ঢাকা: বিয়ের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পাত্রের অন্যান্য যোগ্যতার সঙ্গে এটাও দেখা হয়, তিনি কতটা লম্বা। অর্থাৎ কনের চাইতে খানিকটা লম্বা না হলে কি আর দেখতে মানায়!
গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৯ শতাংশ নারীই নিজেদের চেয়ে উচ্চতায় লম্বা পুরুষদেরকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে আগ্রহী।
রোমান্টিকভাবে বলা যায়, নারীরা এমন উচ্চতার জীবনসঙ্গী চান, যাতে তারা স্বাভাবিকভাবে দাঁড়িয়েই প্রিয় মানুষটির হৃদস্পন্দন শুনতে পান।
তবে ইভেম মেদিয়েরস ও তার জীবনসঙ্গী জোয়েলিসন ফার্নান্দেজ ডি সিলভার গল্পটি একটু ভিন্ন। জোয়েলিসনের হৃদস্পন্দন শুনতে ইভেমের চেয়ারের উপর দাঁড়াতে হলেও, দু’জনের হৃদয়ের সুর মিলেমিশে একাকার।
২৮ বছর বয়সী জোয়েলিসন উচ্চতায় সাত ফুট আট ইঞ্চি। রেকর্ড অনুযায়ী, ব্রাজিলবাসী জোয়েলিসন বিশ্বের তৃতীয় লম্বা ব্যক্তি। সবাই তাকে ডাকে ‘জেন্টল জায়ান্ট’ নামে। ছোটবেলা থেকেই তিনি জাইগান্টিজম রোগে ভুগছেন। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পিটুইটারি গ্রন্থিতে টিউমার দেখা দেওয়ার কারণে, হরমোন নিঃসরণ শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় বেড়ে যায়। ফলে তাদের দৈর্ঘ্য বয়স অনুপাতে অনেক বেশি হয়।
এই অস্বাভাবিক উচ্চতার জন্য জোয়েলিসন জীবনে সহ্য করেছেন নানা কটুক্তি। এজন্য স্কুলও ছাড়তে হয়েছে তাকে।
তবে এখানেই শেষ নয়। শেষপর্যন্ত তিনি খুঁজে পেয়েছেন তার যথাযোগ্য জীবনসঙ্গীকে ডিনি কি-না জোয়েলিসন বলতেই পাগল। হুম, তিনি আর কেউ নন। তার নাম ইভেম মেদিয়েরস।
অনলাইনে পরিচয়ের পর ২০১৪ সালে তারা বিয়ে করেন। ইভেম সম্পর্কে জোয়েলিসন জানান, যেদিন তাকে আমি প্রথম দেখেছি মনে হয়েছিল, প্রথম দেখাতেই তার প্রেমে পড়ে গেছি আমি।
ইভেমের উচ্চতা পাঁচ ফুট। বলতে গেলে জোয়েলিসনের চোখে চোখ রাখতে বেশ বেগ পেতে হয় ইভেমকে। তবে তারা নিজেদের নিয়ে এতটাই পরিতৃপ্ত যে, উচ্চতা তাদের ভালোবাসায় দূরত্ব হয়ে দাঁড়ায়নি।
জোয়েলিসন জানান, উচ্চতা যা-ই হোক না কেন, ইভেমকে দেখে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তিনি চাইছিলেন সবসময় তার সঙ্গে থাকতে।
প্রথম সাক্ষাতের দিন ইভেমের বাবা তার হবু মেয়ে জামাইকে দেখে রীতিমতো চমকেই উঠেছিলেন।
২১ বছর বয়সী ইভেম বলেন, বাবা ওকে দেখে আমাকে বলেছিলেন, আমি তোমাকে বলেছিলাম, একজন মানুষের মতো মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বাছাই করতে। তুমি বোধহয় একটু বেশিই পেয়েছ!
অন্যদিকে, জোয়েলিসনের মা ছেলেবৌয়ের আগমনে খানিক ঈর্ষান্বিতই হয়েছেন। কারণ, ছোটবেলা থেকে জোয়েলিসনের সব প্রতিবন্ধকতার সঙ্গী ছিলেন তার মা।
জোয়েলিসনের মা ইভানেলদি ফার্নান্দেজ ডি সিলভা (৪৫) বলেন, আমি আমার পুরো জীবন উৎসর্গ করেছি আমার ছেলের জন্য। তবে একজন মা হিসেবে আমি চাই আমার সন্তান সুখী হোক।
তিনি আরও জানান, এখনও অব্দি জোয়েলিসনের দেখাশোনা তিনিই করছেন।
এখনও ইভেমের হাতে এ দায়ভার তিনি তুলে দেননি। তবে একসময় ইভেমকে এই পরম দায়িত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, জোয়েলিসন তার স্ত্রী সম্পর্কে বেশ গুণমুগ্ধ। তিনি ভাষ্য, সেই আমার ২৮ বছরের জীবনে প্রথম নারী। তার সবকিছুই অসাধারণ। বিশেষ করে তার চোখ। সে অনেক যত্নশীল ও সত্যবাদী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৫
এসএস