ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

নোকিয়া আনলো দেশে তৈরি দুই মডেলের স্মার্টফোন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২১
নোকিয়া আনলো দেশে তৈরি দুই মডেলের স্মার্টফোন

ঢাকা: বহুল প্রতীক্ষিত নোকিয়া মোবাইলের ‘জি’ সিরিজের দুটি মডেল জি-১০ ও জি-২০ বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে এইচএমডি গ্লোবাল বাংলাদেশ। দুটি ফোনই গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির নোকিয়া কারখানায় তৈরি করা।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি ভাইব্রেন্ট সফটওয়্যার ও ইউনিয়ন গ্রুপ বাংলাদেশের সমন্বয়ে গঠিত ‘ভাইব্রেন্ট সফটওয়্যার লিমিটেড’ বিশ্বখ্যাত নোকিয়া ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন বাংলাদেশে তৈরির জন্য প্রথম কারখানাটি স্থাপন করেছে। দেশের মাটিতে তৈরি মোবাইল ফোন দিয়ে ব্যবহারকারীদের মন জয় করতে উন্নত প্রযুক্তির এই দুটি সেট বাজারে আনলো প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংলাদেশে তৈরি’ নোকিয়া ফোনের যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

এইচএমডি গ্লোবালের জেনারেল ম্যানেজার (প্যান এশিয়া) রাভি কুনওয়ার বলেন, আজকে আমাদের জন্য স্মরণীয় একটি দিন। নিঃসন্দেহে গত এক বছর ছিল অনেক চ্যালেঞ্জিং, যা আমাদের চিন্তা-ভাবনা করে প্রস্তুত হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন ও সেখানে সংযোজিত হ্যান্ডসেটের উন্মোচন আমাদের যাত্রার একটি মাইলফলক।

নোকিয়া জি-সিরিজের ফোনগুলোর ফিচার এত নিখুঁতভাবে সমন্বয় করা যে, ফোনগুলো সমস্যা সমাধানের প্রযুক্তি হিসেবে কাজ করে। জি-১০ এবং জি-২০ উভয় ফোনই তিন দিনের ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে সক্ষম, যা এ পর্যন্ত নোকিয়া স্মার্টফোনে সর্বোচ্চ। নোকিয়ার জি-২০ সেটটি স্মার্টফোনের সিগনেচার ‘অ্যান্ড্রয়েড প্রতিশ্রুতি’ দ্বারা সমর্থিত, যা একজন ব্যবহারকারীর ডাটা যতটা সম্ভব সুরক্ষিত রাখতে তিন বছর পর্যন্ত মাসিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং দুই বছর পর্যন্ত অপারেটিং সিস্টেম হালনাগাদ করে।

আঙ্গুলের ছাপ ও ব্যবহারকারীর ফেস রিকগনিশনের মাধ্যমে ফোন আনলকের অপশন থাকছে এ দুটি মডেলে। দুটি ফোনেই রয়েছে আকর্ষণীয় সাড়ে ছয় ইঞ্চি টিয়ারড্রপ ডিসপ্লে। বেশি আলোতে দেখার জন্য আছে উজ্জ্বলতা বাড়ানোর ব্যবস্থা। স্মরণীয় মুহূর্ত ধরে রাখতে চারটি ব্যাক ক্যামেরা সম্বলিত জি-২০ ফোনে আছে পর্যাপ্ত স্টোরেজ, ওজো সারাউন্ড অডিওসহ আকর্ষণীয় ৪৮ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড এঙ্গেল ব্যাক ক্যামেরা।

নোকিয়া জি-১০ মোবাইলে আছে ত্রিপল রিয়ার ক্যামেরা আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্বলিত শুটিং মোড, যার মাধ্যমে কম আলোতেও ভালো ছবি তোলা সম্ভব।

গাজীপুরের হাইটেক সিটির ব্লক ৫-এ নোকিয়া ফোনের কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তিতে গড়া কারখানাটি প্রশস্ত এবং দ্বিতল বিশিষ্ট। একাধিক যাচাই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে পণ্যের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা হয়। সর্বোচ্চ মানের পণ্য নিশ্চিত করতে প্রতিটি ফোনকে স্বয়ংক্রিয় ও মানুষের দ্বারা পরিচালিত দুইভাবে গুণগত মানের পরীক্ষায় পার হয়ে আসতে হয়।

ইউনিয়ন গ্রুপের ডিরেক্টর আলভী রানা বলেন, নোকিয়ার মত গ্লোবাল একটি ব্র্যান্ডের অংশীদার হওয়া আমাদের জন্য খুবই সম্মানজনক। এইচএমডি গ্লোবালের নির্দেশনায় ইউরোপীয় মানে আমরা কারখানা স্থাপন করেছি। নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশে তৈরি হ্যান্ডসেট ভোক্তারা সাশ্রয়ী মূল্যে পাবে এবং এ দেশের স্মার্টফোন মার্কেটে নোকিয়ার শেয়ার বাড়াতে সাহায্য করবে।

শুরুতে কারখানায় প্রতিদিন ৩০০ ফোন সংযোজন করা হবে। দুটি মোড়কজাতকরণ ও চারটি সংযোজনসহ মোট ছয়টি প্রোডাকশন লাইন আছে কারখানাটিতে। নিজস্ব পরীক্ষাগার সম্বলিত কারখানাটি প্রয়োজনীয় সব অবকাঠামোতে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং কারখানাতে প্রায় ২০০ জন কর্মী রয়েছে।

স্থানীয়ভাবে তৈরি করা নোকিয়া স্মার্টফোন আমদানি করা ফোনের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম দামে পাওয়া যাবে। নোকিয়া জি-১০ এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৪৯৯ টাকা এবং জি-২০ এর মূল্য ১৪ হাজর ৯৯৯ টাকা।

বাংলাদেশে মোবাইল শিল্প:

বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে মোবাইল সেট তৈরি শুরু হয় ইলেক্ট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটনের হাত ধরে, ২০১৭ সালে। তখন থেকে ১০/১২টি ব্র্যান্ড স্থানীয়ভাবে মোবাইল তৈরি করছে, যার মধ্যে আছে স্যামসাং, সিম্ফনি, ওপ্পো, রিয়েলমি, শাওমির মতো বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রেতাও।

এসব প্রতিষ্ঠান স্থানীয় বাজারের স্মার্টফোন চাহিদার ৮৫ শতাংশ তৈরি করে এবং মোট ফোন (ফিচার ও স্মার্ট মিলিয়ে) চাহিদার ৫৫ শতাংশ পূরণ করে।

বিটিআরসির তথ্য মতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমদানি করা ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোট মোবাইল সেটের সংখ্যা ২৯.৪৮ মিলিয়ন। যার মধ্যে ১৩.২৭ মিলিয়ন আমদানি করা এবং ১৬.২১ মিলিয়ন স্থানীয়ভাবে তৈরি করেছে ১০টি কোম্পানি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২১
এমআইএইচ/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।