অপারেটরটি মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এই টাকা পরিশোধ করেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন খাঁন।
বিটিআরসির বকেয়া পাওনা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জানুয়ারি ৮৬৭ কোটি টাকার মধ্যে ১৩৮ কোটি টাকা পাঁচ মাসের সমান কিস্তিতে পরিশোধ করতে রবি’কে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে রবির করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেওয়া হয়।
রবি’র আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম ওইদিন সাংবাদিকদের বলেন, পাঁচ মাসে সমান পাঁচটি কিস্তিতে ১৩৮ কোটি টাকা রবির দেওয়া সাপেক্ষে বিটিআরসির পাওনা দাবি আদায়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে রবিকে প্রথম কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। একই সঙ্গে রবির যন্ত্রপাতি আমদানিতে অবিলম্বে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দিতে বলা হয়েছে।
তবে কিস্তি পরিশোধ না হলে হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন এই আদেশ প্রত্যাহার হয়ে যাবে বলেও জানান রবির আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম।
বিটিআরসি’র কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশে রাজস্ব বকেয়ার প্রথম কিস্তি পরিশোধ করায় রবি’কে এখন এনওসি চালু করবো।
দীর্ঘদিন এনওসি বন্ধ থাকায় অপারেটরটি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণসহ অন্যান্য কাজের জন্য কোনো যন্ত্রপাতি আমদানি বা কিনতে পারছিলো না।
রবি'র চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে প্রথম কিস্তির অর্থ আজ আমরা বিটিআরসিতে জমা দিয়েছি। মূলত সেবার ক্ষেত্রে আমাদের গ্রাহকদের অবর্ণনীয় অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই তা সমাধানের উদ্দেশ্যে আমরা আদালত নির্দেশিত প্রথম কিস্তির অর্থ জমা দিয়েছি। রবি ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে দেশের আইন-কানুনের প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল।
'তবে অর্থ জমা দিলেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অযৌক্তিক, সে বিষয়ে আমাদের অবস্থান এখনো দৃঢ় এবং স্পষ্ট। তাই, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কিস্তির যে অর্থ আজ আমরা জমা দিয়েছি তা যথাসময়ে ফেরত পাবো বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। '
এছাড়া, আমাদের শেয়ারহোল্ডাররা স্বাধীনভাবে অন্যান্য বিকল্প আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করবেন ন্যায়বিচার পাওয়ার লক্ষ্যে। তবে এটি অনস্বীকার্য, যে প্রক্রিয়ায় পুরো বিষয়টি এখন পর্যন্ত এগিয়েছে তা আমাদের বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় ধরনের ফাটল তৈরি করেছে।
নিরীক্ষা আপত্তিতে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি বিটিআরসি’র।
পাওনা আদায়ে সেবা দিতে এনওসি বন্ধ ও লাইসেন্স বাতিলের নোটিশের পর গ্রামীণফোন ও রবি’তে প্রশাসক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে অর্থমন্ত্রীর মধ্যস্ততার পরও অপারেটর দুটি আদালতের শরণাপন্ন হয়। আদালত গ্রামীণফোনকে টাকা পরিশোধ করতে বললেও মূল প্রতিষ্ঠান টেলিনর রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ পাঠায়। সরকারও আইনি পথে ছিল। এরইমধ্যে রবি আদালতে নির্দেশে প্রথম কিস্তির টাকা পরিশোধ করলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
এমআইএইচ/জেডএস