বাবুই ও টুনটুনি পাখি গাছের পাতা সেলাই করে যে বাসা বানায় তা মানুষের কাছে সবসময়ই এক বিস্ময়ের ব্যাপার। অনেক পাখি আবার খড়কুটো দিয়ে এমনভাবে বাসা তৈরি করে, প্রবল বৃষ্টিতেও ভেতরে পানি ঢোকে না।
কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে, এ শিল্পবুদ্ধি পাখিরা প্রাকৃতিকভাবে পায় না, বরং অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এরা ধীরে ধীরে শিখে নেয়।
সাউদার্ন মাস্ক ওয়েভার নামে এক প্রজাতির পাখির বাসা তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে বতসোয়ানাতে রেকর্ড করা একটি প্রামাণ্যচিত্র বিশ্লেষণ করে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন। গবেষণাটি করেছেন এডিনবার্গ, গ্লাসগো এবং সেন্ট অ্যান্ড্রুস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। এই গবেষণাটি ‘বিহ্যাভিওরাল প্রসেসেস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকরা রঙিন এই পাখিটিকে বেছে নিয়েছেন, কারণ একই ঋতুতে প্রতিটি পাখি আলাদাভাবে খুবই সুন্দর ও জটিল সব বাসা তৈরি করে।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাট্রিক ওয়ালশ বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, এদের বাসা তৈরির ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার একটা স্পষ্ট ভূমিকা রয়েছে। ’
এই প্রজাতির প্রতিটি পাখির বাসার নকশা ভিন্ন ভিন্ন। কিছু পাখি বাসা বানায় বাম থেকে ডানে, আবার কেউ বানায় ডান থেকে বামে। এই পাখিরা যত অভিজ্ঞ হয়ে ওঠে, বাসা তৈরির সময় তাদের ঠোঁট থেকে শুকনো ঘাস তত কম পড়ে যায়।
প্যাট্রিক ওয়ালশ আরও বলেন, ‘পাখির বাসা তৈরির প্রক্রিয়া যদি সহজাতই হতো, তাহলে একই প্রজাতির পাখি একই ধরনের বাসা তৈরি করত। কিন্তু এদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিষয়টি সেরকম নয়। ’
সাউদার্ন মাস্ক ওয়েভার পাখিগুলোর এই আচরণ প্রমাণ করে, বাসা তৈরির কৌশলে অভিজ্ঞতার বড় ভূমিকা রয়েছে।
গবেষণার ফলাফলে, অনুশীলনই কাউকে দক্ষ করে তোলে-- মানুষের মতো পাখিদের ক্ষেত্রেও এই প্রবাদটি খাটে।
বাংলাদেশ সময় : ১৮০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১১