ঢাকা: ফুলের নাম উল্টচন্ডাল বা অগ্নিশিখা। এই ফুলটির বৈজ্ঞানিক নাম: Gloriosa superba)।
শুধু কি মানুষ, নিজের সৌন্দর্যে প্রজাপতি আর ভ্রমরকে আকর্ষণ করে এই ফুল বাড়িয়ে তোলে প্রকৃতির সৌন্দর্য। তাইতো প্রকৃতিও তার প্রেমে মুগ্ধ হয়ে তাকে রাঙিয়ে তুলেছে আগুনের সাবলীলতায়। সব সবুজের ভেতর লাল আর হলুদের আগুন রঙ যেন হার মানায় এ শহরের কৃষ্ণচূড়ার আবেদনকেও।
অগ্নিশিখা ফুলটি রাজধানীতে সচরারাচর দেখা না গেলেও গ্রামাঞ্চলে দেখা মেলে প্রায়শই। এছাড়া লতা জাতীয় এই ফুলটি দেশের টাঙ্গাইল, গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার জঙ্গলে জন্মে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের বাগানে আর গুলশানের কয়েকটি অভিজাত বাড়ির দেওয়ালের মাঝেমধ্যে দেখা যায় ফুলটি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেষজ ব্যবহারের জন্য মাত্রাতিরিক্ত আহরণের কারণে লতাটি এখন বনের পরিবেশে কম দেখা যায়। তবে অনেকেই এর ফুলের সৌন্দর্যের জন্য শখ করে নিজের বাড়িতে বা বাগানের এক কোণে জায়গা করে দেয়।
এ প্রসঙ্গে রাজধানীর গুলশান এলাকার একজন ফুলপ্রেমী জেসমিন শাহিন বলেন, অগ্নিশিখা ফুলটা বেশ দারুণ! আমার গাছটা অনেক উঁচুতে। লতানো হওয়ায় বাগানের মেহেদী গাছ বেয়ে উঠে গেছে। ফুলগুলো এত ওপরে, ছবিও ভালোমতো তুলতে পারি না। তবে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সবাইকে। যে ব্যক্তিই এই ফুল দেখুক না কেন, প্রশংসা করবেই।
লতানো আর বনে জঙ্গলে থাকে বলে এই ফুলের যে কদর নেই, তা কিন্তু নয়। উলটচন্ডাল বা অগ্নিশিখা ফুলের কদর বিশ্বব্যাপী। ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের জাতীয় ফুলও এটি। তবে তার চেয়ে বড় কথা হলো, এটি জিম্বাবুয়ের জাতীয় ফুল।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল হারবেরিয়ামের তথ্য মতে, এই ফুলের গাছ ৬ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। । ফুলের পাঁপড়ি গুলি দেখতে লাগে আগুনের শিখার মত। তাই এ ফুলের আরেক নাম অগ্নিশিখা। ফুল একক এবং ৩ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা। মঞ্জরিতে এক বা একাধিক কুঞ্চিত দলযুক্ত গন্ধহীন ফুল ফোটে। ফুলে পাপড়ি থাকে ছয়টি। এই গাছের কিছু অংশ বিষাক্ত হলেও নানান ভেষজ গুণে গুণান্বিত।
বিভিন্ন সময় নগরের সৌন্দর্য বর্ধনে প্রধান সড়ক আর পার্কগুলোতে লাগানো হয় নানা ধরনের ফুলের গাছ। তারপর তার পরিচর্যা হয়, বিভিন্ন মৌসুমে ফুল ধরে এসব গাছে। মানুষ মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করে সেসব ফুলের সৌন্দর্য। তবে বিনা যত্নেই যে প্রকৃতি নিজেকে সাজাতে পারে অপার সৌন্দর্যে, অগ্নিশিখা যেন প্রমাণ রেখে যায় তারই।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২০
এইচএমএস/এএটি