বৃদ্ধ ওই হস্তশিল্পীর কাছে গিয়ে কয়েকবার জিজ্ঞেস করি, ও দাদু কত বছর ঝুড়ি তৈরির কাজ করছেন? তিনি হাসিমুখে উত্তর দিলেন, ‘ছোটবেলা থেকে করছি বাপু।
ফিচার
হতাশায় দিন কাটছে বাঁশশিল্পের কারিগরদের
ঢাকা: বৃদ্ধ সুরুজ ব্যাপারির বয়স ৯৭ ছুইঁ ছুইঁ। কানে কম শোনেন কিন্ত তার চোখের নজর এখনও তীক্ষ্ণ। শীতের সকালে রোদে বসে আপন মনে এ বয়সেও ঝুড়ি তৈরি করছেন দ্রুতগতিতে।
তিনি আরও জানান, কয়েক বছর আগেও নরসিংদীর বেলাবো, কায়না, উবাগা, বরাট ও বটমা গ্রামে প্রায় ১ লাখ লোক এ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কেউ বাঁশ বিক্রি করতেন, কেউ বাঁশ কাটার কন্ট্রাক্ট নিতেন, কেউ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পরে সবার থেকে পণ্যগুলো কিনে বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু এখন এ কাজ করে নিজেই বাঁচা মুশকিল। কথা হয় স্কুলপড়ুয়া সিনথিয়ার সঙ্গে, কিসে পড়ো জানাতে চাইলে সে বলে, আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। সিনথিয়া লেখাপড়ার পাশাপাশি ঝুড়ি বানাতে বাবা-মাকে সাহায্য করে। সে তার বাবা-মাকে ঝুড়ি বানাতে দেখে সব রপ্ত করে নিয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানায়। কয়েক বছর আগেও সৌদি আরব, কুয়েত, দুবাই, কাতার, চীন, লন্ডনসহ অন্য দেশে কাঁচামাল হিসেবে এ পণ্য রফতানি হতো। তখন কাঁচামালগুলো তাজা থাকতো পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সমস্যায় পড়ে যান এই পেশার কারিগররা। কেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এ শিল্প তা জানে না খেটে খাওয়া মানুষগুলো। প্রয়োজনীয় অর্থ ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে জেলার ঐতিহ্যবাহী বাঁশশিল্প। অনেকেই তাদের পৈত্রিক পেশা ছেড়ে অন্য কাজে যোগ দিচ্ছেন। শুধু বেলাবো, কায়না ও উবাগা গ্রামের মানুষ চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বাপ-দাদার পেশাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৮
এএটি/আরআর