‘‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না
ও বন্ধু...’’
ভূপেন হাজারিকার কণ্ঠে গীত এই গানের বাণী আজও মিথ্যে নয়। এই স্বার্থপরতা ও বস্তুবাদী মানসিকতার যুগেও।
এক মরণাপন্ন কিডনি রোগীর জন্য ফেসবুক আবেদনে সাড়া দিয়ে মহত্বের এই পরাকাষ্ঠা দেখান লুইস ড্রুয়ারি । স্ট্যাসি হেউইট (Stacey Hewitt) নামের এই রোগীর বাবা ড্যারেন হেউইট (Darren Hewitt) তার ফেসবুক পোস্টে আবেদনে লিখেছিলেন,: “ এমন কেউ কি আছেন যিনি আমার মেয়েটার জীবন বাঁচাতে একটা কিডনি দান করবেন?’’ তার এই আবেদনটা পড়ে মৃত্যুপথযাত্রী অচেনা মেয়েটার জন্য লুইস ড্রুয়ারির মনে মায়া জাগে।
এরপর স্ট্যাসির বাবা ড্যারেনের সঙ্গে যোগাযোগ হয় ড্রুয়ারির। এরপর সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার একটা কিডনি সংস্থাপন করা হয় স্ট্যাসির দেহে। এভাবে নিশ্চিত মৃত্যু থেকে জীবনের আলো ফিরে পায় মেয়েটি। ড্রুয়ারি ঠিক সময়ে এগিয়ে না এলে ওর বাঁচার কোনো আশাই ছিল না। কারণ পরিবারের সদস্য বা বন্ধুবান্ধব কারোর সঙ্গে ওর কিডনি ম্যাচ করছিল না। টানা তিনটা বছর কিডনি জটিলতায় ভোগার পর সবাই যখন আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন, তখনই ড্রুয়ারি এসে নতুন জীবন দিলেন স্ট্যাসিকে।
লুইস ড্রুয়ারি যখন তার কিডনি দানের সিদ্ধান্তটা নিলেন তখন লোকে বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে, অচেনা কারো জন্য তিনি এমন আত্মত্যাগ করতে যাচ্ছেন। ‘লোকে আমার কাছে জানতে চেয়েছে, কাজটা আমি পরিবারের কারো জন্য বা কোনো বন্ধুর জন্য করতে যাচ্ছি কিনা। যখন আমি তাদের বলতাম যে পুরোপুরি অচেনা অজানা একজনের জন্য এ-কাজ করতে যাচ্ছি আমি, তখন তারা সবাই হতবাক। ’
লুইস ড্রুয়ারি প্রমাণ করলেন, ভালোবাসা, মমত্ববোধ আর নি:স্বার্থ ত্যাগের মহিমা আজও রয়ে গেছে পৃথিবীতে। ‘মানুষ মানুষের জন্য’---এই কথা মিথ্যে নয় মোটে!
বাংলাদেশ সময়: ০৩১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৫
জেএম