ঢাকা: নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত গোয়েন্দা উপগ্রহ রিসাত-১ এর সফল উৎক্ষেপণ করল ভারত। বৃহস্পতিবার পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চল ভেহিকল (পিএসএলভি) রকেটে করে স্থানীয় সময় পৌনে ৬টায় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অরগানাইজশেন (আইএসআরও) এর চেয়ারম্যান কে রাধাকৃষ্ণ এ মিশনকে ‘বিশাল সফলতা’ বলে উল্লেখ করেছেন। রকেট স্যাটেলাইটটিকে নির্দিষ্ট কক্ষ স্থাপনে সক্ষম হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাধাকৃষ্ণ।
ভারতীয় রকেট বিজ্ঞানীদের জন্য চলতি সপ্তাহটি স্মরণীয় এবং সাফল্য গাথায় পূর্ণ। পর পর দু’টি বড় ধরনের সফল মিশন সম্পন্ন করল তারা; গত ১৯ এপ্রিল আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি-৫ এর উৎক্ষেপণের পর বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা উপগ্রহের সফল উৎক্ষেপণ।
সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এ গোয়েন্দা উপগ্রহটি দিনে এবং রাতে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনায় সক্ষম। এমনকি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও এটি ভূপৃষ্ঠের নির্দিষ্ট অংশে নজরদারি করতে পারবে।
ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অরগানাইজেশন (আইএসআরও) গত বুধবার জানিয়েছে, এ গোয়েন্দা উপগ্রহ উৎক্ষেপণ মিশনে খরচ হয়েছে পাঁচশ কোটি রুপি। একে এ যাবতকালে ভারতের সবচে ব্যয়বহুল এবং জটিল মিশন বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।
আইএসআরও আরো জানিয়েছে, উপগ্রহটিকে বহনকারী রকেটটির ওজন ৩২১ টন। আর নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপিত উপগ্রহগুলোর মধ্যে এটিই সবচে বেশি ওজনের উপগ্রহ। এর ওজন এক হাজার ৫শ ২৮ কিলোগ্রাম। এর প্রধান কাজ হবে- ক্ষেতখামার পর্যবেক্ষণ এবং খরিফ মৌসুমে বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া।
ভারতের সবচে শক্তিশালী এই মাইক্রোওয়েভ স্যাটেলাইট রিসাত-১ এর পুরো কর্মসূচির পরিচালক এম আন্নাদুরাই এবং এর প্রকল্প পরিচালক এন বালারমাথি।
বালারমাথি হলেন আইএসআরও’র কৃত্রিম উপগ্রহ প্রকল্পের দ্বিতীয় নারী পরিচালক। তার আগে এ প্রতিষ্ঠানে কৃত্রিম উপগ্রহ কর্মসূচির প্রথম নারী প্রকল্প পরিচালক ছিলেন টিকে অনুরাধা। তিনি যোগাযোগ উপগ্রহ GSAT-12 এর প্রোগ্রাম পরিচালক ছিলেন।
রিসাত-১ উপগ্রহটি মূলত আবহাওয়ার পূর্বাভাসের কাজে ব্যবহার করা হলেও একে গোয়েন্দা উপগ্রহ বলা হচ্ছে কারণ, এই দু’ধরনের উপগ্রহকে একই অভিধায় উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
ইসরায়েলের কাছ থেকে কেনা রিসাত-২ নামে আরেকটি গোয়েন্দা উপগ্রহ ভারতের আছে। ২০০৯ সালে এটি কক্ষপথে স্থাপন করা হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার আরো দু’টি মিশনের ঘোষণা দিয়েছে আইএসআরও। তারা দু’টি জিওসিঙ্ক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (জিএসএলভি) এবং একটি পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (পিএসএলভি) চলতি অর্থবছরেই উৎক্ষেপণ করবে। আর ২০১৪ সালে জিএসএলভি রকেটে করে ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্র মিশন চন্দ্রায়ন-২ পরিচালনা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১২
সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর