ব্যস্ত নগরীতে সবাই শান্ত, আধুনিক জীবনমান ও সার্বিক নিরাপত্তা আছে এমন এলাকায় থাকতে পছন্দ করে। মানুষের এমন স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে যে নামটি সবার আগে আসে, তা হলো রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা।
২৪/৭ নিরাপত্তায় সচেষ্ট : বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রতিটি প্রবেশপথে রয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। ২৪/৭ নিরাপত্তা প্রহরী এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসংবলিত সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি এখানকার বাসিন্দাদের দেয় সর্বোচ্চ সুরক্ষা। নিরাপত্তাকর্মীরা বলছেন, নিরাপত্তার জন্য কয়েক স্তরের শতাধিক সিসিটিভি রয়েছে এখানে। যেসব ক্যামেরা দিয়ে প্রতিটি রাস্তায় চলাচলে নিরাপত্তার স্বার্থে নজরদারি রয়েছে।
এসব উচ্চমানে রেজল্যুশনের ক্যামেরায় স্পষ্ট করে প্রতিটি গাড়ির নম্বর প্লেটসহ দেখা যায়। বিভিন্ন নির্দেশনা দিলে সেভাবে সেগুলো কাজ করছে। ফলে কেউ চাইলে কোনো ধরনের অপরাধ বা অনিয়ম করে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। পুরো এলাকায় ১৪টি গেটওয়ে রয়েছে এবং প্রতিটিতে রয়েছে নিরাপত্তা প্রহরী।
২৪ ঘণ্টা গেটগুলোতে রয়েছে চেকপোস্ট, সন্দেহজনক হলে নজরদারি করছেন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টা যেকোনো অগ্নি দুর্ঘটনায় প্রস্তুত আছে বসুন্ধরার নিজস্ব ফায়ার সার্ভিস। বারিধারা ফায়ার সার্ভিসে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই তারা চলে যায়। সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকায় এ পর্যন্ত কোনো ধরনের বড় অগ্নি দুর্ঘটনাও এখানে ঘটেনি।
নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী : বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় রয়েছে নিজস্ব বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী।
তিন শিফটে তারা ২৪ ঘণ্টা টহল দিচ্ছেন। এলাকার বাসিন্দারা কোনো সমস্যা বা প্রয়োজনে নিরাপত্তা বাহিনীকে কল দিলে তারা কয়েক মিনিটের মধ্যে উপস্থিত হয়। বছরের সব দিনই তারা সমানভাবে ডিউটি পালন করে। তাদের আবাসনসহ যাতায়াতব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ দেখভাল করে। সিকিউরিটিদের প্রতিদিন দায়িত্ব পালন বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক ব্রিফ প্রদান করেন ঊর্ধ্বতনরা। আর প্রতি শিফটে একজন ইনচার্জ থাকেন, তিনি সশরীরে কিংবা মোবাইল ফোনে এখানকার নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান অফিসারের কাছে প্রতিবেদন দিয়ে থাকেন।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর—বসুন্ধরা আর/এ সিকিউরিটি কন্ট্রোল রুম : +৮৮ ০১৭ ২২২২ ২৩২৭, বসুন্ধরা আর/এ সিকিউরিটি ডিউটি অফিসার : +৮৮ ০১৭ ৬৬৬৯ ৪৬৭২
নেই কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতি : কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণেই পুরুষ মানুষ তো বটেই, নারী ও শিশুরা চাইলেও রাত দুপুরে বাড়ির বাইরে বেড়াতে বেরোতে পারে। যেকোনো রাস্তায় হাঁটাচলা করতে পারে। কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে কেউ ডিস্টার্ব করার সুযোগ নেই। নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মীরা মোটরসাইকেল ও গাড়িতে করে ২৪ ঘণ্টা টহল দেন।
থানা হচ্ছে বসুন্ধরায় : বর্তমানে বসুন্ধরা এলাকাটি ডিএমপির ভাটারা, বাড্ডা ও খিলক্ষেত থানার অধীনে রয়েছে। তবে সরকারের পরিকল্পনা মতে দ্রুত সময়ে বসুন্ধরা এলাকার জন্য একটি থানা করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এখানকার বাসিন্দারা বলছেন, থানা হলে এ এলাকার নিরাপত্তা আরো বাড়বে এবং জমির দাম বাড়বে বলে মনে করেন তাঁরা।
নেই চুরি-ছিনতাই, মাস্তানি ও চাঁদাবাজি : সরকার অনুমোদিত এই আবাসিক এলাকায় সরকারের পাশাপাশি বসুন্ধরার নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকায় এখানে নেই কোনো চুরি-ছিনতাই, মাস্তানি ও চাঁদাবাজি। হঠাৎ কোনো চুরির ঘটনা ঘটলেও সেসব চোরকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে তৎক্ষণাৎ। কোনো চোর ধরা পড়লে তার ছবিসহ সব তথ্য তালিকাবদ্ধ হয়ে যায়। এমনকি এআই প্রযুক্তি সংবলিত ক্যামেরায় তাদের ছবি দিয়ে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে তারা পরে এ এলাকায় প্রবেশ করলেই সিগনাল দিয়ে সতর্ক করে দেবে কন্ট্রোল রুমকে। এসব কারণে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বসুন্ধরা এলাকায় প্রায় শূন্যের কোঠায়। এমনকি কেউ চাইলে এ এলাকায় হট্টগোল করতে পারবে না। এ ছাড়া ভিক্ষুক, হকার ও হিজরাদের উপদ্রব নেই। এ ছাড়া অটোরিকশার কোনো উপদ্রবও নেই। এখানে বসুন্ধরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির অনুমোদনক্রমে নির্দিষ্টসংখ্যক প্যাডলচালিত রিকশা চলাচল করে, তাদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট অ্যাপ্রন ও নম্বর রয়েছে, ফলে কেউ চাইলেও কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারবে না।
বসুন্ধরা গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান মেজর (অব.) মো. মাহবুবুল ওয়াদুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নিরাপত্তা অন্য যেকোনো এলাকার চেয়ে শক্তিশালী হওয়ার অন্যতম কারণ এখানে কেউ অপরাধ করে পার পায় না। মাসে, ছয় মাসে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তৎক্ষণাৎ তাদের আইনের আওতায় আনা হয়ে থাকে, ফলে যে কেউ এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে ভয় পায়। এ ছাড়া মালিকপক্ষের সরাসরি তত্ত্বাবধান ও নজরদারি রয়েছে, তাদের কাছে নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ। ’
বসুন্ধরার অধিকাংশ এলাকা ভাটারা থানার অধীনে রয়েছে। ভাটারা থানার ওসি রাকিবুল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সিকিউরিটি ব্যবস্থাপনা খুবই ভালো। এখানের রাস্তায় কিংবা বাসাবাড়ির সামনে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা কখনো শুনিনি। বসুন্ধরা গ্রুপের নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের একটি টহল টিম ২৪ ঘণ্টা এ এলাকায় টহল দেয়। সব মিলিয়ে এ এলাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা অনেক উন্নত। ’
সূত্র: কালের কণ্ঠ
এনডি