ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দরিদ্র পরিবারে ৫০ হাজার টাকার স্বাস্থ্যবিমা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
দরিদ্র পরিবারে ৫০ হাজার টাকার স্বাস্থ্যবিমা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম/ফাইল ফটো

ঢাকা: দরিদ্র পরিবারে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বিমা সুবিধা চালু করছে সরকার। আগামী জানুয়ারিতেই আনুষ্ঠানিকভাবে এ কর্মসূচি শুরু হবে পাইলট প্রকল্প হিসেবে।



তখন হেলথ কার্ড বিতরণও শুরু হবে টাঙ্গাইলের তিনটি উপজেলার প্রায় এক লাখ দরিদ্র পরিবারের মাঝে। হেলথ কার্ডধারীরা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকায় ৫০টি রোগের পূর্ণ চিকিৎসা পাবেন। ‍

রোববার (২০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

মন্ত্রণালয় এবং গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এ চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে।

সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দরিদ্রদের জন্য হেলথ কার্ড কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় এটি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রথম পর্যায়ে ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইলের কালিহাতি, মধুপুর ও ঘাটাইল উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু হবে। এখানে যে অভিজ্ঞতা হবে, তা পর্যালোচনা করে ধাপে ধাপে কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে বলে জানান মোহাম্মদ নাসিম।

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে দরিদ্র পরিবারের বিমার প্রিমিয়াম দেবে সরকার। তবে এক পর্যায়ে প্রতিটি স্বচ্ছল পরিবার বিমার প্রিমিয়াম দিতে বাধ্য থাকবে।

প্রশ্নের জবাবে গ্রিন ডেল্টার কর্মকর্তারা জানান, তিনটি উপজেলার প্রায় এক লাখ পরিবারকে প্রাথমিকভাবে এ সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের হিসেব ব্যবহার করে ২৫ শতাংশ মানুষকে সরকার এ সুবিধা দেবে।

২০৩২ সাল নাগাদ গোটা জনগোষ্ঠী এ সুবিধার আওতায় এসে যাবে বলেও আশা তাদের।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সেবা দিতে প্যাকেজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ৫০টি রোগের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে। বছরে পরিবারপ্রতি এক হাজার টাকা করে প্রিমিয়াম দেবে সরকার এবং বার্ষিক সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার চিকিৎসা সুবিধা পাবে দরিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী চিহ্নিত পরিবারগুলো।

মন্ত্রী জানান, পাইলট প্রকল্প চলাকালে এ প্রিমিয়ামের অর্থসহ প্রকল্পের যাবতীয় ব্যয় স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি উন্নয়ন সেক্টরের উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে আসবে।   পরে সরকারি বরাদ্দ ও স্বচ্ছল পরিবারের কাছ থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে কর্মসূচির অর্থায়ন করা হবে।

‘নির্দিষ্ট সূচকে পাইলট এলাকায় দরিদ্রসীমার নিচের পরিবারগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এসব পরিবারকে হেলথ কার্ড দেওয়া হবে। কার্ড ব্যবহার করে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন। ৫০টি রোগের (রোগ নির্ণয়, ওষুধ-পথ্যসহ) পূর্ণ চিকিৎসা পাবেন তারা বিনামূল্যে’- বলেন তিনি।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, গ্রিন ডেল্টার পরিচালক ফারজানা চৌধুরী প্রমুখ।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হেলথ ইকোনমিকস ইউনিটের মহাপরিচালক মো. আশাদুল ইসলাম ও গ্রিন ডেল্টার পক্ষে ফারজানা চৌধুরী।

ফারজানা বলেন, এটি দেশের স্বাস্থ্যসেবায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কেউ যেন বিনা চিকিৎসায় কষ্ট না পান, সেটিই আমাদের লক্ষ্য।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাস্থ্যখাতে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বাড়াতে রোগীপ্রতি অর্থ বরাদ্দ এবং সেবা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার হবে এতে।

সম্পাদিত চুক্তিটি এক বছর মেয়াদী। পরে আরও সম্প্রসারিতভাবে কাজ চলবে বলেও জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
এসকেএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।