ঢাকা: গ্রীষ্ম এসে গেছে আগেই। বাজারে প্রিয় মৌসুমী ফল হিসেবে আমের চাহিদা সবার উপরে।
ধারণা করা হয়, এখন থেকে প্রায় চার হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে হিমালয়ের আশেপাশের সমতলভূমিতে এ সুস্বাদু ফলটি আবিষ্কৃত হয়। পৃথিবীতে প্রায় এক হাজার প্রজাতির আম রয়েছে। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক, মজাদার এ ফলটির গুণগত মান সম্পর্কে।
এক কাপ অর্থাৎ ২২৫ গ্রাম আমে রয়েছে ১০৫ গ্রাম কিলোক্যালরি। আরও রয়েছে ৭৬ শতাংশ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও রোগ প্রতিরোধকারী ভিটামিন সি, ২৫ শতাংশ ভিটামিন এ, ১১ শতাংশ ভিটামিন বি ও ভিটামিন বি৬, ৯ শতাংশ ফাইবার, ৯ শতাংশ কপার, ৭ শতাংশ পটাসিয়াম এবং ৪ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম।
ক্যান্সার প্রতিরোধক
গবেষণায় দেখা গেছে, আমের মধ্যকার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান কোলন, লিউকেমিয়া, প্রোস্টেট ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এতে আরও রয়েছে কুয়ার্সটিন, আইসোকুয়ার্সিট্রিন, অ্যাস্ট্রেগ্যালিন, ফাইজেটিন, গ্যালিক এসিড, মিথাইলগ্যালেট ও প্রচুর পরিমাণে এনজাইম (দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিক্রিয়ায় অংশ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন)।
কোলেস্টেরল কমায়
আমে রয়েছে উচ্চমানের ফাইবার, শালজাতীয় উপাদান ও ভিটামিন সি, যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনে। বিশেষ করে ক্ষতিকারক লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিনের মাত্রা।
সুস্থ ত্বক
আম ত্বকের জন্য ভালো ক্নিনজার হিসেবে কাজ করে। কাঁচা ও পাকা আম খাওয়া ছাড়াও শরীরের বাইরের অংশে অনায়েসেই ব্যবহার করতে পারেন। এটি লোমকূপ পরিষ্কার ও ব্রণ দূর করে। কাঁচা আমের রস রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও শরীরের মৃত কোষ দূর করতে পাকা আম চটকে তাতে দুধ মিশিয়ে শরীরে ম্যাসাজ করতে পারেন। ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরে আসবে।
উন্নত দৃষ্টিশক্তি
আম চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এক কাপ পাকা আম কুচিতে রয়েছে ২৫ শতাংশ ভিটামিন এ। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে, রাতকানা রোগের ঝুঁকি কমায় ও চোখের চারপাশের শুষ্কভাব দূর করে।
ডায়াবেটিসের পথ্য
আমপাতা রক্তের ইনসুলিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। পানিতে ১০ থেকে ১৫টি আমপাতা ১০ মিনিট সেদ্ধ করে ঠাণ্ডা করে নিন। সারারাত এভাবেই রেখে সকালে ছেঁকে পানি পান করুন।
পাকস্থলির শক্তি বর্ধক
পাকস্থলির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে ১০ থেকে ১৫টি আমপাতা ১০ মিনিট পানিতে সেদ্ধ করে সারারাত ঢেকে রেখে দিন। সকালে ছেঁকে খালিপেটে পান করুন। প্রতিদিন খেলে উপকার পাবেন।
লোহার ঘাটতি দূর করে
আম খনিজ পদার্থ লোহার ভালো উৎস হওয়ায় তা অ্যানিমিয়া আক্রান্ত রোগীদের ভালো ওষুধ। গর্ভবতী ও মেনোপোজ নারীদের লোহার ঘাটতি পূরণে আমের জুড়ি নেই।
এছাড়া আম দিয়ে নানা রকমের জুস, শেক, সালাদ ও মজাদার খাবার তৈরি করা যায়। যেহেতু গরমকাল তাই ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। এজন্য শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করতে আমের জুস বা স্মুদি খেতে পারেন।
নানা রকম স্মুদির মধ্যে ম্যাঙ্গো কোকোনাট স্মুদি বেশ মুখরোচক। পাকা আম, নারেকেলের দুধ, মধু ও বরফকুচি বেন্ড করে সহজেই তৈরি করতে পারেন মজাদার ম্যাঙ্গো কোকোনাট স্মুদি। স্বাদের পাশাপাশি গরমে মিলবে আরামও!
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৫
এসএস