ঢাকা: নরওয়ে গণহত্যাকারী অ্যানডার্স বেরিং ব্রেইভিকের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের জন্য বৃহস্পতিবার রাজধানী অসলোতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে। এসময় সমবেতরা লোকসঙ্গীত গেয়ে তার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করেছেন।
সমাবেশের আগে ইন্টারনেটে প্রচারণা চলানো হয়। এর সংগঠকরা জানিয়েছেন, পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ অসলোর যে আদালতে ব্রেইভিকের বিচার চলছে সেখানকার চত্বরে জড়ো হয়। সেখানে নরওয়ের জনপ্রিয় লোকসঙ্গীত শিল্পী লিলেবজোয়ের্ন নিলসেনের গাওয়া ‘চলড্রেন অব দ্য রেইনবো’ গানটি সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হয়।
জমায়েতে নিলসেন এবং নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক এবং আইসল্যান্ড- এই নর্ডিক দেশগুলোর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। নরওয়ের অন্যান্য স্থানেও এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কট্টর ডানপন্থী ব্রেইভিক (৩৩) গত শুক্রবার আদালতে নিলসেনকে মার্কবাদী বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নিলসেন মার্কসবাদীদের সবচে ভাল উদাহরণ। তিনি নরওয়ের সংস্কৃতিতে ভিনদেশী সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন এবং তার গান নরওয়ের মানুষের মগজধোলাই করার মোক্ষম হাতিয়ার।
ব্রেইভিকের এই মন্তব্যের পরই নরওয়েজুড়ে ইন্টারনেটে সামলোচনার ঝড় ওঠে। প্রতিবাদে সমবেত কণ্ঠে এ গানটি গাওয়ার জন্য লোকজন ফেসবুকে প্রচারণা শুরু করে। এর ফলশ্রুতিতে বৃহস্পতিবারের এ জমায়েত।
নিলসেনের গানটি মার্কিন লোকসঙ্গীত শিল্পী পিট সিগারের ‘মাই রেইনবো রেইস’ গান অবলম্বেনে লেখা। গানটি স্ক্যানডিনেভীয় দেশগুলোতে ব্যাপক জনপ্রিয়। এ গানে মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগানোর কথা বলা হয়েছে।
তবে ব্রেইভিক এ গানের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন নিলসেন। তিনি বলেছেন, গানের কথাগুলো জনগণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় বরং এতে পরিবেশ রক্ষার কথা বলা হয়েছে।
গত বছরের ২২ জুলাই রাজধানী অসলোতে সরকারি অফিসের কাছে গাড়িতে বোমা পেতে আট জন মানুষকে হত্যা করেন ব্রেইভিক। একই দিন উটোয়া দ্বীপে ক্ষমতাসীন দলের যুবসম্মেলনে গুলি চালিয়ে ৬৯ জন নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেন তিনি।
বর্তমানে ব্রেইভিকের বিচার চলছে। তবে আদালতে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তার মতে, হত্যার ঘটনাটি নিষ্ঠুরতা, কিন্তু এর প্রয়োজন ছিল। বর্তমান সরকার নরওয়েতে যেভাবে বহুসংস্কৃতির চর্চা করছে এবং এ দেশে ও ইউরোপে যেভাবে মুসলিম অনুপ্রবেশ ঘটছে তা ঠেকাতে এমন নিষ্ঠুরতার প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন কট্টর ডানপন্থী অ্যানডার্স বেরিং ব্রেইভিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১২
সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর