ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

বিশ্বের ১০ অদ্ভুত ক্ষুদ্র রাষ্ট্র

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
বিশ্বের ১০ অদ্ভুত ক্ষুদ্র রাষ্ট্র

ঢাকা: একটু ঘাঁটাঘাঁটি করলে মানচিত্রের কোনো এক কোণে পেয়ে যেতে পারেন এমন কিছু অদ্ভুত ক্ষুদ্র রাষ্ট্র বা রাজ্য যা কেউ শখের বসে প্রতিষ্ঠা করেছেন, বা জায়গা কিনে রাজ্য বানিয়েছেন অথবা কোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে উঠেছে। এসব রাষ্ট্র বা ক্ষুদ্র জাতির কতগুলোর সদর দপ্তর রাষ্ট্রের মালিকের নিজ বাড়ির কোনো ফ্ল্যাটে।

তবে রাষ্ট্র পরিচালনার সব শর্ত ও নিয়ম কোনোটারই কমতি নেই। একটু ঘুরে আসি সেসব ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলো থেকে।


রিডোন্ডা রাজ্য
ক্যারাবিয়ান সাগরের দ্বীপ নেভিস ও মন্টসেরাটের মধ্যে অবস্থিত এ রাজ্যটি। রাজ্য যখন রাজা তো থাকবেই! রাজার নাম ম‍াথ্যু ডউডি শিল। রিডোন্ডা: দ্য লিজেন্ড অব দ্য কিংডম অনুযায়ী, ১৮৬৫ সালে ব্রিটিশরা এই ক্ষুদ্র রাজ্যের রাজা হিসেবে তাকে অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে, ১৮৮০ সালে ডউডি শিলের ছেলে মাথ্যু ফিপস রাজা হন। বর্তমানে রিডোন্ডা রাজ্যের সিংহাসনের দাবিদার চারজন।



দ্য প্রিন্সিপালিটি অব সিল্যান্ড

পূর্ব যুক্তরাজ্যের সাফোক উপকূলের সাত মাইল দূরে অবস্থিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সি ফোর্ট। ০.০২৫ স্কয়‍ার কিলোমিটার বা দুই লাখ ৭০ হাজার ফুট দৈর্ঘ্যের সি ফোর্টটিও একটি রাষ্ট্র। ১৯৬৭ সালে পাইরেট রেডিও সম্প্রচারক পেডি রয় বেটস এটি প্রতিষ্ঠা করেন। পেডি চেয়েছিলেন এ জায়গাটিকে সার্বভৌমরাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে। তার ঠিক এক বছর পর অর্থাৎ, ১৯৬৮ সালে ব্রিটিশ আদালত এটিকে ব্রিটিশ এখতিয়ারের বাইরে বলে ঘোষণা দেয়। একটি রাষ্ট্রের যা যা থাকা দরকার তার সবই রয়েছে এখানে। নিজস্ব পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, মুদ্রা, জাতীয় প্রতীক, পাসপোর্ট প্রভৃতি।

দ্য কঞ্চ রিপাবলিক
১৯৮২ সালে মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বর্ডার পেট্রল ফ্লোরিডা দীপপুঞ্জ ও মূলভূমির মধ্যে একটি পরিদর্শন পয়েন্ট স্থাপন করে। ফ্লোরিডার কি ওয়েস্টের মেয়র ডেনিস ওয়ার্ডলো কঞ্চ রিপাবলিককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেন।

দ্য রিপাবলিক অব মলোসিয়া
এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা করেছেন কেভিন বুঘ। কেভিনের নেভাদার ডেটনের নিজ বাড়ির কাছেই মলোসিয়ার সদর দপ্তরটি অবস্থিত। রিপাবলিক অব মলোসিয়া নিজেকে আলাদা জাতি হিসেবে ঘোষণা দিলেও এটি সরকারিভাবে জাতিসংঘ বা কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচিতি পায়নি। এটি বুঘের ০.০১ একর বাড়ি ও ১.৩ একর সংলগ্ন সম্পত্তি নিয়ে গঠিত। পূর্বে রাষ্ট্রটিকে পেনসিলভানিয়ার সম্পত্তি হিসেবেও দাবি করা হতো। ১৯৯০ সালে এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের ভৌগলিক সত্ত্বা প্রকাশ পায়।


