ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

দর্শকপ্রিয়তা পাচ্ছে না বিপিএল!

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৬
দর্শকপ্রিয়তা পাচ্ছে না বিপিএল! ছবি: অনিক খান-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রংবাহারি কোন প্রচারণা নেই। ময়মনসিংহে দেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) আবারো মাঠে গড়িয়েছে ঠিকই। কিন্তু প্রচারণার অভাবে জানতেই পারেনি ফুটবলমোদী ভক্তরা। আর এজন্য জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন দায়ী করেছেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান সাইফ গ্লোবাল স্পোর্টসকে। 

ময়মনসিংহ: রংবাহারি কোন প্রচারণা নেই। ময়মনসিংহে দেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) আবারো মাঠে গড়িয়েছে ঠিকই।

কিন্তু প্রচারণার অভাবে জানতেই পারেনি ফুটবলমোদী ভক্তরা। আর এজন্য জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন দায়ী করেছেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান সাইফ গ্লোবাল স্পোর্টসকে।  

নগরীর রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে দর্শক টানতে প্রচারণায় তাদের তোড়জোড় ছিল না বললেই চলে। ফল যা হবার কথা তাই হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহে লিগের দ্বিতীয় পর্বে শেখ জামাল ধানমন্ডি কাব ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি’র মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচে হাতেগুনা দর্শক মাঠে এসেছেন।  

একই সঙ্গে এক সময়কার দর্শক সমর্থনপুষ্ট বড় কাবগুলোও নিজেদের আলোয় জ্বলে উঠতে না পারা, ফুটবলাররা পায়ের কারুকাজ দেখাতে না পারা এবং জেলায় ফুটবল চর্চা না থাকার কারণেও অনেকটাই আকর্ষণ হারাতে বসেছে ঘরোয়া ফুটবলের বড় আসর বিপিএল।  

এমনকি, আকর্ষণীয় পুরস্কারের র‌্যাফেল ড্র ছেড়েও দর্শকপ্রিয়তা পাচ্ছে না বিপিএল। তবে সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিনে শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দেশের জায়ান্ট কাব শেখ রাসেল ও চট্রগ্রাম আবাহনীর মধ্যকার ম্যাচে দর্শক খরা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা।

ময়মনসিংহে বিপিএল’র প্রথম পর্ব শুরু হয়েছিল গত ৫ আগষ্ট। সেই সময় ময়মনসিংহ রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ১২টি ম্যাচ। তখন উদ্বোধনী ম্যাচে রেকর্ড দর্শকের উপস্থিতি তাক লাগিয়ে দেয়ার মতোই ঘটনা ছিল। দেশের ফুটবলের জাগরণের ইঙ্গিতও মিলেছিল তাতে।  

কিন্তু, এরপর থেকেই হতাশার বৃত্তে ঘুরপাক খাবার সময় শুরু। ১৫ হাজার ধারণক্ষমতার গ্যালারিতে কখনো পূর্ব আবার কখনো পশ্চিম প্রান্তে দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি দেখা যায়নি খুব একটা। ওই সময় জেলা প্রশাসন ও ক্রীড়া সংস্থা’র প্রচারণার অবহেলা ও গাফিলতির কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ও ক্রীড়ামোদীরা।  

তবে জেলা ক্রীড়া সংস্থা ওই সময় দাবি করেছিল, চট্রগ্রাম ভেন্যুর চেয়ে ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ফুটবলপ্রেমী দর্শকদের স্ফুলিঙ্গ দেখা গেছে। সেই সময় ‘গোলমেশিনে’ ‘জ্যাম’ থাকার কারণেও দর্শক কম হয়েছিল বলেই দাবি করেছিলেন তারা।  

স্থানীয় রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামের গেটের সামনে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে মাইকে বাজছিল ‘বল বল বল, গলা ছেড়ে বল, লেটস শাউট ফর ফুটবল’ গানটি। টিকিট কেনার জন্য হাঁক দিয়ে যাচ্ছিলেন বিক্রেতারা। কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের টিকিটের জন্য কাড়াকাড়ি নেই।

দর্শক টানতে আকর্ষণীয় পুরস্কারের র‌্যাফেল ড্র ছাড়া হলেও দর্শকরা টিকিট কেটে খেলা দেখতে স্টেডিয়ামমুখী হচ্ছে না। ফলে আবারো এখানে ফুটবলের উত্তেজনায় মেতে উঠার সম্ভাবনাও উবে যায়। মুখ থেকে হাসি হারিয়ে যায় টিকিট বিক্রেতাদের।

স্থানীয় ক্রীড়ামোদীরা বলছেন, জেলায় ফুটবল চর্চা না থাকার কারণেই ফুটবলের প্রতি দিন দিন এখানকার মানুষের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। ঘরোয়া ফুটবলে বড় বড় কাবগুলো রমরমা ফুটবল উপহার দিতে না পারায় ফুটবলের সেই ঐতিহ্যও হারিয়ে গেছে। ফলে ফুটবলের সোনালী অতীতও এখন হয়েছে বিলীন।  

তবে ময়মনসিংহ জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ জাহান ফরিদ বলেন, তিন কারণে  বিপিএল এ দর্শক হয়নি। তার দাবি, ময়মনসিংহে দ্বিতীয় পর্ব শুরুর সপ্তাহখানেক আগে থেকেই প্রচারণা করার দরকার ছিল সাইফ গ্লোবাল স্পোর্টসের।

ম্যাচের আগেরদিন (০৮ নভেম্বর) থেকে নগরীতে মাত্র ৫ থেকে ৬টি ভ্যান নামিয়ে প্রচারণার কাজ করা হয়। তাদের নামমাত্র এ প্রচারণায় বেশিরভাগ দর্শকের কানেই ফুটবল লিগ শুরুর খবর পৌঁছেনি।  

এছাড়া, স্কুল-কলেজে পরীক্ষা, বিপিএল ক্রিকেট আসর শুরু হওয়ায় দর্শকরা স্টেডিয়ামমুখী হচ্ছেন না।  

মোর্শেদ জাহান ফরিদ মনে করেন, দর্শকরা জানলে অবশ্যই মাঠে আসবেন। শুক্রবার ছুটির দিনে নিস্তব্ধতা কাটিয়ে দর্শকের কোলাহলে মুখর হয়ে উঠবে রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘন্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৬
এমএএএম/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।