ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

হাতে নোট নিলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০
হাতে নোট নিলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে সংগৃহীত ছবি

ঢাকা: আজকাল অনেকেই ক্লাসরুম থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাগত কাজে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নোট করতে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। কিন্তু আপনার ব্রেইন উপকৃত হবে কাগজ-কলমে নোট নেওয়ার পুরনো পদ্ধতিতেই।

হাতে নোট নিলে স্মৃতিশক্তি ও জ্ঞানের গভীরতা বাড়ে।

কানাডার ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিষয়ক অধ্যাপক হেটি রোয়েসিং তার একটি নিবন্ধে হাতে নোট নিলে স্মৃতিশক্তি বাড়া এবং এর মাধ্যমে কীভাবে মানুষের মস্তিষ্ক উপকৃত হয় সে সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন।

প্রয়োজন হলে আপনি কি নোটবুক এবং কলম হাতে তুলে নেন? নোট বুক ও কলম বেছে নেন বা না নেন, এটা জানুন যে হাতের সরঞ্জাম মানে মস্তিষ্কের সরঞ্জাম। হাতে লেখা নোট মস্তিষ্কে ডাটা সংরক্ষণের শক্তিশালী অস্ত্র এবং তথ্য পুনরুদ্ধার বা স্মরণ করতে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। দ্বিতীয়ত নোটবুকে হাতে নোট করার সময় হাত শক্তিশালী এক্সটারনাল মেমরি স্টোরেজ তৈরি করে।

হাতে নোট নিলে শুধুই লাভ এবং এটি প্রতিটি শিক্ষার্থীর জ্ঞান অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম।

অধ্যাপক হেটি তার নিবন্ধে বলেন, আমরা ডিজিটাল যুগে বাস করছি যেখানে আমাদের নিত্যদিনের কাজের সঙ্গে ডিজিটাল কমিউনিকেশন জড়িত। কিবোর্ডিং বা স্বয়ংক্রিয় কিবোর্ডিং একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। ডিজিটাল যোগাযোগের জন্য এসব  সরঞ্জাম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলো তাদের তাদের স্থানে বিকশিত হতে থাকবে। কিন্তু কাগজ, পেন্সিল বা কলমের মতো কিবোর্ডিং মস্তিষ্কে কোন স্পর্শকাতর প্রতিক্রিয়া সরবরাহ করে না। এখানে হাত-মস্তিষ্ক নিউরোসারকুইট্রি (যেকোন নিউরাল কার্যক্রম পরিচালনার মেকানিজম) সৃষ্টির মূল চাবিকাঠি।

কম্পিউটারের কিবোর্ডে লিখতেও হাতের ব্যবহার আছে কিন্তু সে ব্যবহারটা নির্দিষ্ট কিছু বোতাম টেপা। এটি কাগজ-কলমে হাতের লেখার মতো মস্তিষ্কে ছাপ ফেলতে পারে না।

আপনার কাছে ল্যাপটপ, মোবাইল বা কম্পিউটার দ্রুত ও বেশি কার্যকর মনে হতে পারে। তবে কাগজের নোটবুক এবং কলমকে বেছে নেওয়ার ভালো ও উপযুক্ত কারণ রয়েছে।

গবেষকরা দেখেছেন কিবোর্ডিং এর সাহায্যে নোট নেওয়াটা হুবহু বা অক্ষরে অক্ষরে নোট নেওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত, এটি তথ্য প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তাই এটিকে ‘নন-জেনারেটিভ’ নোট গ্রহণও বলে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাতে নোট নিলে এটি বিভিন্নভাবে মস্তিষ্ককে সম্পৃক্ত করে, এটি বিভিন্নভাবে বিষয়বস্তুর সঙ্গে মস্তিষ্কের মিথস্ক্রিয়া তৈরি করে এবং সার্বিকভাবে জ্ঞানের বা বোঝার গভীরতা বাড়ায়।

নোট গ্রহণটা জ্ঞানের দাবি। হাটে নোট গ্রহণ শেখার বেশ কিছু জনপ্রিয় পদ্ধতি আছে। নোট গ্রহণ শেখার জনপ্রিয় পদ্ধতিগুলোর মধ্যে শিক্ষা বিষয়ক অধ্যাপক ওয়ালটার পাউকের কর্নেল স্টাইল একটি।

ভালো নোট নেওয়াটা নির্ভর করে হাতের দক্ষতা বা ফ্লুয়েন্সির ওপর। হাতের ফ্লুয়েন্সি বলতে স্পষ্টতা এবং গতি দুটোকে এক সঙ্গে বোঝায়। হাতের ফ্লুয়েন্সি আসে বাল্য জীবনে স্কুলে চর্চা এবং নির্দেশনার ওপর। ভালো নোট গ্রহণ শেখার শুরুটা গ্রেড-২ থেকে হতে পারে। নকশা এবং ছবি আঁকাও মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।