ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

ভবনের ছাদে গগণচুম্বি বটগাছ!

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৫
ভবনের ছাদে গগণচুম্বি বটগাছ! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সাধারণত পুরাতন ভবনের দেয়াল, ছাদে বা ইট-সুরকির কোনো স্থাপনায় হরেক রকমের আগাছা বা পরগাছা দেখা যায়। আর তা যদি আকাশচুম্বি বটগাছের রুপ নেয়, তাহলে নিশ্চয় সেটা অবাক করা বিষয়ই বটে।


 
রাজধানী ঢাকার খুব ব্যস্ত এলাকাতেই এমন এক পরিত্যক্ত ভবনে ‘বিস্ময় গাছের’ খোঁজ পাওযা গেছে। প্রায় একশ বছরের পুরোনো ভবনটির ছাদে দেখা মিলেছে বেশ কটি বট গাছ। যেন ঠাঁই দাড়িয়ে রাজধানীকেই উঁকি মেরে দেখছে গাছগুলো। দূর থেকে দেখে মনে হবে ভবনটিকে আঁকড়ে ধরে বেচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে গাছগুলো।
 
ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডের শেষ মাথায় একটি চায়ের স্টল। অন্যস্টলগুলোর তুলনায় এ স্টলটা বেশ নিরিবিলিই বলা চলে। খুব বেশি ভীড় নেই আর বসে ‘চা-টা’ পান করা যাবে বলে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওখানেই বসা গেল। উল্টোদিকে তাকাতেই চোখে পড়লো একটি একতলা পরিত্যক্ত ভবন (৭৩/১)। এ পথে আগে অনেক বার যাওয়া আসা হলেও কখনো যা চোখে পড়েনি।
 
অনেকটা হলদে রঙ্গের দেয়াল। প্রাচীর ঘেরা ভবনের চারপাশে নানা রকম গাছ, আগাছা বা জংলী গাছে ভরপুর। দেয়ালের পলেস্তারা কোথাও কোথাও খসে পড়েছে। শ্যাওলা আস্তরণ যেন মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়াকেই সাক্ষ্য দিচ্ছে অথবা কালের সাক্ষ্য বহন করছে।
 
হঠাৎ ছাদের দিকে তাকাতেই দু-তিনেক আকাশচুম্বি গাছ চোখে পড়লো। কৌতুহল মেটাতে চা খাওয়া শেষে ভবনের গেটের কাছে গিয়েও বোঝা গেল না কিছু্। অগ্যতা গেটটা খোলার অপেক্ষায় থাকার সিদ্ধান্তই নেওয়া হলো।
 
মিনিট দশেক পরে প্রায় বৃদ্ধ আবু বকর সিদ্দিক এলেন। তিনি গেট খুলে ভেতরে প্রবেশ করতেই জানতে চাওয়া হলো-ওগুলো কী গাছ? দেখার জন্য ভেতরে ঢোকা যাবে? বললেন-আসেন। ভেতরে ঢুকে বোঝা গেল-তিনটি বট গাছ দিব্যি ভবনটির ছাদে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এছাড়া নানা রকম পরগাছা আর গাছগাছালিতে ভরে গেছে বাড়ির আঙ্গিনা ও ছাদ। ক্রংক্রিটের এ শহরে যেন এক টুকরো গ্রাম।
 
আবু বকরের কাছেও ওই গাছগুলো এক বিস্ময়। তার ভাষ্য অনুযায়ী, প্রাণে বেঁচে থাকার কত আঁকুতি। ছাদের ওপর কিভাবেই গাছের বীজ এলো, আর কিভাবেই সে গাছ গজিয়ে বড় হতে হতে এতো বড় হলো-সে ভাবনাতেও মাঝে-মধ্যে রহস্য খুঁজেন তিনি।
 
আবু বকর এই বাড়ির কেয়ারটেকার। তিনি জানান, আবুল কাশেম নামে এক ভদ্রলোক এই ভবনে এক সময় বসবাস করতেন। খুব নামকরা ভিডিওগ্রাফার ছিলেন। অনেক বছর আগেই তিনি মারা গেছেন। বর্তমানে তার ছেলেরাই ভবনটির পেছনে আরেকটি সুউচ্চ ভবন তুলে বসবাস করছেন।
 
ভবনের গেটে টাঙানো সাইনবোর্ড থেকে জানা গেল-বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা কমোডর ইমদাদুল ইসলাম এ সম্পত্তির মালিক।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৫
ইইউডি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।