পৃথিবীতে কি এমন একজন মানুষ পাওয়া যাবে, যার জীবনে কখনো জ্বর হয়নি? প্রত্যেকেই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। কাজেই মানুষের জন্য একটি স্বাভাবিক বিষয় হচ্ছে জ্বর।
জ্বর কি?
সাধারণভাবে বললে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রাকে জ্বর বলা হয়। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হচ্ছে ৯৮.৮৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর বেশি হলেই আমরা জ্বরে আক্রান্ত হতে পারি।
তাপমাত্রা বা জ্বর মাপার পদ্ধতি
মোটামুটি দুইভাবে আমরা আমাদের শরীরের তাপমাত্র মাপতে পারি এবং বুঝতে পারি জ্বর আছে কি নাই।
১. পারদ থার্মোমিটার দিয়ে। (বাসা বাড়িতে আমরা এখনো এভাবে জ্বর মাপি)।
২. ডিজিটাল থার্মোমিটার দিয়ে। (সর্বশেষ সঠিক পদ্ধতি)
জ্বর বা তাপমাত্রা আমরা শরীরের তিন অংশে মাপতে পারি। ১. বগলের নিচে, ২. জিহবার নিচে এবং ৩. পায়ুপথে মাপতে পারি।
সবচেয়ে সঠিক তাপমাত্রা আমরা পাই পায়ুপথে, তারপর জিহবার নিচে। তারপর বগলের নিচে। বগলের নিচে আমরা যে তাপমাত্রা পাই তা মূল তাপমাত্রার চেয়ে ১ ডিগ্রি ফারেনহাইট কম। বাসায় সবচেয়ে ঝামেলামুক্তভাবে আমরা জিহবার নিচে থার্মোমিটার রেখে জ্বর মাপতে পারি। সেক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে থার্মোমিটার অবশ্যই ১ মিনিট জিহবার নিচে রাখতে হবে।
জ্বরের উপকারী প্রভাব
কম মাত্রার জ্বর—যাতে ১০০.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর কম থাকে, শরীরের জন্য উপকারী বিবেচিত হয়। কম মাত্রার জ্বরের সাথে অন্য কোনো উপসর্গ না থাকলে কোনো চিকিৎসার দরকার নাই। শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি থাকলে অনেক ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর তা বাঁচতে পারে না। তবে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা—যাকে আমরা বলি ইম্যুন সিস্টেম, স্বল্পমাত্রার তাপমাত্রায় তা কার্যকর করতে পারে।
কখন জ্বর নিয়ে গুরুত্বসহ ভাবতে হবে
এক. তাপমাত্রা ১০০.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে।
দুই. জ্বরের সাথে খিচুনি হলে।
তিন. দ্রুতগতির হৃদস্পন্দন হলে।
চার. চামড়ায় লালচে দাগ দেখা দিলে।
পাঁচ. মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় তীব্র ব্যথা হলে।
এসব লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে জ্বরের কারণ বুঝে চিকিৎসা নেয়া উচিত।
জ্বরের ক্ষতিকর প্রভাব
১. শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
২. শরীর শুকিয়ে যেতে পারে।
৩. চিকিৎসা না হলে এর ফলে মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৫