ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

রোবট ‘রবিন’ কথা বলে বাংলা ও ইংরেজিতে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০
রোবট ‘রবিন’ কথা বলে বাংলা ও ইংরেজিতে

বরিশাল: কখনো বাংলায় আবার কখনো ইংরেজিতে কথা বলছে একটি রোবট। আর সেই রোবট বানিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সরকারি গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শুভ কর্মকার।

বাংলায় কথা বলতে সক্ষম রোবট বানানোর পর থেকে এলাকায় সবাই শুভকে ‘খুদে বিজ্ঞানী’ হিসেবে ডাকা শুরু করেছে। উপজেলার গৈলা গ্রামের সন্তোষ কর্মকারের ছেলে শুভ কর্মকার ওই রোবটের নাম দিয়েছে ‘রবিন’।

জানা যায়, রোবট সোফিয়াকে দেখে বাংলায় কথা বলা রোবট বানানোর ইচ্ছা জাগে শুভর। এই ইচ্ছা থেকেই ২০১৮ সালের ২০ মে রোবট তৈরির কাজ শুরু করে সে। এরপর ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি রোবটটির কাজ প্রাথমিকভাবে শেষ করে সবার সামনে নিয়ে আসা হয়।

২০১৮ সালের ১৫ মে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় বিজ্ঞান যন্ত্রের উদ্ভাবন বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে ২য় হয়ে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের কাছ থেকে পুরস্কার লাভ করে শুভ। এরপর সে ২০১৯ সালের ২৭ জুন ৪০তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের হাত থেকে পুরস্কার নেয়।

এছাড়াও সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০১৯ এ বিজ্ঞান বিষয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে ১ম হয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিয়ে ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির হাত থেকে ‘বছরের সেরা মেধাবী’ পুরস্কার নেয় শুভ কর্মকার।

দি বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের আয়োজনে শুভকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।  ছবি: বাংলানিউজ

শুভ কর্মকার বাংলানিউজকে বলেন, এ রোবটটি শুধু বাংলা বা ইংরেজিতে কথা বলার জন্য বানানো হয়নি। এটি সুরক্ষা ও নিরাপত্তার কাজেও ব্যবহার করা সম্ভব। এছাড়াও রোবটটি একজন শিক্ষক, প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য একজন চিকিৎসক, একজন কৃষি বিষয়ক পরামর্শদাতা কিংবা রিসিপশনিস্ট হিসেবে কাজ করতে পারবে।

‘আবার কোনো বাড়িতে বা বহুতল ভবনে অথবা কলকারখানাসহ যেকোনো জায়গায় আগুন লাগলে প্রথমে সে নেভানোর চেষ্টা করবে। যদি আগুন তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় সয়ংক্রিয়ভাবে গুগল ম্যাপের মাধ্যমে ওই ঠিকানাসহ নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ পাঠাবে সে। ’

রোবট রবিনকে দিনে দিনে আরও উন্নত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে শুভ কর্মকার।

শুভ কর্মকারের বাবা সন্তোষ কর্মকার বাংলানিউজকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই শুভ খেলনার সামগ্রীগুলো ভেঙে দেখতো এর ভেতরে কী আছে। সে ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানমনস্ক। বিশেষ করে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে ওঠার পর থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বিজ্ঞান মেলায় অংশ নিতো। রোবট বানানোর মধ্য দিয়ে সে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করছে। আমরা সাধ্যমতো তাকে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করছি।

শুভর সাফল্য কামনা করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি গৈলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম টিটু বাংলানিউজকে বলেন, সে যেন তার মেধার বিকাশ ঘটিয়ে দেশের মাথা উঁচু করতে পারে সেজন্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।

শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মুজিববর্ষ উপলক্ষে দি বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের আয়োজনে শুভকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তার কাজের উৎসাহ বাড়াতে দেওয়া হয় ১ লাখ টাকা। চেম্বারের পরিচালক মঈনউদ্দিন আব্দুল্লাহ শুভর এই রোবটের উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০
এমএস/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।