ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৫
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ঢাকা: ‘আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে দুয়ার কাঁপে/ ক্ষণে ক্ষণে ঘরের বাঁধন যায় বুঝি আজ টুটে/ ধরিত্রী তাঁর অঙ্গনেতে নাচের তালে ওঠেন মেতে/ চঞ্চল তাঁর অঞ্চল যায় লুটে/ প্রথম যুগের বচন শুনি মনে/ নবশ্যামল প্রাণের নিকেতনে। ’

বাঙালির বর্ষা মানেই রবীন্দ্রনাথের গান।

বর্ষার সঙ্গে কী জানি কী কারণে কবিগুরুর ছিল এতটাই মিতালি। তার অসংখ্য কবিতা ও গানে ফুটে উঠেছে বাংলার বর্ষাঘন দিন আর বৃষ্টিভেজা রাতের গল্প। এজন্যই হয়ত শ্রাবণবেলাতে তিনি বিদায় নিয়েছেন পৃথিবী থেকে।

০৬ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ২২ শ্রাবণ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুবার্ষিকী। কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীতস্রষ্টা, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালের ০৭ আগস্ট (২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) জোড়াসাঁকোর নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যের প্রায় সব ধারাতেই পদচারণ‍া করেছেন। একইসঙ্গে তিনি ছিলেন চিত্রকর, অভিনেতা ও কণ্ঠশিল্পী। তার জীবদ্দশায় মোট দুই হাজার ছবি তিনি এঁকেছেন। তিনি একটি স্বতন্ত্র নৃত্যশৈলীও প্রবর্তন করেন। যা রবীন্দ্র নৃত্য নামে বিশেষভাবে পরিচিত।
 
রবীন্দ্রনাথ মাত্র আট বছর বয়সে কবিতা লেখা শুরু করেন। তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘অভিলাষ’। এ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের মোট ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ এবং অন্যান্য গদ্যসংকলন প্রকাশিত  হয়েছে। এছাড়াও গল্পগুচ্ছে ৯৫টি ছোটগল্প, গীতবিতানে মোট এক হাজার ৯শ ১৫টি গানসহ অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডের রবীন্দ্র রচনাবলীতে প্রকাশ পেয়েছে।


১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান। সাহিত্যে তার অসামান্য কীর্তি তাকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি উপাধিতে ভূষিত করেছে।

লেখালেখি ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুরে ‘শ‍ান্তিনিকেতন’ প্রতিষ্ঠা করেন। তখন প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল ব্রহ্মচর্যাশ্রম। পরে তা শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত ও বর্তমানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত।   ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন ও ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া নাইট উপাধি পান। এছাড়াও ১৯২১ সালে গ্রামের উন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।


রবীন্দ্রনাথ ছিলেন ভ্রমণপ্রেমী। তিনি মোট ১২ বার বিশ্বভ্রমণে যান। ১৮৭৮ সাল থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে তিনি পাঁচটি মহাদেশের ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন।

রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তৎকালীন সমাজ, সামজিক চেতনা ও সংস্কৃতির চেয়ে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে। তিনি ছিলেন এতটাই অভিনব ও আধুনিক যে যুগের পর যুগ ও প্রজন্মের পর প্রজন্ম তার চিন্তা ও ধ্যান-ধারণা দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে।

বিশ্বকবি শেষ জীবনে তিনি খুব একটা ভালো ছিলেন না। টানা চার বছর তিনি অসুস্থ ছিলেন। ১৯৪০ সালে অসুস্থতার জন্য তিনি শয্যাশায়ী হন। তবে মত্যুর এক সপ্তাহ আগ পর্যন্ত তার লেখনি ছিল সচল।

১৯৪১ সালের ০৭ আগস্ট তিনি অন্যভুবনে পাড়ি জমান।

রবীন্দ্রনাথ তার অসামান্য সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যুগে যুগে বেঁচে রয়েছেন ও চিরকাল থাকবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৫
এসএস/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।