দ্য রিপাবলিক অব উজুপাস

১৯৯৭ সালে দক্ষিণ-পূর্ব বাল্টিক সাগরের উপকূলের লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াস জেলার উজুপাস আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হয়। এর নিজস্ব সংবিধান, পতাকা, সেনাবাহিনী ও জাতীয় সংগীত  রয়েছে।


ফ্রিটাউন ক্রিস্টিয়ানা

ফ্রিটাউন ক্রিস্টিয়ানা স্থাপিত হয়েছে ১৯৭১ সালে। কোপেনহেগেনের ক্রিস্টিয়ানসাভানের সাড়ে আটশো নাগরিক নিয়ে এ রাষ্ট্র গঠিত।


গ্র্যান্ড ডাচি অব ফ্ল্যানডেনসিস

বেলজিয়ানবাসী গ্র্যান্ড ডাচি অব ফ্ল্যানডেনসিস ২০০৮ সালে এ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৯ সালের এন্টার্কটিক চুক্তির পাঁচটি এন্টার্কটিক দীপপুঞ্জ সাইপল, চেরি, মাহের, প্রাঙ্কে ও কার্নি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এ ক্ষুদ্র দেশটি। ২১টি দেশ থেকে আগত প্রায় একশোরও বেশি নাগরিকের বসতি এখানে। এছাড়াও রাষ্ট্রটির নিজস্ব আইডি কার্ড, মুদ্রা, সংবাদপত্র, সংবিধান ও জাতীয় সংগীত রয়েছে।


প্রিন্সিপালিটি অব হাট রিভার

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থের সাড়ে তিনশো মাইল উত্তরে অবস্থিত  প্রিন্সিপালিটি অব হাট রিভার স্থাপন করেছেন লিওনার্দ জর্জ ক্যাসলি। ১৯৭০ সালে সরকারের কৃষি নীতির প্রতিবাদে রাষ্ট্রটি গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে স্থানটি পরিচিত। প্রতি বছর ৪০ হাজারেরও বেশি পর্যটক এখানে আসেন। ৭৫ বর্গ কিলোমিটার এই রাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা মাত্র ২৩ জন। স্মারক মুদ্রা তো রয়েছেই এমনকি কোম্পানি নিবন্ধীকরণের কাজও চলে এখানে।


প্রিন্সিপালিটি অব আউটার বাল্ডোনিয়া

বিলুপ্ত ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটি ১৯৪৮ সালে আমেরিকান ব্যবসায়ী ও পেপসিকো লবিস্ট রাসেল আরান্ডেল প্রতিষ্ঠা করেন। নোভা স্কশিয়া টাস্কেট দীপপুঞ্জের দক্ষিণে আউটার বাল্ড টাস্কেট দ্বীপে গড়ে তোল‍া হয় ছোট আয়তনের রাষ্ট্র প্রিন্সিপালিটি অব আউটার বাল্ডোনিয়া। একবার মাছ ধরার সময় ‍আরান্ডেল এ দ্বীপটি খুঁজে পান ও সাড়ে সাতশো ডলারে তা কিনে নেন। যার বাংলাদেশি মূল্য প্রায় ৬০ হাজার। পরে ১৯৭৩ সালে তিনি রাষ্ট্রটি নোভা স্কশিয়া বার্ড সেসাইটির কাছে বিক্রি করে দেন।


দ্য কিংডম অব লাভলি

ব্রিটিশ চলচ্চিত্র নির্মাতা ড্যানি ওয়ালেস বিবিসি ডকুমেন্টারি হাউ টু স্টার্ট ইউর ওউন কান্ট্রির জন্য এ রাষ্ট্রটি তৈরি করেন। ড্যানির পূর্ব লন্ডনের ফ্ল্যাটে দ্য কিংডম অব লাভলির সদর দপ্তর। রাষ্ট্রটির নিজস্ব পতাকা, জাতীয় পরিচয় চিহ্ন ও মূলমন্ত্র রয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বর্তমানে এখানকার নাগরিকের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০ হাজারেরও বেশি।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
এসএমএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।