ব্রিটেনের বাঙালি অভিবাসী এক তরুণ বিশ্বনন্দিত এমসিসি ক্লাবের একাদশে স্থান করে নেওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। নাম হচ্ছে দীপায়ণ পাল দ্বীপ।
তিন বছরে বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড় হিসেবে সুনাম এবং উইসডেন সিটি কাপ টুর্নামেন্টে দ্বীপের ধারাবাহিক অলরাউন্ড নৈপুণ্যের ফলে তিনি এমসিসি কর্তাদের নজরে পড়েন। ১৮ সেপ্টেম্বর ডব্লিউসিসি লেস্টার এবং লন্ডন একাদশের যৌথ দলের সাথে এমসিসি ইয়ং ক্রিকেটার্সদের ম্যাচে বোলিং-ফিল্ডিং-এ কৃতিত্বের জন্যই এমসিসির প্রধান কোচ মার্ক অ্যালেন তাকে এক বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দেন।
লেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্লাবে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ শেষে এমসিসির প্রধান কোচ মার্ক অ্যালেইন দ্বীপকে আনুষ্ঠানিকভাবে এমসিসি ইয়ং ক্রিকেটার হিসেবে নির্বাচিত করার ঘোষণা দেন। টি-টুয়েন্টি’র ওই ম্যাচটি মূলত আয়োজন করা হয়েছিল এমসিসি ক্লাবে একজন অলরাউন্ডার ক্রিকেটার নিয়োগের জন্য।
ম্যাচে এমসিসি’র ইয়ং ক্রিকেটার্সদের বিরুদ্ধে দ্বীপ চার ওভার বোলিং করে একটি মেডেন ওভারসহ ১০ রানের বিনিময়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট লাভ করার পাশাপাশি চমৎকার ফিল্ডিং নৈপুন্য প্রদর্শন করেন। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হওয়ায় দ্বীপের ওই ম্যাচে ব্যাটিং করার সুযোগ হয়ে উঠেনি।
দ্বীপকে এমসিসি’র ইয়ং ক্রিকেটার্স নির্বাচিত করার ঘোষণা দিতে গিয়ে মার্ক অ্যালেইন বলেন, ‘শুধু আজকের ম্যাচে নয়, উইসডেন সিটি কাপ টুর্নামেন্টের পুরো প্রতিযোগিতায় সে আমাদের সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে এবং পুরোটা প্রতিযোগিতায় সে ধারাবাহিক নৈপুন্য প্রদর্শন করেছে। ’
মার্ক আরও জানান, দলের ভারসাম্যের জন্য যেমন খেলোয়াড় তারা খুঁজছিলেন, ঠিক তেমন খেলোয়াড়ই হচ্ছে দ্বীপ।
এমসিসির নিজস্ব গ্রাউন্ড লর্ডসে ২১ সেপ্টেম্বর এমসিসি আয়োজিত একটি চ্যারিটি ম্যাচে ক্রস এ্যারো দলের পক্ষে খেলে দ্বীপ ব্যক্তিগত ১০৯ রান সংগ্রহ করার পাশাপাশি পাঁচটি উইকেট নেন।
বাংলানিউজকে দ্বীপ জানালেন, এমএমসি ইয়ং ক্রিকেটার্স হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার ফলে তিনি এখন থেকে ইংল্যান্ড সফরে আসা বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট দল যখন লর্ডসে ম্যাচ খেলবে; তখন তাদের নেট প্র্যাকটিসের সময় বোলিং করবেন। মাত্র কিছুদিন আগে ভারত দলের ইংল্যান্ড সফরের সময় ওভালে নেট প্র্যাকটিসে বোলিং করেছিলেন। বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান শচিন টেন্ডুলকারের নেট প্র্যাকটিসের সময় বোলিং করার মধুর স্মৃতি রয়েছে।
দ্বীপ সিলেটের বিশিষ্ট সাংবাদিক অজয় পালের দ্বিতীয় পুত্র। অভিবাসী হিসেবে তিনি পিতার সাথে বেশ কয়েক বছর আগে ব্রিটেন যান। তিনি টাওয়ার হ্যামলেট এলাকার স্যার জন কাস স্কুল থেকে জিসিএসি এবং এ লেভেল শেষ করেছেন। দ্বীপ টাওয়ার হ্যামলেটস ডিস্ট্রিক্টয়ের জুনিয়ার লেভেলে ভালো খেলার সুবাদে লন্ডন স্কুল ক্রিকেট এসোসিয়েশন এবং মিডলসেক্স কাউন্টি ক্লাবের একাডেমি লেভেলে খেলার সুযোগ লাভ করেন।
তিনি ক্লাব ক্রিকেটে কেন্ট প্রিমিয়ার লীগের ব্ল্যাকহিথ ক্লাবে খেলছেন এবং ২০০৯ সালে ক্লাবের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। সিলেট শহরে বেড়ে উঠা দ্বীপ স্কুল ক্রিকেট ছাড়াও সিলেট জেলা ও বিভাগীয় দলের পক্ষে অনুর্ধ ১৩ ও অনুর্ধ ১৬ ক্রিকেটে অংশ নেন। ইংল্যান্ড দলের পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখছেন কিনা জানতে চাইলে দ্বীপ বলেন, ‘আমি বাঙালি, বাংলাদেশের সন্তান। সুযোগ পেলে অবশ্যই বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলব। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১