নতুন বছরের সূচনায় সবার মনে থাকে জীবনের জরা-অন্ধকার ঝেড়ে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। আর সেই লক্ষ্যে সবার মনে অফুরন্ত জীবনীশক্তি নিয়ে আসুক বৈশাখের রুদ্র তাপস বাতাস।
মোঘল আমলে সরকারি হিসাব-নিকাশ রাখা হতো হিজরি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। কিন্তু হিজরি তারিখ নির্ধারিত হয় চাঁদের হিসাব অনুযায়ী। এদিকে কৃষিনির্ভরশীল ভারতীয় উপমহাদেশের সারা বছরের কৃষিকাজ চাঁদের সঙ্গে তেমন সম্পৃক্ত না হওয়ায় কৃষকেরা তখন খাজনা প্রদানে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতেন।
সঠিক সময়ে নির্ভেজাল উপায়ে খাজনা আদায়ের জন্যে মোঘল সম্রাট আকবর তার সভার একজন বিশিষ্ট গুণীজন ফাতেউল্লাহ্ সিরাজীকে দিয়ে হিজরি পঞ্জিকা ও বাংলা পঞ্জিকার সমন্বয়ে নতুন একটি পঞ্জিকার প্রচলন করেন যা ‘ফসলি সন’ নামে ১৫৮৪ সালের মার্চ মাসে প্রবর্তিত হয়। প্রকৃতপক্ষে ১৫৫৬ সালে সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহণের দিনটি থেকেই বঙ্গাব্দ বা বাংলা বছরের শুরু হিসেবে বিবেচিত হয়।
সম্রাট আকবরের আমল থেকেই বাংলা বছরের প্রথম দিনটি উৎসবমুখর উদযাপনের মধ্যদিয়ে পালিত হয়ে আসছে। চৈত্র সংক্রান্তির সূর্য ডুবে যাওয়ার আগেই পুরনো অর্থবছরের সব হিসাব চুকিয়ে ফেলার নিয়ম চালু তখন থেকেই। আর বছরের প্রথম দিন মহাজন, ব্যবসায়ীরা ক্রেতা বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করে মিষ্টিমুখ করানোর মাধ্যমে সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবসায়িক লেনদেনের পুনঃসূচনা করতে খোলেন নতুন ‘হালখাতা’। এভাবেই সূত্রপাত ঘটে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের।
এবারের বর্ষবরণ উপলক্ষে উৎসবে মেতে উঠবে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে অবস্থানরত বাঙালিরা। দেশব্যাপী থাকবে নানা আয়োজন। রাজধানীর রমনা বটমূল থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাম্য মেলায় প্রাণের উৎসবে যোগ দেবে সবাই। আর বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে সর্বজনীন বাঙালির এই প্রাণের উৎসবের প্রতিটি আপডেট পেতে থাকুন বাংলানিউজের সঙ্গে। বাংলানিউজ পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা, শুভকামনা।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৮
এনএইচটি/এএ