নেপালি বংশোদ্ভুত কিশোর ডরিও লোপেজ অর্জন করেছেন অনলাইনে কেনা-বেচার সর্বোচ্চ পণ্য বিক্রেতার খেতাব। ব্রিটেনের ‘ই-বে’ সাইটের মাধ্যমে লোপেজ সর্বোচ্চ পণ্য বিক্রি করেছেন।
নেপালি ছেলেটির নাম সুদীপ গৌতম। পরে নাম বদলে হয় ডরিও লোপেজ। এ নামেই এখন সে পরিচিত। লোপেজ ২০০২ সালে মাকে নিয়ে লন্ডনে যায়। বাবা সেখানে ছিলেন আগে থেকেই। তবে লন্ডনের উদ্দেশে পাড়ি জমানোর আগেই কাঠমান্ডুতে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করে সুদীপ (বর্তমানে ডরিও)। তখন তার বয়স মাত্র ১৩। লন্ডনে ডরিও অনলাইন ব্যবসার মূল পণ্য হয়ে ওঠে মোবাইল ফোন সামগ্রী। ব্যবসা জমে উঠলে গড়ে তোলে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান। যেখানে এখন কর্মী সংখ্যা ১৩ জন। ধারনা করা হচ্ছে চলতি বছর শেষে তার ব্যবসার মূল্য গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৩ মিলিয়ন পাউন্ড।
‘ই-বে’ এর একজন মুখপাত্র লোপেজের কৃতিত্বের কথা নিশ্চিত করেছেন। তীব্র প্রতিযোগিতা থাকার পরও এই সফলতা এবং ৫ বছরের কম সময়ে লোপেজের বিক্রিত পণ্যের পরিমান ৬ লাখেরও বেশি। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লোপেজ বলেন, ‘১৩ বছর বয়সে আমি মায়ের কাছে মিথ্যা কথা বলে টাকা চাই। মা তার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সম্মতি দেন। মিথ্যা কথা বলতে হয়েছিল; কারণ যদি ব্যবসার কথা বলতাম; তাহলে তিনি আমাকে ক্রেডিট কার্ড দিতে রাজি হতেন না। যাইহোক, ২০০৪ সালে মোবাইল সিম কার্ড ব্যবসা শুরুর জন্য সেই অর্থই যথেষ্ট ছিল। ওই সময়ে সিম কার্ডের মূল্য ছিল ১০ পাউন্ড। ’
বর্তমানে লোপেজের প্রতিষ্ঠান থেকে ২ হাজারের বেশি ধরনের পণ্য প্রতিদিন বিক্রি হয় ই-বে’র মাধ্যমে। এছাড়া লন্ডনে ম্যাজিক স্টোরে আরো পণ্য সামগ্রী আছে। গ্রাহকদের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের প্রতি শুরু থেকেই আগ্রহ থাকায় এ ব্যবসা জমজমাট হয়েছে, মন্তব্য লোপেজের।
গত বছরের মাঝামাঝিতে তার ব্যবসা সফল পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। শীর্ষ বিক্রেতার স্থানটি লোপেজের জন্য খুবই আনন্দের। ২০০৯ সাল থেকে তার ব্যবসা দ্রুতগতিতে এগুতে থাকে।
সফল হওয়ার কথা বলতে গিয়ে লোপেজ বলেন, ‘সারাদিন কাজ করার পর অফিসেই ঘুমিয়েছি। একদিন পুরো সকাল ঘুমালে আবার ঘুম থেকে উঠেই কাজে নেমে পড়েছি। গ্রাহকের চাহিদার দিকটি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শুরু থেকেই। যত দ্রুত ও কার্যকর সেবা নিশ্চিত করা যায় ততই গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হয়। সেটার জন্য অনেক শ্রমও দিতে হয়েছে। ’
লোপেজের নিজ দেশে কিছু করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের একজন বলেছেন, ‘নেপালে ঝুঁকি নেওয়ার মতো কোনো পথ খোলা নেই। কারণ সেখানকার পোস্টাল পদ্ধতি খুবই নাজুক। এছাড়া নেপালে কম্পিউটার ব্যবহারকারীর সংখ্যাও কম। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা অর্থ। প্রচুর অর্থের দরকার; সেইসাথে দূরত্বের বিষয়তো আছেই।
তারপরও লোপেজের বহুদিনের পরিকল্পনা নিজ দেশে কিছু করার। ফেসবুক অথবা ট্ইুটারের মতো ভিন্ন নতুন সাইট চালু করার ইচ্ছার কথাও জানালো ডরিও লোপেজ।