সমৃদ্ধির জন্য জ্ঞান। এমন বার্তা নিয়ে ঢাকায় বসছে ৩ দিনের ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রদর্শনী।
আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলে (বিসিসি) আয়োজিত উন্মুক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, সচিব নজরুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস এবং ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১২ পর্বের সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক মুনির হাসান।
এ সভায় আইসিটি মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশকে দিকনির্দেশনায় এ ধরনের আয়োজন কার্যকর হবে। সব ধরনের ব্যবসা এবং শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়াও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এগিয়ে যেতে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব নজরুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, এ আয়োজনে ৩৫টি দেশের প্রযুক্তি উদ্ভাবকেরা এবং শীর্ষ প্রযুক্তিবিদেরা অংশ নিচ্ছে। এটি হবে প্রযুক্তিজ্ঞান বিনিময়ের সহায়ক একটি প্ল্যাটফর্ম। ফলে আন্তর্জাতিক ব্যবসা চুক্তির সুযোগ তৈরি হতে পারে। এবারে মোবাইলভিত্তিক সেবা এবং পণ্যেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে আইসিটিনির্ভর শতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রকল্প, রোবট এবং দেশি গেমস প্রদর্শনে থাকছে এক্সপেরিয়েন্স জোন। এ জোনে দর্শনার্থীরা সর্বোচ্চ গতির ইন্টারনেট অভিজ্ঞতা নিতে পারবে।
জনগণের সেবাতথ্য নিশ্চিত করা, শিক্ষার মানোন্নয়ন, দেশে বসে কাজ করার সুবিধা (আউটসোর্সিং) এবং সরকারি সেবায় আইসিটির অন্তর্ভুক্তি বেশ কার্যকর হবে। এরই মধ্যে দেশের ২০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ চালু করা হয়েছে। কথাগুলো জানালেন আইসিটিমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, গত চার বছরে মোবাইল গ্রাহক বেড়েছে চারগুণ। ইন্টারনেট গ্রাহক পৌনে তিন কোটি ছাড়িয়ে গেছে। দারিদ্র্যের হার ৪০ থেকে ৩১ ভাগে নেমে এসেছে। নকিয়া, স্যামসাং, ওয়ার্ল্ড ডিজনি, গুগল এবং সিসকোর মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এদেশে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করছে। আইসিটি মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানানো হয়।
এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড প্রদর্শনীতে ৬০টির মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের আইসিটি সেবা নিয়ে উপস্থিত হচ্ছে। এদিকে সরকারের ২৭টি বিভাগ এ প্রদর্শনীতে তাদের মোবাইলভিত্তিক তথ্যসেবা পণ্য দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরবে।
এবারের আসরের অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে থ্রিজি সেবা। টেলিটকের সহযোগিতায় থ্রিজি (ত্রিমাত্রিক) আবহে সাজানো হচ্ছে মিল্কিওয়ে ভুবন। সঙ্গে থাকছে ইনটেল আর স্যামসাংয়ের নিত্যনতুন উদ্ভাবনার পসরা।
আরেকটি বিশেষ আয়োজন হচ্ছে ক্লাউড কমপিউটিং। ভবিষ্যতের দিকনিদের্শনা আর সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে থাকছে ২৫টিরও বেশি সেমিনার, কর্মশালা আর সভা। এতে বিশ্বের বিখ্যাত সব বিশেষজ্ঞেরা তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন।
এরই মধ্যে আইসিটির সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে বাংলাদেশ নিজের বৈশিষ্ট্যগুণে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সামর্থ্য হয়েছে। তবে অবকাঠামোগত সুবিধা, সরকারের সার্বিক সহযোগিতা আর আইনি জটিলতা শিথিল করা সম্ভব হলে এ দেশ ক্রমেই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে এগিয়ে যাবে। জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ছাড়াও আর্থসামাজিক উন্নতির ধারায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সঞ্চালক হয়ে উঠবে। এমন সব অপার সম্ভাবনার কথাই বললেন অংশ নেওয়া বক্তারা।
বাংলাদেশ সময় ২১২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১২