ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গণহারে বদলির আবেদন

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২
আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গণহারে বদলির আবেদন

লালমনিরহাট: কর্মস্থলকে অনিরাপদ দাবি করে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাতজন কর্মচারী বদলির আবেদন করেছেন।  

বুধবার (২০ জুলাই) বিকেলে বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়।

 

আবেদনকারীরা হলেন- আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান অফিস সহকারী মাহবুব আলম লিকু, পরিসংখ্যানবিদ আসাদুরজামান, হারবাল সহকারী ইসমত আরা, জুনিয়র মেকানিক পুতুল চন্দ্র রায়, অফিস সহকারী মাইদুল ইসলাম, শফিক আহমেদ ও প্রমথ চন্দ্র রায়।  

গণবদলির আবেদন সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অফিসের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সাতজন কর্মচারী রয়েছেন। সরকারি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রতি পদে পদে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন কর্মচারীরা। সরকারি নিয়মের বাইরেও জোর করে কিছু অবৈধ কার্যক্রম করতে বাধ্য করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহমেদ। কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতেও নানানভাবে হয়রানি ও জঠিলতা তৈরি করেন। যার প্রতিবাদ করলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা  অকথ্য ভাষায় গালমন্দ আর বেতন কাটার হুমকি দেন। সম্প্রতি দুইজন কর্মচারীর বেতন অহেতুক ১০ মাস আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন করেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।  

শুধু কর্মচারী নয়, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের খাবারের নিম্নমান ও অতিরিক্ত রোগী দেখিয়ে সরকারি ওষুধ ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুই মাস আগে সাধারণ রোগীরা একটি গণপিটিশন দাখিল করেছিলেন। যা ক্ষমতার জোরে লাল ফিতায় আটকে রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। এ ছাড়াও নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহমেদকে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বদলি করেন। যা টাকা আর ক্ষমতার জোরে বাতিল করেছেন ডা. তৌফিক। স্থানীয়রা তার অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলদি দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবরে গণপিটিশন দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে।

এসব কারণে কর্মস্থলকে অনিরাপদ দাবি করে গত ১৯ জুলাই অফিসের সাতজন কর্মচারীর সবাই সিভিল সার্জন বরাবর ই-মেইলে গণবদলির আবেদন করেন। যা মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সিভিল সার্জনের দৃষ্টিগোচর হয়। গণবদলির আবেদনের বিষয়টি নিয়ে গোটা স্বাস্থ্য বিভাগে  মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।  

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন কর্মচারী বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহমেদের বিধিবহির্ভূত কাজের প্রতিবাদ করায় বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করেন। এমন আচরণ তিনি সব কর্মচারীর সঙ্গে নিত্যদিনেই করে থাকেন। ফলে এ প্রতিষ্ঠানের সব কর্মচারী-কর্মকর্তা তার আচরণে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। কর্মচারীদের পারিশ্রমিক মাসিক বেতনেও ভাগ বসান এ কর্মকর্তা। তিনি আসার পর থেকে হাসপাতালটি দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। যার প্রতিবাদ করলে সরকারি কর্মকর্তার আচরণ বিধিলঙ্ঘন করে অশালীন আচরণ করেন। এ কারণে চাকরি করা অনিরাপদ ভেবে তারা গণবদলির আবেদন করেছেন।

আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহমেদের সেলফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।  

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বাংলানিউজকে বলেন, গণবদলিই শুধু নয়, আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহমেদের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবরে একটি গণপিটিশন দাখিল করেছেন। যার অনুলিপি পেয়েছি। গণবদলির বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবাইকে একসঙ্গে বদলি করলে অফিসের কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে। সব বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২ 
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।