সমুদ্রে ঘুরতে কার না ভাল লাগে। পাশাপাশি যদি হয় আবার সমুদ্র ও মৎস্য সম্পদ নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ! তাহলে তো কথাই নেই।
বিশ্ব সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গেই শিক্ষার ক্ষেত্রগুলো প্রসারিত হচ্ছে। সাহিত্য কিংবা দর্শনের মতো বিষয়ের সমান্তরালভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গবেষকদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নতুন নতুন বিষয়। তেমনই একটি বিষয় ‘সমুদ্র বিজ্ঞান ও মৎস্যবিদ্যা’।
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সমুদ্র ও মৎস্যবিদ্যা’ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনিস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ বিভাগ হিসেবে যাত্রা শুরু হয় ১৯৭১ সালে। তখন বিভাগটি চালু হয়েছিল ‘সামুদ্রিক জীববিদ্যা এবং সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ’ নামে। কানাডিয় প্রযুক্তির সহায়তায় প্রোগ্রামের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিভাগটির কার্যক্রম পরিচালনা করা হত। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে বিভাগটিকে ইনিস্টিটিউটে রুপান্তরিত হয়।
যা পড়ানো হয়:
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তন করা হচ্ছে বিভিন্ন কোর্সের সিলেবাস। চার বছরের সম্মান কোর্সে মোট ৪০০০ নম্বর এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ৮০০ নম্বরের বৈচিত্র্য ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পড়ানো হয়ে থাকে। বিষয়গুলোর মধ্যে মেরিন ইনভার্টিবেস, ফিজিক্যাল অশেইনগ্রাফি, অ্যাকুয়া কালচার, মেরিন ইকোলজি, ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট, ফিশারিজ রিসোর্সেস, অর্থনীতি, কম্পিউটার সায়েন্স অন্যতম।
বিদেশে পড়ার সুযোগ:
ইনিস্টিটিউটের পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল আজম খান বাংলানিউজকে জানান, ‘এ বিষয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদেরই বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ বেশি। এখান থেকে যারা ভাল ফল করেন তারা নরওয়ের নোরাড, ডেনমার্কের ‘ইরাসমাস’ বৃত্তির সুযোগ পেয়ে থাকে। ’
এ ছাড়াও থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনিস্টিটিউট অব টেকনোলজি, যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম, সুইডেনসহ বিভিন্ন দেশে বৃত্তি নিয়ে এমএস এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পেয়ে থাকে বলেও তিনি জানান।
চাকরির বাজার:
পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ এই বাংলাদেশের প্রায় ১.২৫ কোটি মানুষের জীবিকা নির্বাহ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। উৎপাদনের উৎস বিবেচনায় এ খাতেই অর্জিত হয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা।
গতানুগতিক চাকরির বাইরে পরিবেশ অধিদফতর, আবহাওয়া অধিদফতরের ফিশারিজ শাখা, ইউএনডিপিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
ভর্তির যোগ্যতা:
এ ইনিস্টিটিউটের অধীনে ( জি-ইউনিট) সম্মান কোর্সে ভর্তির জন্য ভর্তি প্রার্থীকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে। এছাড়াও গণিত এবং জীববিজ্ঞান বিষয়টি এইচএসসিতে পড়তে হবে। এছাড়াও ভর্তির আবেদনের জন্য এসএসসি, দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয় বাদে ন্যূনতম জিপিএ ৭ পয়েন্ট থাকতে হবে। তবে কোন পরীক্ষায় জিপিএ-৩ এর নিচে নয়।
ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে মোবাইলে ভর্তি ফরম রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। চলবে আগামী চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৭ নভেম্বর বিকেলে।
বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (www.cu.ac.bd) -এ পাওয়া যাবে। এছাড়াও যে কোন প্রয়োজনে হেল্প লাইনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নিম্নের নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে- ০১৫৫৫ ৫৫৫ ১৪১।