অবশেষে পুরনো অধ্যায়কে বিদায় জানিয়ে নতুন শুরু করলেন মার্কাস রাশফোর্ড। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে বার্সেলোনায় এক মৌসুমের ধারে যোগ দিয়েছেন ইংল্যান্ডের এই ফরোয়ার্ড।
রাশফোর্ড বার্সার ইতিহাসে প্রথম ইংলিশ ফুটবলার যিনি গ্যারি লিনেকারের পর কাতালান ক্লাবে নাম লেখালেন। তার আগে ১৯৮৬ সালে লিনেকার খেলেছিলেন বার্সার হয়ে।
‘আমি খুবই উচ্ছ্বসিত। বার্সেলোনা এমন এক ক্লাব, যেখানে মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়। এখানে বড় ট্রফি জেতা যায়। এই ক্লাবের মূল্যবোধ আমার জন্য অনেক কিছু। আমি নিজেকে এখানে বাড়ির মতো অনুভব করছি’—ক্লাবের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন ২৭ বছর বয়সী রাশফোর্ড।
তিনি আরও বলেন, ‘হান্সি ফ্লিকের সঙ্গে কথাবার্তা খুবই ইতিবাচক ছিল। তিনি তরুণ একটি দলকে দারুণভাবে পরিচালনা করেছেন। এবারও আরও ভালো করতে চান—এটাই আমাকে প্রমাণ করে দিয়েছে, এই ক্লাব আসলে কতটা উচ্চাকাঙ্ক্ষী। আমি বার্সেলোনার ফুটবল দর্শন শিখতে মুখিয়ে আছি। ’
বার্সা রাশফোর্ডের পুরো বেতন দেবে, যদিও ফুটবলার নিজে বেতন কম নিতে রাজি হয়েছেন। ইউনাইটেডের বেতন তালিকা থেকে সরে যাওয়ায় ক্লাবটির প্রায় ১৪ থেকে ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় হবে।
ইতোমধ্যে নতুন সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনে নেমেছেন রাশফোর্ড। বৃহস্পতিবার জাপান সফরের দলে তার থাকা প্রায় নিশ্চিত।
২০১৬ সালে অভিষেকের পর থেকে ইউনাইটেডের হয়ে ৪২৬ ম্যাচে ১৩৮ গোল করেছেন তিনি, জিতেছেন পাঁচটি বড় শিরোপা। ক্লাবটির সর্বকালের গোলদাতার তালিকায় তিনি ১৫তম। কিন্তু সবকিছু যেন বদলে যেতে শুরু করে ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে।
ম্যানেজার রুবেন আমোরিম ১৫ ডিসেম্বর ম্যানচেস্টার ডার্বিতে তাকে স্কোয়াড থেকে বাদ দেন। এরপর থেকেই মাঠের বাইরে রাশফোর্ড। আমোরিম প্রকাশ্যেই বলেন, ‘যে প্রতিদিন সর্বোচ্চটা দেয় না, তার চেয়ে আমার গোলকিপিং কোচকে বেঞ্চে বসানো ভালো। ’
এরপর জানুয়ারিতে অ্যাস্টন ভিলায় ধারে যান রাশফোর্ড। সেখান থেকে ইংল্যান্ড দলে ফিরলেও ইউনাইটেডে ফিরে পাননি পুরনো জায়গা। দল ছাড়তে চাওয়া পাঁচ খেলোয়াড়ের একজন ছিলেন তিনি। তাদের আলাদা করে অনুশীলন করানো হয়।
আসলে রাশফোর্ডের ঝামেলা শুরু হয় এরও আগে। ২০২৩ সালে পাঁচ বছরের নতুন চুক্তি করলেও তার পারফরম্যান্স পড়ে যায় একেবারে। আগের মৌসুমে ৩০ গোল করলেও ২০২৩/২৪ মৌসুমে মাত্র ৮ গোল করেছেন ৪৩ ম্যাচে। এর মধ্যে তিনবার ডিসিপ্লিনারি শাস্তিও পান।
তবু ক্লাবটির প্রতি কৃতজ্ঞ রাশফোর্ড বলেন, ‘আমি ইউনাইটেডের প্রতি কৃতজ্ঞ। এটা আমার জীবনের বড় অংশ ছিল। কোনো নেতিবাচক কথা বলার কিছু নেই। ’
বার্সেলোনা নিয়ে তার আশা অনেক বড়, ‘আমি সবচেয়ে বড় ট্রফিগুলো জিততে চাই। বার্সা সেই জায়গা। তারা তরুণ, উচ্চাকাঙ্ক্ষী একটি দল এবং আমি আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে অবদান রাখতে চাই। চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা আমার স্বপ্ন। ’
এমএইচএম