ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বাবরি মসজিদ মামলা: অযোধ্যায় মন্দির-মসজিদ দুটোই থাকবে

রক্তিম দাশ,বিপ্লব কুমার পাল, আহমেদ জুয়েল ও রানা রায়হান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১০
বাবরি মসজিদ মামলা: অযোধ্যায় মন্দির-মসজিদ দুটোই থাকবে

এলাহাবাদ: অযোধ্যায় মন্দির-মসজিদ দুটোই থাকবে বলে রায় দিয়েছেন এলাহাবাদের একটি আদালত। বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটা ৫৫ মিনিটে ঐতিহাসিক এ রায় দেওয়া হয়।

এ রায়ে ভারতীয় মুসলমানরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তবে বিজেপি ও তাদের সমমনা হিন্দুত্ববাদী দলগুলো এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের ভাষায়, এ রায় স্বস্তিদায়ক।

লক্ষ্মৌর ২১ নম্বর আদালতে ৩ জন বিচারপতি এসইউ খান, সুধীর আগরওয়াল ও ডিভি শর্মা রায় ঘোষণা করেন।

বিচারপতি ডিভি শর্মা তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, পুরো জমিটিই রামমন্দিরের জন্য দেওয়া হোক। কারণ স্থানটি রামের জন্মভূমি।

অন্যদিকে বিচারপতি এইউ খান এবং বিচারপতি সুধীর আগরওয়াল পুরো জমিটি তিন ভাগ করার পক্ষে রায় দেন।

হিন্দু মহাসভার আইনজীবী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান, বিচারপতি এসইউ খান এবং বিচারপতি সুধীর আগরওয়াল যে রায় দিয়েছেন তাতে উল্লেখ করা হয়েছে মূল জমিটিকে তিন ভাগ করে সুন্নী ওয়াকফ্‌ বোর্ড, রামমন্দির এবং নির্মোহী আখড়ার মধ্যে বন্টন করে দেওয়া হোক।

সেই সঙ্গে তিনটি স্থাপনার তিনটি পৃথক দরজা বা ফটক তৈরি করতেও বলেছেন দুই বিচারপতি।

তিন মাসের মধ্যে স্থানটি তিন ভাগে বিভক্ত করার কাজ শুরু করতে হবে।

এছাড়া সুন্নী ওয়াকফ বোর্ডের মামলা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।

রায়ের ব্যাপারে মামলার দুটি পক্ষের কারো তরফ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এর আগে রায় ঘোষণা উপলক্ষে ২১ নম্বর আদালত ছাড়া এলাহাবাদের সবক’টি আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।

এছাড়া রায়ের কপি হাইকোর্টের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হচ্ছে।

 রায় ঘোষণার সময় আদালতে তিল ধারণের ঠাই ছিল না। রায় ঘোষণার পর পুরো আদালত অঙ্গন জুড়ে শুরু হয় এক বিশৃঙ্খল অবস্থা।   


এদিকে বিজেপির শীর্ষ নেতারা এলকে আদবানির বাসভবনে বিকেলে বৈঠকে বসেছেন।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল জানিয়েছে, এই রায়কে কেন্দ্র করে আগেভাগেই দেশজুড়ে নেওয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা। তবে এখনও কোথাও বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। জনজীবন স্বাভাবিক রয়েছে।

এই রায়কে সামনে রেখে ভারত সহ গোটা বিশ্বের মানুষ বেশ উদ্বেগ উৎকন্ঠার মধ্যে ছিলেন। রায়কে ঘিরে উগ্রবাদী গোষ্ঠিগুলো সাম্প্রদায়িক হানাহানি শুরু করতে পারে --এমন আশঙ্কাও ছিল প্রবল। তরে রায় ঘোষণার পর সে আশঙ্কা অনেকটাই কেটে গেছে ।

উপমহাদেশের সাধারণ শান্তিবাদী মানুষ চাইছিলেন ঐতিহাসিক এ রায় যেন দীর্ঘদিনের বিষবাষ্প দূর করে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও শান্তির বাতাবরন তৈরির পথ সুগম করে।

ঐতিহাসিক এই রায় উভয়পক্ষের মধ্যে দেড় যুগ ধরে চলা উত্তেজনার আপাত অবসান ঘটাল।



বাংলাদেশ সময় : ১৭০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।