টেলিভিশন শিশুর মুখে হাসি ফোটাবে সেতো নতুন নয়। কিন্তু কোন হাসিটি বেশি সুন্দর?- যখন তারা তাদের পছন্দের কোনও অনুষ্ঠান দেখে হাসে তখন? নাকি ছবির এই দুই শিশুর মতো যখন তারা আবর্জনার ভাগাড়ে খুঁজে পায় টেলিভিশনের ফ্রেম, আর তা সামনে ধরে এমন হাসি হাসে?
বাংলাদেশের সিলেট শহরে তোলা এই ছবি স্থান করে নিয়েছে লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলিমেইল পত্রিকায়।
এরা মানুষের ফেলে দেওয়া বিভিন্ন সামগ্রী ময়লার মধ্য থেকে কুড়ায়, যা আবার বাজারেই বিকোয় সামান্য টাকায়। কিন্তু এই কাজ যে কতটা কঠিন, কতটা ঝুঁকির, কতটা সংগ্রামের তা ফুটে উঠেছে ছবিগুলোতে।
পাঁচ লাখ মানুষের শহর সিলেটকে ধনীদের নগরীও বলা চলে। এখানে পশ্চিমা ধাঁচের হোটেল শপিং মল, বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ির ব্যবহার রয়েছে, শহরে ব্যবসাও বাড়ছে। আবর্জনায় জীবিকা খোঁজা বন্ধ হচ্ছে না টোকাইদের। মণকে মণ পুঁতিগন্ধময় আবর্জনা ঘেঁটে তারা খোঁজে ঘর-গেরস্থালির ফেলনা পুরনো সামগ্রী।
কেউ কেউ এই আবর্জনার স্তুপে হাঁটতে স্যান্ডেল পরে, কেউ পরেই না, আর হাতে গ্লাভসের ব্যবহার তো প্রশ্নাতীত।
সেখানে মাঝে মধ্যেই আগুন ধরিয়ে আবর্জনা পোড়ানো হয়। তাতে যে লেলিহান শিখা তেরি হয়, গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে তাও ভীষণ ক্ষতিকর শিশুদের জন্য।
রিসাইক্লিং শিল্প বাংলাদেশে ভালোই করছে। ২০০’রও বেশি ফ্যাক্টরি আছে যাতে প্লাস্টিক বোতল রিসাইক্লিংয়ের কাজ হয়। আর তা থেকে যে উপাদান তৈরি হয় তা চীন, থাইল্যান্ডে রপ্তানি হয়। এ তথ্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অব ওয়েস্ট পিকারস’র।
আবর্জনার স্তুপের এই মানুষগুলো লিখতে পড়তে কমই পারে, দীর্ঘ সময় খাটুনি খেটে তারা সামান্যই আয় করে। ১২ ঘণ্টার শ্রমে তাদের আয় এক থেকে দেড়শ টাকা। আর ধারণা করা হচ্ছে দেশে এমন ১ লাখ মানুষ আবর্জনার স্তূপে বিক্রিযোগ্য সামগ্রী খোঁজে। এরা সবাই টোকাই নামেই পরিচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