ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ভারতের প্রমোদতরী ‘গঙ্গা বিলাস’র উদ্বোধন, যাবে বাংলাদেশ হয়ে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩
ভারতের প্রমোদতরী ‘গঙ্গা বিলাস’র উদ্বোধন, যাবে বাংলাদেশ হয়ে

কলকাতা: ভারত -বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে যাত্রা শুরু বিশ্বের দীর্ঘতম বিলাসবহুল প্রমোদতরী গঙ্গা বিলাস।  

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ভার্চুয়ালি প্রমোদতরীর উদ্বোধন করেন ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

 

বারানসীতে নেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব প্রমুখ।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, গঙ্গা নদীতে বিশ্বের দীর্ঘতম প্রমোদতরী পরিষেবার সূচনা একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত। এই প্রকল্পটি ভারতে পর্যটন মানচিত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করবে। আমি গঙ্গা বিলাসের সকল যাত্রীদের বলতে চাই, আপনারা যা কল্পনা করবেন, এমন সবকিছুই ভারতে রয়েছে। শুধু তাই নয়, আপনার কল্পনার বাইরেও অনেক কিছু রয়েছে। ভারতকে কেবল মাত্র একটি শব্দে ব্যাখ্যা করা যায় না। ভারতকে কেবল হৃদয় থেকে অনুভব করা যায়। কারণ জাতি, ধর্ম, দেশ নির্বিশেষে সকলের জন্য ভারত তার হৃদয় উন্মুক্ত করেছে।

গঙ্গা বিলাসের যাত্রাপথ ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বারনসী থেকে পাটনা-কলকাতা, বাংলাদেশের ঢাকা হয়ে আসামের ডিব্রুগড় পর্যন্ত। অভ্যন্তরীণ নৌপথ যোগাযোগ উন্নয়ন বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।

গঙ্গা বিলাস উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বারানসী থেকে গাজীপুর, বক্সার হয়ে ২০ জানুয়ারি বিহারের রাজধানী পাটনায় পৌঁছাবে। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ কলকাতায় এসে পৌঁছাবে। একদিন রাত্রিযাপন করে সুন্দরবন হয়ে বরিশাল ধরে সম্ভাব্য ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পৌঁছাবে।

এরপর আরিচা, টাঙ্গাইল, চিলমারি হয়ে ভারতের আসামের ধুবড়ী হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি গৌহাটি পৌঁছাবে। সেখান থেকে ১ মার্চ মাজুলী ব-দ্বীপ হয়ে ডিব্রুগড় যাবে গঙ্গা বিলাস।

অর্থাৎ দীর্ঘতম নদী যাত্রায় প্রমোদতরীটি ভারত-বাংলাদেশের ২৭টি নদীর উপর দিয়ে যাবে। ঐতিহ্যবাহী ও ধর্মীয় স্থানসহ ৫০টিরও বেশি পর্যটনস্থান পরিদর্শন করানো হবে। কোন পথ দিয়ে যাচ্ছে তার জন্য থাকবে উভয় দেশের নদীপথের মানচিত্র।

গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও বঙ্গোপসাগর মধ্যদিয়ে দুই প্রতিবেশি দেশের প্রোটোকল অনুযায়ী বাংলাদেশে চলাচল করবে তরিটি। একইভাবে প্রমোদতরী ভারতীয় ভেসেল অ্যাক্ট অনুযায়ী, রাজ্য জুড়ে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য একটি জাতীয় পারমিট রয়েছে। এটি হবে বিশ্বের বৃহত্তম নদীযাত্রা।

ভারতের নৌপরিবহনমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছেন, গঙ্গা বিলাস বিলাসবহুল প্রমোদতরি উত্তরপ্রদেশের বেনারস থেকে আসামের ডিব্রুগড় পর্যন্ত ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ ২৭টি নদীর মধ্যদিয়ে অতিক্রম করবে। যাত্রাপথ মোট ৫১ দিনের। কলকাতা হয়ে প্রমোদতরীটি বাংলাদেশের প্রায় ১১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে।

বেনারস থেকে ডিব্রুগড় রুটের প্রমোদতরীটি একটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে চালানো হবে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অভ্যন্তরীণ জলপথ ‘অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ উদ্যোগে ‘অন্তরা লাক্সারি রিভার ক্রুজ’ এবং ‘জেএম বাক্সি রিভার ক্রুজ’র সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।

শুভ উদ্বোধনী দিনে এ প্রমোদতরীতে যাত্রী হিসাবে ছিলেন ৩২ জন সুইজারল্যান্ড এবং একজন জার্মানির পর্যটক। গঙ্গা বিলাসের দৈর্ঘ্য ৬২ দশমিক ৫ মিটার এবং প্রস্থ ১২ দশমিক ৮ মিটার। এতে রয়েছে ১৮টি বিলাসবহুল স্যুট। এর সর্বোচ্চ যাত্রী ধারনের ক্ষমতা ৩৬ জন। আছে ফ্রেঞ্চ ব্যালকনি, আধুনিক মানের রেস্তোরাঁ, স্পা, সানডেক ইত্যাদি। এছাড়া প্রমোদতরিতে পর্যটকদের সব ধরনের সুবিধা রয়েছে।  

প্রতিদিন প্রমোদতরীর ভাড়া ধার্য করা হয়েছে ২৫ হাজার রুপি। সেক্ষেত্রে ৫১ দিনের যাত্রার জন্য যাত্রী পিছু খরচ পড়বে প্রায় ১২ লাখ ৭৫ হাজার রুপি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।