ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

নার্সারিগুলোতে বাড়ছে বিদেশি গাছের চাহিদা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৬
নার্সারিগুলোতে বাড়ছে বিদেশি গাছের চাহিদা ছবি-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: নগরজীবনেও সৌখিন মানুষের ঘরে মেলে সবুজ-শীতল ছায়া। স্বল্প পরিসরেও নানারকম গাছ লাগিয়ে ঘর সাজান অনেকে।

কিন্তু শহুরে বাসা-বাড়ির বারান্দা বা ছাদে দেশি গাছের আনাগোনা খুব কম। কয়েক বছর আগেও বাড়ির ছাদে শোভা পেতো গোলাপ, বেলী, হাসনাহেনা, আমের কলম চারাসহ আরও অনেক দেশি গাছ। কিন্তু বর্তমানে বাড়ির বারান্দা বা ছাদে দেশি গাছের স্থলে জায়গা করে নিয়েছে অর্কিড, মানিপ্ল্যান্টস, বিভিন্ন রকমের পাম গাছ, ঝাউ,  ক্লাক্স, বনসাই ইত্যাদি।

শহুরে মানুষের রুচির এ পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে রাজধানীর নতুনবাজার বাসস্ট্যান্ডের দু’টি নার্সারিতে ঢুঁ মেরে জানা গেলো, বিদেশি গাছ বেশি বিক্রি হয়।

নতুনবাজারের রওশন আরা গার্ডেনের বয়স পাঁচ বছর। নার্সারির এক কর্মী রাশেদ জানান, তাদের সংগ্রহে বিদেশি গাছ বেশি। গ্রাহকরাও এগুলো বেশি চায়।

এখানে থাইল্যান্ড, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন গাছ পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে রয়েছে- বেগুনিয়া (থাইল্যান্ড), গোলগাছ, ক্যাকটাস, সিলভারডাস, অ্যালম্যান্ডা, মর্নিংগ্লোরি, ক্লাক্স ইত্যাদি।  

এসব বিদেশি গাছের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে রাশেদ বলেন, দেশির তুলনায় বিদেশি গাছের দাম বেশি। আনতে খরচ লাগে, তাই দামও বেশি।

কিন্তু দাম বেশি হওয়ার পরও এগুলোর চাহিদা বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, বিদেশি গাছগুলো আনকমন। দেশিগুলো সহজে পাওয়া যায়। সেগুলো যে যার সুবিধামতো কেনে, লাগায়।

নিজেদের সংগ্রহ নিয়ে রাশেদ বলেন, দেশি গাছের মধ্যে তাদের ব্যতিক্রম কালেকশন নীলফুনিয়া। নীল ফুল হয়। আর মাধবীলতা, জবা, কাঠগোলাপ, বাগানবিলাসের দেশি-বিদেশি উভয় প্রজাতি রয়েছে এখানে।

রওশন আরা গার্ডেনের পাশেই রয়েছে অভি গার্ডেন নামে আরেক নার্সারি। রাশেদের মতো অভি গার্ডেনের মালিক মোহাম্মাদ নিরব হোসেনও একই কথা বললেন, বিদেশি গাছ খুব চলে।

অভি গার্ডেনে ভারতীয় গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে- নলিনা পাম, বনসাই, ফিঙ্গার প্ল্যান্ট, রোসালিয়া। থাই গাছের মধ্যে- অ্যালথোরিয়াম, প্যান্টাস, অর্কিড, লুটিয়া, স্থলপদ্ম, কাঠগোলাপ। রয়েছে কানাডিয়ান নাগেশ্বরী ও আমেরিকান পিঙ্গরা। পামের মধ্যেও বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে- রেড পাম, রেক্সনা পাম, অ্যাজালিয়া, ক্যামেলিয়া, বোতলব্রাশ।  

নিরব হোসেন জানান, দেশি ফুলগাছের মধ্যে নতুন তেমন কিছু নেই। কামিনী, হাসনাহেনা, গন্ধরাজ এগুলো যা রয়েছে তারও বিদেশি জাতেরটাই বেশি চলে। কারণ, বিদেশি প্রজাতিতে সারাবছর ফুল থাকে। আমাদের গুলোর মতো সিজনাল না। আবার বিদেশি জাতের এসব গাছের আকারও ছোট ছোট হয়। বাড়ির বারান্দায় বা ছাদে লাগানো সহজ, জায়গা কম লাগে।

বিদেশি গাছের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় কোনগুলো তা জানতে চাইলে তিনি বলেন- এরিকা পাম, চায়না জবা, ক্যাকটাস, প্যান্টাস, গন্ধরাজ, মানিপ্ল্যান্ট, অর্কিড, গোল্ডেন ঝাউ ইত্যাদি বেশি বিক্রি হয়। বিভিন্ন দামে বিক্রি হয় এগুলো। বিভিন্ন প্রকার পামগাছের দাম- ১শ থেকে এক হাজার, প্যান্টাসের দাম ২শ থেকে ৮শ, গন্ধরাজ ১শ থেকে এক হাজার আর শ্যাওরা তিন হাজার পর্যন্ত রয়েছে।

নতুনবাজার ছাড়াও রাজধানীর বারিধারা, তিনশো ফুটসহ বিভিন্ন জায়গার নার্সারি ঘুরে দেখা মেলে এমনই চিত্রের।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৬
এসএমএন/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।