ঢাকা: ভালোবাসার নগরী প্যারিস। তা হবে নাই বা কেন? পন্ট দেস আর্টস ব্রিজ যেখানে রয়েছে সেটা কি আর ভালোবাসার নগরী না হয়ে পারে? বছরের পর বছর ধরে রোমান্টিক দম্পতিরা তাদের সম্পর্ক টেকসই করতে এই ব্রিজের রেলিংয়ে তালা ঝুলিয়ে আসছেন।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে সিন নদীর ওপর নির্মিত এই ব্রিজে দম্পতিরা তালা ঝুলাতে শুরু করেন ২০০৮ সাল থেকে। প্রতিবছরই বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে কপোত-কপোতীরা এসে এখানে তালা লাগিয়ে চাবি নদীতে ফেলে দেন। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ব্রিজে তালার সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় সাত লাখ।
সাত লাখ তালা বহন করছে একটি ব্রিজ! গত গ্রীষ্মকালে ব্রিজটির গ্রিল তালার ভারে সিন নদীতে ভেঙে পড়ে। এরপরই এখানকার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কাউন্সিল ব্রিজটিতে তালা ঝোলানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। দুর্ঘটনা এড়াতে প্যারিসবাসী ফেসবুকে ‘নো লাভ লকস’ শিরোনামে ক্যাম্পেইনও করেছেন।
এই ক্যাম্পেইনে সাড়া দিতেই স্থানীয় কাউন্সিল এসব তালা অপসারণের কাজে নেমেছে।
প্যারিসের ডেপুটি মেয়র ব্রুনো জুলিয়ার্ড জানান, প্যারিস ভালোবাসার রাজধানী, এজন্য আমরা গর্বিত। তবে, লাভ লকস ছাড়াও ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য নিশ্চয় আরও সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এখানে লাগানো তালাগুলো ব্রিজে অতিরিক্ত ভার সংযোজন করছে, যা এখানকার পরিবেশ ও দর্শনার্থীদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।
ব্রিজটির প্রথম নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৮০৪ সালে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির কারণে ১৯৮০ সালে এটি পুনর্নির্মাণ করা হয়।
ব্রিজে লাভ লকস ঝোলানোর ধারণাটি আসে ইতালিয়ান লেখক ফেদেরিকো মোকার ‘আই ওয়ান্ট ইউ’ উপন্যাস থেকে। ২০০০ সাল থেকে কিছু লাভ লকস দেখা গেলেও ২০০৮ সাল থেকে এখানে তালা ঝোলানোর প্রচলন শুরু হয়। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই তালার ভারে ব্রিজের ওজন হয় প্রায় বিশটি হাতির সমান।
ইতোমধ্যেই নগরকর্মীরা এসব তালা অপসারণের জন্য কাজে লেগে গেছেন। ইউনেস্কোর ঐতিহ্যবাহী বিশ্বমানের এলাকাটি সংরক্ষণেই অপসারণ করা হচ্ছে এই প্রেমবন্ধনী।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৫
এএ