মেসির কাজিন হিসেবে পরিচিত ম্যাক্সি বিয়ানকুচ্চি ম্যারাডোনার মন্তব্যকে একেবারে ধুয়ে দিলেন। মাদক, মদ্যপানের নেশা থেকে নিজেকে মুক্ত করার জন্য এক সময় লড়াই করা ম্যারাডোনার মন্তব্য বিয়ানকুচ্চির কাছে একরমক ‘অজ্ঞতা’।
মেসির মতো হতে না পারলেও ৩৪ বছর বয়সী বিয়ানকুচ্চি একজন পেশাদার ফুটবলার। প্যারাগুয়ের দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাব রুবিয়ো নু-তে খেলেন তিনি। তাকে ফুটবল বিশ্ব ‘এল প্রিমো দে মেসি’ নামেও চেনে। স্প্যানিশ ভাষার অর্থটি বাংলায় দাঁড়ায়, মেসির চাচাতো ভাই।
বিয়ানকুচ্চি বলেন, ‘মেসির কৃতিত্বকে স্বীকার না করা অজ্ঞতা। খুব দুঃখের কথা, নেতা হিসেবে নিজের কৃতিত্বের কথা সগর্বে বলে বেড়ানো এমন একজন আর এক ফুটবলারকে নিয়ে এত খারাপ কথা বলতে পারলেন। উনি মন্তব্যটা এমন এক জনকে নিয়ে করেছেন, যে এখন সেরা ফুটবলার, হয়তো দীর্ঘদিন সেরা থাকবেও। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আর উনি এমন একটা সময় মন্তব্যটা করলেন, যখন সত্যিই দেশকে ভালবাসলে তার জাতীয় দলকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করা উচিৎ। ’
এর আগে মেসির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়ে এক অদ্ভুত তথ্য দেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা। তার দাবি, একটা ম্যাচ শুরুর আগে ২০বার টয়লেটে যান মেসি। আর এমন একজনকে অধিনায়ক করাটা তার চোখে বোকামি।
সম্প্রতি আর্জেন্টিনা জাতীয় দল আর মেসিকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন ম্যারাডোনা। তার মতে, ম্যাচ শুরুর আগে মেসির যে আচরণ তাতেই তাকে অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরানোর জন্য যথেষ্ট।
'সে মাঠে থাকা অবস্থায়ও এটা চায়, কিন্তু সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলার আগে সে প্লে-স্টেশনে খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ' 'লা আলতিমা পালাবরা' নামক মেক্সিকান টেলিভিশন প্রোগ্রামে এমন কথা বলেন ম্যারাডোনা।
'আমার জন্য এটা নিয়ে কথা বলা মুশকিল, কিন্তু যে মানুষ ম্যাচের আগে ২০বার টয়লেটে যায় এমন কাউকে অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া আমার মতে নির্বুদ্ধিতা। '
'বার্সার মেসি আর আর্জেন্টিনার মেসি আলাদা। '
'তাকে চাপ থেকে মুক্ত করা দরকার। '
'মেসির কাছ থেকে নেতৃত্ব নিয়ে অন্য কাউকে দেওয়া উচিৎ, কারণ আমরা তাকে মেসি হিসেবে পেতে চাই, যা সে হতে পারেনি। '
মেসির পাশাপাশি সাবেক কোচ হোর্হে সাম্পাওলির সমালোচনাও করেন বর্তমানে মেক্সিকোর দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাবে কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ম্যারাডোনা। সেই সঙ্গে এটাও জানিয়ে দেন, মেক্সিকোর জাতীয় দলের কোচ হতে চান তিনি।
এদিকে ম্যারাডোনার এমন মন্তব্যের পর আর্জেন্টিনার এক আইনজীবী ফুটবল ঈশ্বরের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম লিখেছেন, ‘সমালোচনা যখন এক জন মাদকাসক্তের কাছ থেকে আসছে, তার কোনো মূল্য নেই। ’
দেশটি এক সাবেক শিক্ষক আবার বলেছেন, ‘‘দিয়েগোর মতো শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ একজন মেসির সমালোচনা করতে পারেন না। ’
তবে ম্যারাডোনার ভক্তদের মধ্যে কেউ কেউ আবার লিখেছেন, ‘দিয়েগো মিথ্যেটা কী বলেছেন! যা সত্যি, তা সত্যি। মেসিকে সেরা বলা বন্ধ হোক, কারণ ও সেরা নয়। ’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ম্যারাডোনা যা খুশি বলতে পারেন, কারণ উনি মাঠে নেমে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ’
২০১০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা-মেসিদের জাতীয় দলের কোচ ছিলেন ম্যারাডোনা। তবে তারও আগে ২০০৬ সালে প্যারিসে একটি অনুষ্ঠানে ম্যারাডোনা মেসির সমালোচনা করে একটি মন্তব্যের পরই মূলত পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর সঙ্গে তার সম্পর্ক খারাপ হয়, এমনটাই মনে করা হয়। মন্তব্যটি ম্যারাডোনা সরাসরি না করলেও ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলেকে জানিয়েছিলেন। সেসময় মাইক্রোফোনে ম্যারাডোনার মন্তব্য ধরা পড়েছিল। এমনকি গত বছর মেসির বিয়েতেও আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় ছিল না ম্যারাডোনার নাম।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
এমএমএস