ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

সৌখিনতায় পিতলের সামগ্রী

নাজমুল হাসান, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫২ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৫
সৌখিনতায় পিতলের সামগ্রী

ঢাকা: বাংলাদেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে পিতলের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। একসময় আমাদের দেশে পিতলের জিনিসপত্র ব্যবহারের খুব প্রচলন ছিল।

বিশেষ করে রান্নাঘরের তৈজসপত্র ও ব্যবহার্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে পিতলের থালা, বাটি, গ্লাস, রান্নার হাঁড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করা হতো। সাধারণত জমিদারবাড়ি ও অভিজাত পরিবারগুলোতে বেশি দেখা যেত পিতলে জিনিসপত্র।

কিন্তু কালের বিবর্তনে পিতল সামগ্রীর ব্যবহারের মাত্রা দিন দিন কমে গেলেও, সৌখিন মানুষের কাছে এর চাহিদা রয়ে গেছে বৈকি! অন্দরসজ্জার উপকরণ হিসেবেও ইদানিং ঘরে শোভা পাচ্ছে পিতলের সামগ্রী।

এসবের মধ্যে রয়েছে নানা রকম শো-পিস, ওয়াল ম্যাট, ফুলের টব, বিভিন্ন ধরনের গ্লাস, থালা, বাটি, কাজলদানি, চামচ, হুক্কা, আয়নার ফ্রেম ইত্যাদি।

কোথায় পাবেন
বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন বড় বড় শো-রুম ও গিফট শপে পিতলের শো-পিস পাওয়া যায়। আড়ংসহ বিভিন্ন দেশি  পণ্যসামগ্রীর শো-রুমগুলোতে পাবেন পিতলের নানারকম জিনিস। তবে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের দোকানগুলোতে আপনি পাবেন পিতলের প্রাচীন সব জিনিসপত্র। তুলনামূলকভাবে এখানকার সংগ্রহও অনেক বেশি।  

এর মধ্যে অন্যতম এলিফ্যান্ট রোডের ‘স্মৃতি-স্বরূপ’। দোকানটিতে পা রাখলেই খোঁজ মিলবে পিতলের সব বাহারি জিনিসের। কালের বিবর্তনে অনেক জিনিস হারিয়ে গেলেও, আপনার পছন্দের জিনিসটি মিলে যেতেও পারে।
 
‘স্মৃতি-স্বরূপ’ দোকানের ম্যানেজার মো. আলমগীর জানান, দোকানটির বয়স প্রায় ৪২ বছর। পিতলের নানা জিনিস তৈরি ছাড়াও বিভিন্ন প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জিনিস সংগ্রহ করে তারা বিক্রি করেন।

বেচাকেনার প্রশ্ন উঠলে আলমগীর জানান, ২০ থেকে ২৫ বছর আগেও পিতলের জিনিসের খুব চাহিদা ছিল। রাজধানীর অভিজাতরা প্রায়ই এ দোকানে আসতেন। কিন্তু এখন আর তেমন বেচাকেনা নেই।  

দরদাম
আগের মতো চাহিদা না থাকলেও আলমগীর জানান, পিতলের জিনিসের বেচাকেনা কমেছে ঠিকই তবে শহরে সৌখিন মানুষের আনাগোনাও বেড়েছে। তাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এখানে পিতলের নানা জিনিস আজও তৈরি হচ্ছে। এসব জিনিসের ধরন ও ডিজাইনের উপর নির্ভর করে দরদাম।

চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক পিতল সামগ্রীর দরদস্তুর।

নানা কারুকাজে তৈরি বড় হুক্কার দাম ১৫ হাজার ও ছোট সাইজ নিলে পড়বে সাত হাজার টাকা। রয়েছে বিভিন্ন আকারের ফুলের টবও। আকার অনুযায়ী দামও ভিন্ন। ১০ ইঞ্চি ফুলের টব ১৫শ’ থেকে ২৫শ’ ও ১১ ইঞ্চি তিন হাজার থেকে চার হাজার ৫শ’ টাকা। ১২ ইঞ্চি টবের দাম পড়বে চার হাজার ৫শ’ থেকে সাত হাজার ৫শ’ টাকা। এছাড়াও রয়েছে বড় লাইট জার। লাইট জার এখানে সুরাই ল্যাম্প নামে পরিচিত।

বড় সুরাই ল্যাম্পের দাম পড়বে ৩৫ হাজার ও ছোটটির নয় হাজার টাকা।

এছাড়াও রয়েছে নিত্য ব্যবহার্য নানা রকম থালা-বাটি। এগুলো ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন।

রয়েছে ঘর সাজানোর নানা রকম শো-পিস। মাঝারি আকার শো-পিস ঘোড়ার দাম ১২শ’ থেকে ১৫শ’, বাঘের দাম পড়বে তিন থেকে চার হাজার, হাতি দুই হাজার, ভাল্লুক দুই হাজার আর হরিণ ১২ হাজার টাকা।

নানা আকারের ওয়ালম্যাট পাবেন পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যেই। পিতলের জিনিসপত্রের মধ্যে সবচেয়ে নজরকাড়া হলো, সুন্দর কারুকাজে তৈরি ছোট-বড় আয়নার ফ্রেম। এসব ফ্রেম এক থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৯ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৫
এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।