ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

‘গুড বয়’ সুয়ারেজ, বিষণ্ন রুনি

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৪
‘গুড বয়’ সুয়ারেজ, বিষণ্ন রুনি

ময়মনসিংহ: সময়টা ২০১১। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় প্যাট্রিক ইভরা বর্ণবৈষ্যমূলক কথা বলার অভিযোগে বহিষ্কৃত হন।



এরপর ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের এক ম্যাচে চেলসির এক ডিফেন্ডারের হাতে কামড় দিয়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।

১০ ম্যাচ থাকতে হয়েছিল মাঠের বাইরে। এ সবের বাইরেও নানা উদ্ভট কাণ্ডে জড়িয়ে ম্যারাডোনার সাবেক এ মেয়ে বরের নামের পাশে জোটে ‘ব্যাড বয়’ তকমা। তিনি উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজ।

ইনজুরি থেকে ফিরেই বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জোড়া গোল করে ব্রাজিল বিশ্বকাপে দলের দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার সম্ভাবনার আশা বাঁচিয়ে এখন হয়ত সমালোচকদের কাছেও ‘গুড বয়’ হয়ে উঠেছেন তিনি।

পক্ষান্তরে, আন্তজার্তিক ফুটবলে এমনকি বিশ্বকাপে সবসময় দলের জন্য নিষ্প্রভ ইংল্যান্ডের সুপারস্টার ওয়েন রুনি উরুগুয়ের জালে বল জড়ালেও লাতিন আমেরিকার দেশে ফুটবল মহারণের ২০তম আসরে এ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পুরোমাত্রায় পারেননি জ্বলে উঠতে। ব্যর্থ হয়েছেন ৬৬’র সোনামাখা স্মৃতি ফিরিয়ে আনতেও। ঠেকাতে পারেননি নিজ দেশের বিদায়।



গোল করার দক্ষতার জন্য বেশ সমাদৃত লুইস সুয়ারেজ। সর্বোচ্চ ৩১ গোল করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে বর্ষসেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০১০ বিশ্বকাপেও দেখিয়েছিলেন দুর্দান্ত পারফরমেন্স। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বেও সর্বাধিক ১১ গোলের কৃতিত্ব ছিল তার। উরুগুয়েতে তাকে বলায় ‘সোনার ছেলে’।

২০১৩ সালের ডিসেম্বরের দিকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে লিভারপুলের হয়ে প্রথম ফুটবলার হিসেবে টানা ৫ ম্যাচে দুটি করে গোল করে ওই ক্লাবের ইতিহাসে অনন্য রেকর্ডের অধিকারী হন। চলতি বিশ্বকাপে কোস্টারিকার বিপক্ষে ইনজুরির খপ্পরে পড়ে মাঠেই নামতে পারেননি তিনি। সেই ম্যাচে অভাবিতভাবে তার দল হারে ৩-১ গোলে।

সুয়ারেজ যে এ মুহূর্তে বিশ্বের সেরা দু’একজন সেন্টার ফরোয়ার্ডদের মধ্যে একজন, তার প্রমাণ পাওয়া গেল ইংলিশদের সঙ্গে নিজেদের ‘বাঁচা-মরার’ লড়াইয়ে। ডেথ গ্রুপের এ ম্যাচে ৩৯ ও ৭৫ মিনিটে অসাধারণ দুটি গোল করে দলের বিজয় নিশ্চিত করেন উরুগুয়ের এ এক নম্বর স্ট্রাইকার।

রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই সুয়ারেজকে নিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে উরুগুয়েনরা। তাকে মাথার উপর তুলে নাচানাচি করেন সতীর্থরা। খেলা শেষে গ্যালারির দর্শকদের হাত নেড়ে ভালোবাসার জবাব দিচ্ছিলেন এ তারকা খেলোয়াড়। অন্তত তাকে ঘিরেই এখন কোচ অস্কার তাবারেজ ১৯৩০ ও ১৯৫০ সালের মধুর স্মৃতি ফিরিয়ে আনার টার্গেট নিতেই পারেন!

সুয়ারেজ অন্য রকম আনন্দে মেতে উঠলেও বিষণ্ন মনে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইংলিশ তারকা ওয়েন রুনিকে। ইনজুরি আর ফর্মহীনতায় তাকে নিয়ে সমালোচনার কমতি ছিল না। সব বড় ইভেন্টেই তিনি দলকে হতাশ করেন। ঠিকমতো জ্বলে উঠতে পারেননি।

ইতালির বিপক্ষে নিষ্প্রভ রুনি বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উরুগুয়ানদের বিপক্ষে খেলার প্রথমার্ধের ৩১ মিনিটের মাথায় সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। তার হেড গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে। অবশ্য ৭৫ মিনিটের দিকে গোল করে খেলায় সমতা ফিরিয়ে এনেছিলেন তিনিই।

কিন্তু এরপর আর গোল করতে না পেরে দলের সেরা খেলোয়াড় ও মূল ভরসা হিসেবে ব্যর্থতার দায়ভার কাঁধে নিয়ে ব্যর্থ মনোরথে মাঠ ছাড়েন এ ম্যানইউ তারকা।

পারে না ইংলিশরা:
১৯৫৪ সালে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে প্রথম মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড ও উরুগুয়ে। সেই ম্যাচে উরুগুয়ে ৪-২ গোলের ব্যবধানে ইংলিশদের পরাজিত করে। ১৯৬৬ সালে নিজ দেশে উরুগুয়েকে পেয়েও সেই হারের প্রতিশোধ নিতে পারেনি ইংলিশরা। গোলশূণ্যভাবে সেই ম্যাচটি ড্র হয়।

এবারের ব্রাজিল বিশ্বকাপেও সোয়ারেজের উরুগুয়ের কাছে ইংলিশদের হারতে হলো ২-০ গোলের ব্যবধানে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।