেতা পুরান ঢাকার অধিবাসী মোহাম্মদ আব্দুল হালিম। শুধু আব্দুল হালিম নন,রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও প্লেইন কেক কিনতে আসেন ক্রেতারা । এমনটিই জানালেন দোকানের কর্মচারী মোহাম্মদ খালিদ।

পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে জনসন রোডের ডান পাশ দিয়ে একটু এগোলে চোখে পড়বে ইউসুফ কনফেকশনারির সাইনবোর্ড। জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ৭৫ বছর আগে ইউসুফ কনফেকশনারি প্রতিষ্ঠিত হয়।

ধোলাইখাল এলাকার হাজী মোহাম্মদ ইউসুফ তার নামানুসারে ১৯৩৫ সালে ‘ইউসুফ কনফেকশনারি’ নামে এ ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে দোকানটি ছিলো এই রোডের উল্টো দিকে।   পরে অবশ্য ১৯৫৮ সালে দোকানটিকে বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। শুরু থেকেই দোকানটির রয়েছে নিজস্ব কারখানা। প্রথমে কারখানাটি নারিন্দা এলাকায় ছিলো  তবে এখন নারিন্দা এলাকা থেকে সরিয়ে জজকোর্ট এলাকায়  নিয়ে আসা হয়। এখানে বিস্কুট,পাউরুটি,কেক,টোস্ট,নিমকি,টানা পরটা, বাটারবন, নানখাতাই বিস্কুট ও ক্রিমরোল তৈরি করা হয়। এক পাউন্ডের একটি  প্লেইন কেকের মূল্য ১৩০টাকা, যেটি শুরুতে ছিলো দেড় টাকা।

দোকানের মালিক মোহাম্মদ ইলিয়াস বাংলানিউজকে  বলেন,  প্রথম থেকেই আমাদের নিজস্ব কারখানায় এই খাবারগুলো তৈরি হয়। কারখানায় প্রায় ৭০জন কারিগর রয়েছে। এখানকার সবচেয়ে পুরনো কারিগর ‘চৌধুরী’ । সে প্রায় ২৮ বছর ধরে এখানেই আছে।   চৌধুরীর পুরো নাম জানতে চাইলে দোকানের কমচারী খালিদ বলেন,ওনার পুরো নাম আবুল হোসেন চৌধুরী। তবে সবাই তাকে ‘চৌধুরী’ নামেই চেনে।

মোহাম্মদ ইলিয়াস  জানান,  ইউসুফ কনফেকশনারি ও প্লেইন কেক থাকলেও এখন আর বেঁচে নেই  দোকানটির প্রতিষ্ঠাতা হাজী মোহাম্মদ ইউসুফ। ১৯৯০সালে তিনি মারা যান। এরপর তার সন্তানদের মধ্যে মোহাম্মদ ইকবাল, ইসহাক, ইফতেখার ও  ইস্রাফিল এর হাল ধরেন। বর্তমানে তারা বিভিন্ন পেশায় থাকলেও বাবার ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়(ধানমণ্ডি,গুলশান,বাংলামোটর , রামপুরা) ইউসুফ কনফেকশনারির শাখা তারা চালাচ্ছেন।

তিনি আরো  জানান, পাকিস্তান আমল থেকে এখনো বিভিন্ন স্কুল,কলেজ, সরকারি-বেসরকারি অফিসের বিভিন্ন  অনুষ্ঠানে অর্ডারের মাধ্যমে  ইউসুফ কনফেকশনারির খাবার সরবরাহ করা হয়।

খাবারের মান সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমরা কোনো ছাড় দিই না। কারণ একবার যদি বদনাম হয়ে যায় তাহলে আর রক্ষা নেই। তাই  ক্রেতাদের কাছে আমাদের সুনাম ধরে রাখতেই খাবারের মানটার ওপর আমরা সবচেয়ে বেশি জোর দেই।

সপ্তাহের সাতদিনই  সকাল ৯টা থেকে রাত  ১১টা পর্যন্ত আমাদের দোকান  খোলা থাকে। সুতরাং প্লেইন কেক কেমন সেটা পরখ করতে ক্রেতারা চলে আসতে পারেন যে কোনোদিন । আশা করি, সবার ভালো লাগবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।